কাজল ঘোষ, চীন থেকে ফিরে : ওরা বাংলাদেশের ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর। চীনের নানা প্রান্তে ওরা আলো ছড়াচ্ছেন। ঘুরতে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। মূলত বাংলাদেশ-চীন ইয়ুথ ক্যাম্প-২০১৭ সেই দরোজাটি খুলে দিয়েছে। চীনা ভাষা একটু কঠিন। বিশেষত হানজি লেখা।
তবে, সেই কঠিন বাস্তবতা মাথায় নিয়ে বাংলাদেশের শতাধিক ছেলেমেয়ে পড়ছে ইউনান বিশ্ববিদ্যালয়ে। আর পুরো ইউনান প্রভিন্সে পড়ছেন প্রায় হাজারখানেক শিক্ষার্থী। ইউনান বিশ্ববিদ্যালয় সেখানকার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। তবে আমাদের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এর তফাৎ অনেক। ইউনান প্রভিন্সের সব কলেজ এর অধিভুক্ত নয়।
নির্বাচিত ও পরীক্ষিত বেশকিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইউনান বিশ্ববিদ্যালয়ে একীভূত। শিক্ষার মানোন্নয়ন ও উচ্চতর গবেষণায় কাজ করছে এই প্রতিষ্ঠান। ১৯৩২ সালে কুনমিং শহরে দংলু বিশ্ববিদ্যালয়ে এর সূচনা হলেও ধীরে ধীরে এর কলেবর বিস্তৃত হয়েছে বৃহৎ পরিসরে। বিশ্বের ৩০টি শীর্ষস্থানীয় সেরা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে ইউনান।
ইউনান বিশ্ববিদ্যালয় বেশ ক’বছর ধরেই ঢাকার সঙ্গে তাদের শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিনিময় কার্যক্রম চালু করেছে। সরকারি বৃত্তির পাশাপাশি রয়েছে কনফুশিয়াস ইনস্টিটিউট প্রদত্ত বৃত্তি। এই বৃত্তি নিয়ে চীনের নানা প্রান্তে আমাদের শিক্ষার্থীরা আলো ছড়াচ্ছেন। দেশের মর্যাদাকে তুলে ধরছেন উঁচু আসনে।
বেইজিং, ইউনান এবং কুনমিং-এর এমন তিনজন শিক্ষার্থী চীনে পড়াশোনার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। সাগরেদ আল মিশকাত শরীফ, রাজিয়া সুলতানা রূপা, লিপি সরকার। প্রথম দু’জন ইউনান ইউনিভার্সিটি ও তৃতীয় জন শাংহাই ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ ইউনিভার্সিটিতে টিচিং চায়নিজ টু স্পিকার অব আদারস ল্যাংগুয়েজেস বিষয়ে পড়ছেন।
সাগরেদ আল মিশকাত শরীফ : তিস্তার পাড়ের জেলা লালমনিরহাট-এর ছেলে আমি। বাবা সোনালি ব্যাংকের ক্যাশিয়ার ছিলেন। তাই গ্রামের লোকজন বাবাকে ‘ক্যাশিয়ার’ বলেই ডাকতো। বাবা রংপুরের আর মা গাইবান্ধার। তবে বাবার কর্মস্থল লালমনিরহাট হওয়ায় আমাদের পাঁচ ভাইবোনের জন্ম ও বসবাস লালমনিরহাট-এ।
পাঁচ ভাইবোনের মাঝে আমি মধ্যম। শিক্ষাজীবনের শুরু রাইফেলস পাবলিক শিশু নিকেতন-এ। একবছর পড়ে চলে আসি চার্চ অব গড স্কুল-এ। সেখানে তিন বছর পড়ার পর ভর্তি হই লালমনিরহাট নেছারিয়া কামিল মাদরাসায়। ২০০৫ সালে বাবার দুটো কিডনি বিকল হয়ে যায়। আমাকে বাসায় রেখে সবাই চলে যায় ভারতের ব্যাঙ্গালুরে।
সেখানে আমার মা তার কিডনি বাবাকে দান করে ভালোবাসার নজির স্থাপন করেছিলেন। তখন আমি মাদরাসা ছেড়ে দিয়ে কালেক্টরেট স্কুল-এ ভর্তি হই। এর কয়েক মাসের মধ্যেই বাবা অজানার দেশে চলে যান। পাঁচ সন্তান নিয়ে আমার মা কূলকিনারাহীন। ২০০৫ সালের নভেম্বরে আমার কিডনি দুটোতে টিউমার দেখা দেয়। মা আমাকে নিয়ে ঢাকায় মামার বাসায় চলে আসেন।
