প্রবাস ডেস্ক : দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচ বাংলাদেশি নিহত হন। শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে ঘটে যাওয়া এ দুর্ঘটনায় নিহত পাঁচজনের বাড়ি ফেনীতে। নিহত এই পাঁচ প্রবাসীর বাড়িতে এখন চলছে শোকের মাতম।
নিহতদের মরদেহ দ্রুত দেশে ফেরত আনতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন নিহতের স্বজনরা। নিহত পাঁচজন হলেন- ফেনী সদর উপজেলার বিরলী গ্রামের ইসমাইল হোসেন, দাগনভূঞা উপজেলার মোমারিজপুর গ্রামের দীন মোহাম্মদ রাজু ও দক্ষিণ নেয়াজপুর গ্রামের মোস্তফা কামাল, সোনাগাজী উপজেলার দক্ষিণ চরমজলিশপুর গ্রামের আবুল হোসেন ও তার ছেলে নাদিম হোসেন। সবার বাড়িতে গিয়ে দেখা মিলল স্বজনদের আহাজারির দৃশ্য।
ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের বিরলী গ্রামের ইসমাইল হোসেনের বাড়িতে স্বজনেরা আপনজন হারানোর শোকে কাতর। ঈদে বাড়িতে আসার কথা ছিল ইসমাইল হোসেনের। বাড়িতে তার বিয়ের কথাও চলছিল বলে জানিয়েছেন তার বড় ভাই মিজান মিয়া।
নিহত ইসমাইলের বাবা শরীয়ত উল্লাহ বলেন, আমার ছেলে অবিবাহিত। দুই মাস পরে দেশে আসার কথা ছিল। তাকে বিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি চলছিল। সে ১২ বছর আফ্রিকায় ছিল।
সোনাগাজী উপজেলার দক্ষিণ চর মজলিশপুর গ্রামের নিহত বাবা আবুল হোসেন ও ছেলে নাদিম হোসেনের বাড়িতেও একই দৃশ্য। তাদের স্বজনেরা এক সঙ্গে দুইজনকে হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে গেছে।
দাগনভূঞা উপজেলার মাতুভূঞা ইউনিয়নের মোমারিজপুর গ্রামের আবদুল মন্নান মিলনের ছেলে রাজু। তার স্বজনরা জানান, কয়েক বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়েছিলেন রাজু। কিন্তু এখন তার বয়স্ক মা-বাবাকে দেখভাল ও সংসারের হাল ধরার মতো আর কেউ নাই। রাজুর স্বজনরাও মরদেহ ফেরত আনতে সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।
একই উপজেলার জয়লস্কর ইউনিয়নের দক্ষিণ নেয়াজপুর গ্রামের হকু মিঞা জানান, তার ছেলে মোস্তফা বেশ কয়েক লাখ টাকা খরচ করে কয়েক বছর আগে আফ্রিকায় যান। এখন ছেলের মৃত্যু সংবাদে হকু মিঞাসহ ভেঙে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা। মোস্তফার ছোট দুই ভাই-বোন এখন ভাইকে হারানোর শোকে কাতর।
জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদুল হাসান জানান, মরদেহগুলো ফিরিয়ে আনার জন্য খুব দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। যেহেতু এখানে একটি আইনি বিষয় রয়েছে তাই তিন থেকে চার দিন সময় লাগতে পারে। আমাদের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।