একটি প্রেমের করুণ পরিণিতি ঘটল, গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করল প্রেমিকা। জানা যায়, পারভীন আক্তার নামে এক তরুণীর সঙ্গে নাজির হোসেনের প্রেমের সম্পর্ক হয় এবং তারপর ঘটে এমন ঘটনা।
এদিকে বুধবার (৭ জুলাই) সকাল ৯ টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
পারভীনের স্বজনরা জানান, উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের খন্দকারটোলা দক্ষিণপাড়া গ্রামের শাহ আলীর মেয়ে পারভীন আক্তার। প্রায় এক যুগ আগে পার্শ্ববর্তী মামুরশাহী নতুনপাড়া গ্রামের সাইফুল ইসলামের সঙ্গে বিয়ে হয় তার। সংসার জীবনে তাদের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। কিন্তু বিগত ছয় বছর আগে স্বামী সাইফুল ইসলাম মারা যান। এরপর বাবার বাড়িতে চলে আসেন।
পরবর্তীতে সাধুবাড়ী পাকারমাথা নামক স্থানে সিট কাপড় বিক্রির দোকান দিয়ে জীবিকা নির্বাহ শুরু করেন পারভীন আক্তার। এরইমধ্যে খন্দকারটোলা দক্ষিণপাড়া গ্রামের গোলাম রব্বানীর ছেলে নাজির হোসেনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর বিয়ের প্রলোভন দিয়ে প্রেমিক নাজির তার সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কও করেন। কিন্তু বিয়ের জন্য চাপ দেয়া হলে নানা ধরনের তালবাহানা করতে থাকেন প্রেমিক নাজির।
তাই গ্যাস ট্যাবলেট হাতে নিয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিয়ের দাবিতে প্রেমিক নাজিরের বাড়িতে গিয়ে অনশন শুরু করেন। এ সময় গ্রাম্য মাতব্বর ও উভয় পরিবারের লোকজন মিলে সমঝোতার চেষ্টা চালান। কিন্তু প্রেমিক নাজির তাকে বিয়ে করতে অসম্মতির কথা জানিয়ে দেন। এমনকি প্রেমের সম্পর্কই অস্বীকার করেন তিনি।
এতে অভিমান করে ওইদিন সন্ধ্যায় পার্শ্ববর্তী চাচার বাড়িতে গিয়ে গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন পারভীন আক্তার। একপর্যায়ে তার স্বজন ও স্থানীয়রা ঘটনাটি জানতে পেরে দ্রুত উদ্ধার করে তাকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে তাৎক্ষণিক বগুড়ায় শজিমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। তবে বগুড়ায় হাসপাতালে নেয়ার পথেই মারা যান পারভীন আক্তার।
বিষয়টি সম্পর্কে বক্তব্য জানতে অভিযুক্ত নাজির হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ঘটনার পর থেকেই পলাতক থাকায় এবং ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়েই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। একইসঙ্গে পারভীন আক্তারের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা নেয়া হয়েছে।’