মামি ঢাকায় পিজি হসপিটালে, চিকিৎসা শেষে বাড়ি গিয়ে মাদরাসায় ফিরে যাই। ওখান থেকেই আমি দাখিল (এসএসসি) ও আলিম (এইচএসসি) অধ্যয়ন শেষ করি। যখন বন্ধুরা সবাই এইচএসসি পরীক্ষা শেষে ঢাকা-রংপুর বা বড় শহরে যাচ্ছিল বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতি কোচিং করতে তখন আমি বাড়িতেই। সরকারি কলেজে সুযোগের অপেক্ষায়।
কারণ কোচিং-এ ভর্তি হবার মতো টাকা ছিল না। মা নাছোড়বান্দা। অর্থ জোগাড় করেও কোচিং করতে পারিনি মায়ের অসুস্থতার জন্য। তিনি বললেন, আমি দোয়া দিচ্ছি তুই পরীক্ষা দিলেই সুযোগ পাবি। আসলেই তাই হয়েছিল। ২০১১ সালে ভর্তি হই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগে। ২০১৪ সালের কথা। সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘দেশে বিদেশ’ পড়ে নতুন একটি ভাষা শেখার সিদ্ধান্ত নিই।
একই বছরের জুলাইতে আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটে চীনা ভাষা বিভাগে অধ্যয়ন শুরু করি। ২০১৫ সালের মে মাসে চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সফরে আসেন। আমরা চীনা বিভাগের ছাত্র হিসেবে তাকে বরণ করে নেই। তিনি বক্তৃতায় বলেছিলেন তিনি এখন ৬২ বছর বয়স্ক আর ৬০ বছরে গিয়ে তিনি এই পর্যায়ে এসেছেন।
তিনি আমাদের এটাই বোঝাতে চেয়েছেন বয়স নয় ইচ্ছাই আমাদের অনেক দূর নিয়ে যেতে পারে। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে চীনা ভাষা বিভাগে ১ বছর মেয়াদি জুনিয়র সার্টিফিকেট কোর্স সম্পন্ন করি আর ডিসেম্বরে আরবি বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করি। চীনা ও আরবি উভয় বিভাগে প্রথম শ্রেণি অর্জন করি।
২০১৬ সালের জানুয়ারিতে আমি ঐঝক-৩ এবং ঐঝকক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হই। ২০১৬ সালে আমার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায় পারিবারিক অসুবিধার কারণে। ২০১৭ সালে আবার আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসি। আরবি বিভাগে মাস্টার্সে ক্লাস শুরু করি।
চীনের মান্যবর রাষ্ট্রপতি শি জিন পিং ২০১৬ সালে বাংলাদেশ সফরকালে বেশকিছু প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। তার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট অন্যতম। ২০১৭ সালে কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটে ভর্তি হই। সেখানে স্কলারশিপের পরীক্ষায় অংশ নিয়ে চীনা ভাষায় ১০০তে ১০০ এবং ইংরেজিতে ৩০-এ ২৯ পেয়ে প্রথম হই।
মৌখিকেও তাই। কিছুদিনের মধ্যেই আমি ইউনান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তির জন্য ইতিবাচক সাড়া পাই। চীনে আসার আগে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলাম। মূল কারণ আর্থিক। বিমান ভাড়া জোগাড় করবো তেমন সামর্থ্যও ছিল না। এক পর্যায়ে আশাহত ছিলাম। শেষ মুহূর্তে লিউ হান ইন লাওসি টাকা ধার দিয়ে আমার পাশে এসে দাঁড়ান।
চীন এসে আমি অভিভূত ও আনন্দিত। যখন আমি নিজেকে আবিষ্কার করলাম ইউনান বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে। সেখানে আমার স্কলারশিপ সনদ গ্রহণ করার স্মৃতিবিজড়িত সেই ছবিটা ইয়ুথ ক্যাম্পের প্রদর্শনী গ্যালারিতে দেখে। আল্লাহর কাছে অশেষ শুকরিয়া।
তারপর বেশকিছু চীনা সংবাদমাধ্যমের সামনে দাঁড়াতে হলো। চীন-বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্যাম্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি ছাত্রদের পক্ষে চীনা ভাষায় বক্তৃতা করেছি। বাংলাদেশ-চীন ইয়ূথ সামার ক্যাম্প-২০১৭ আয়োজনের জন্য চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং-কে ধন্যবাদ জানিয়ে চিঠি লিখেছি।
