শেরপুর থেকে : শেরপুর সদর উপজেলার চরমোচারিয়া ইউনিয়নের ধাতিয়াপাড়া গ্রামে বাবা মুসলিম উদ্দিনের দায়ের কো'পে ছেলে শফিকুল ইসলাম (৩৫) মারা গেছেন। পারিবারিক কলহের জেরে শনিবার সকাল ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ অভিযান চালিয়ে বাবা মুসলিম উদ্দিনসহ (৬০) তিনজনকে আ'টক করেছে। উদ্ধার করেছে হ'ত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা। আটক মুসলিম উদ্দিন চরমোচারিয়া ইউনিয়নের মাছপাড়া গ্রামের নয়মুদ্দিন মণ্ডলের ছেলে। তিনি অবসরপ্রাপ্ত কারারক্ষী। আটক অন্য দুজন হলেন মুসলিমের দ্বিতীয় স্ত্রী মলেদা বেগম ও মেয়ে মেরি আক্তার।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি মুসলিম উদ্দিন কারারক্ষীর চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি তিন বিয়ে করেছেন এবং প্রত্যেক স্ত্রীর ঘরেই সন্তান রয়েছে। শফিকুল ছিলেন তার প্রয়াত প্রথম স্ত্রী মৃ'ত সবুজা বেগমের সন্তান। মুসলিম উদ্দিনের চার একর আবাদি জমি ও পেনশনের টাকা নিয়ে অনেক দিন ধরে বাবা-ছেলের সঙ্গে বিবাদ চলছিল।
এ নিয়ে একাধিকবার বাবা মুসলিম উদ্দিন ও ছেলে শফিকুল সং'ঘা'তে জড়ায়। শনিবার সকাল ৯টার দিকে শফিকুল ধানখেতে আমন ধানের চারা রোপণ করেছিলেন। পাশেই পাটখেতে পাট কাটছিলেন বাবা মুসলিম উদ্দিন। এ সময় বাবার কাছে দুই একর জমি দাবি করে এবং পেনশনের টাকার ভাগ চান ছেলে।
বাবা-ছেলে এ নিয়ে তর্ক-বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে বাবা উত্তেজিত হয়ে হাতে থাকা দা নিয়ে ছেলের কাছে আসেন। এ সময় ছেলে বাবাকে দেখে নেয়ার হু'মকি দিলে উ'ত্তে'জিত হয়ে মুসলিম উদ্দিন ছেলের ঘাড়ে দা দিয়ে কোপ দেন। প্রথম কো'পে ছেলে মাটিয়ে লুটিয়ে পড়েন এবং ঘটনাস্থলেই মারা যান ছেলে শফিকুল।
স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নি'হ'তের ম'রদেহ উদ্ধার করে ম'র্গে পাঠায়। পরে অভিযান চালিয়ে মুসলিম উদ্দিনকে আ'টক করে পুলিশ। দুপুরে ঘটনাস্থল থেকে হ'ত্যায় ব্যবহৃত দা উদ্ধার করা হয়। এ সময় পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম ও শত শত গ্রামবাসীর সামনে ছেলে শফিকুল হ'ত্যার দায় স্বীকার করেন বাবা। এ ঘটনায় শফিকুলের সৎমা মলেদা বেগম ও সৎবোন মেরি আক্তারকেও আ'টক করে পুলিশ।
পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক, ম'র্মা'ন্তিক। আমাদের সমাজে মূল্যবোধের যে অ'ব'ক্ষ'য় চলছে, এ হ'ত্যাকাণ্ড তার প্রমাণ। সামান্য অর্থ ও বিত্তের জন্য বাবা ছেলেকে ছাড় দিচ্ছে না, ছেলে বাবাকে ছাড় দিচ্ছে না। অর্থ ও স্বার্থের জন্য আমরা নীতি নৈতিকতা ভুলতে বসেছি।