আমি ভাগ্যবান, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন অর্থাভাবে স্টাডি ট্যুরে যেতে পারিনি। কিন্তু চীনের মান্যবর রাষ্ট্রপ্রধানের আমন্ত্রণে চীনের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শনের সুযোগ পেয়েছি। আমি এখন ব্যস্ততম দিন কাটাচ্ছি ইউনান বিশ্ববিদ্যালয়ে চীনা ভাষা অধ্যয়নে।
লিপি সরকার : ভালো ছাত্রী ছিলাম না। লেস দেন এভারেজ টাইপের ছিলাম। তবে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া শাংহাই ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ ইউনিভার্সিটিতে সুযোগ পাওয়া। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমবিএ করছিলাম। নিতান্ত শখেরবসেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইএমএলএ চীনা ভাষায় ভর্তি হই।
চিরচেনা বাঙালি সংস্কৃতির বাইরে ভাষা শিখতে গিয়ে সম্পূর্ণ আলাদা একটা সংস্কৃতির প্রেমে পরে গেলাম। লাওসিরা আমাদের থাই চি শেখাতেন আর পাশাপাশি চলতো ভাষা শিক্ষা। আমার এমবিএ প্রায় শেষের দিকে। ঠিক তখন ঢাকা সফরে এলেন চীনের মন্ত্রী লুই ইয়ানদং। আমরা ১০ জনের একটা টিম তার উদ্দেশে থাই চি পরিবেশন করলাম।
আমি ছিলাম টিম লিডার। আমাদের ছবি বাংলাদেশ এবং চীনের বিভিন্ন পত্রিকায় ছাপা হয়। আমার কাছে এটাই ছিল অনেক কিছু। তখন পর্যন্ত আমি চিন্তাই করতে পারিনি চীনে পড়তে আসব। শেষমেষ সুযোগ পেলাম। কৃতজ্ঞতা আইএমএল-এর শিক্ষক আফজাল হোসেন, শিওয়ান লাওশি, হুশিয়াও ইয়ান লাওশির প্রতি।
এই প্রথম পা রাখা। অচেনা দেশ, অচেনা শহর। যদিও প্রথম প্রথম ভয় পেয়েছিলাম। এখানে এসে আমার নতুন যুদ্ধ শুরু। আমরা যে স্কলারশিপে চীনে এসেছি সেটার নাম সাউথ এশিয়ান স্কলারশিপ। মোট ৭ জন স্কলারশিপে সুযোগ পাই। দু’জন বাংলাদেশি, ৫ জন নেপালি।
চীন এমন একটা দেশ যেটি প্রায় কয়েক দশক আগেও এত তকতকে-ঝকঝকে ছিল না। কিন্তু এখন সুউঁচ্চ দালান দেখলে ধাঁধা খেতে হয়। এবার বলি আমাদের রেসিডেন্স ফ্যাসিলিটির কথা। প্রথম বছর ছিলাম ইউনিভার্সিটির হোটেলে। ২য় ও ৩য় বছর গেস্ট হাউজে।
আমি ১০০% স্কলারশিপের স্টুডেন্ট তাই হোস্টেল ফি ও কনফুসিয়াস থেকে দেয়া অর্থ থেকে এন্ট্রি করার সময় কিছু আরএমবি (চায়নিজ টাকা) জমা দিতে হয়, যা নিরাপত্তা হিসাবে তারা জমা রাখে। হল ছেড়ে যাবার সময় তা ফিরিয়ে দেন।
অনেকেই ভাবছেন বাহ বিদেশে আছেন পার্ট টাইম চাকরি করলেই হয়। না এটা সম্ভব নয়। স্কলারশিপের স্টুডেন্টদের কাজ করার অনুমতি নেই। যদি কেউ কাজ করতে গিয়ে ধরা পড়েন তাহলে বিদায়। তবে টিউশনি করতে পারবেন। কিন্তু তা জোগাড় করা কঠিন। এখন বলবেন আমরা কি করি? আমাদের ভরসা ঐঝক পরীক্ষা।
ইংরেজিতে যেমন ওঊখঞঝ-এর স্কোর গুরুত্বপূর্ণ তেমনি চাইনিজ-এর ক্ষেত্রে ঐঝক। এটা পাস করতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। এতে পাস করলেই আমাদের খাবার খরচ পাওয়া সম্ভব নয়তো কেবল ৮০% স্কলারশিপ। তার মানে হোটেল ফি আর ইউনিভার্সিটির খরচ কনফুসিয়াস দিবে কিন্তু নিজের খাবার পানি আর অন্যান্য খরচ নিজরাই দিতে হবে। আর শাংহাই এর মতো ব্যয়বহুল শহরে যা অনেকের জন্যই অসম্ভব।
বিদেশে আছি বলে যে দেশীয় সংস্কৃতি ভুলে গেছি তা নয়। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বাঙালিরা মিলে আমরা বাংলা নববর্ষ পালন করি। শাংহাই’র বাইরে বেইজিং, শিয়ান, নানজিং, হানজুসহ বেশ কিছু স্থান দেখার সুযোগ হয়েছে। বৃষ্টির মধ্যে রক ক্লাইম্বিং, ঝুলন্ত গাড়িতে উঠা ইত্যাদি অভিজ্ঞতার স্বাদ নিয়েছি। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার একটাই- এগিয়ে যেতে চাই, পিছনে ফিরে তাকাতে চাই না।
রাজিয়া সুলতানা রূপা : মফস্বল শহরের মেয়ে আমি। ইন্টারমিডিয়েট পাস করার পর ইডেন কলেজে পড়ার উদ্দেশে ঢাকায় আসা। প্রথম বার ভাইয়া এবং পরের ছুটির পর বাবা সঙ্গে নিয়ে ঢাকাতে রেখে যান। ইডেন কলেজে পড়ছিলাম। শুধু আমার রুম আর ক্লাস। এর বাইরে অবসরে ক্যাম্পাসের চার দেয়ালের ভেতরেই সময় কাটতো। যখন তৃতীয় বর্ষে আমার রুমমেট আমাকে চীনা ভাষা শিখতে অনুপ্রাণিত করলো।
তার জোরাজুরিতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইএমএলএ চীনা ভাষা শিখতে ভর্তি হয়ে গেলাম। সেখানে পড়া অবস্থায় নানান রকম চায়নিজ সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতাম। আমার আগে কোনোদিনও স্টেজে পারফর্মেন্স করার অভিজ্ঞতা ছিল না। ম্যাডামের চেষ্টাতেই চায়নিজ গান, কবিতা পারফর্ম করে বিজয়ীও হতে লাগলাম।
এভাবেই আমার চীনা ভাষার প্রতি ভালোলাগা বাড়তে লাগলো। ইতিমধ্যেই চতুর্থ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা এগিয়ে এলো। চারপাশে তখন নানান রকম স্কলারশিপের জন্য আবেদন করার মৌসুম। হঠাৎ একদিন আমার সেই চায়নিজ ভাষা শিক্ষার ম্যাডাম ফোন করে বললেন, তোমার কাগজপত্র নিয়ে কাল বিকালে স্কলারশিপের ভাইভা দিতে চলে এসো (আমি ঐঝক ও ঐঝকক পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উন্নীত হয়েছিলাম)।
মৌখিক পরীক্ষা দিয়ে কিছুদিন পর জানতে পারলাম, আমি চীনের ইউনান ইউনিভার্সিটিতে পড়ার জন্য বৃত্তি পেয়েছি। ইডেনে অনার্স ফাইনাল শেষ ২০১৬-এর ২৯শে আগস্ট পড়তে চলে এলাম। ইউনান বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার ২য় বর্ষ চলছে। এখানে বাংলাদেশের অনেকেই আছেন। এতো বেশি যে ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টস হয়েও সবার ইন্টারন্যাশনাল ডরমেটরিতে থাকার ব্যবস্থা হয় না। আমি একটা চায়নিজ ডর্মে থাকি। আমার রুমমেট মালদিভিয়ান।
তবে, দুঃখজনক হলেও সত্য এখানে আমাদের বিশেষ করে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঐক্যের অভাব রয়েছে। দিনভর ক্লাস, হোমওয়ার্ক, খাওয়া, ঘুম, নিজের কাজ করে বাকিটা সময় আমার রুমমেটদের সঙ্গেই সময় কেটে যায়। লাওশিরা (শিক্ষক) আন্তরিকভাবে পড়াবার চেষ্টা করেন। আমাদের বড় একটা লাইব্রেরি রয়েছে। সেখানে পড়াশোনা করি।
মাঝেমধ্যে অবসর সময়ে আশপাশে শপিং করতে বেড়াতে যাই। তখন এখানকার স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানার চেষ্টা করি চীনের সংস্কৃতি। তারা বেশ আগ্রহ নিয়ে আমাদের সঙ্গে গল্প করতে চায়। চির বসন্তের এই দেশে আবহাওয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সময়টা ভালোই কেটে যাচ্ছে। দেশকে ভীষণ মিস করি। সবসময় ছুটির জন্য প্রহর গুনি। বাড়ি ফিরতে ইচ্ছে হয়। মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য প্রহর গুনছি। -এমজমিন
এমটিনিউজ/এসবি