শেরপুর : প্রতারক প্রেমিকের ডাকে সাড়া দিয়ে নিথর দেহ হয়ে উঠোনে পড়ে রইল প্রেমিকা। প্রেমিকের ঘরের উঠোনে কলেজছাত্রীর এমন অবস্থা দেখে মনে মনে সবাই আফসোস করছিলেন। প্রেমের ডাকে সাড়া দেয়ায় প্রেমিকার ওপর এমন আচরণ কেউ মেনে নিতে পারছেন না। ভিড় জমানো লোকজন বুঝতে পারে, মেয়েটিকে নির্যাতন করে ফেলে রাখা হয়েছে। জ্ঞান হারিয়েছে অনেক আগেই।
১৭ জুলাই সকালে চোখে পড়েছে শ্রীবর্দী সদর ইউনিয়নের কোকরার পাড় গ্রামের নাদের হোসেনের বাড়িতে।
ঘটনা জানাজানি হলে আত্মীয়-স্বজন এসে নির্যাতিতাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে মেয়েটির চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে শ্রীবর্দী হাসপাতালে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, কোকরার পাড় গ্রামের কলেজপড়ুয়া ছাত্রীটির সঙ্গে একই গ্রামের নাদের হোসেনের ছেলে কলেজপড়ুয়া সোহেলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
তারা জানান, দীর্ঘ দেড় বছর ধরে চলছিল তাদের সম্পর্ক। দুজনের বাড়ি একই গ্রামে হওয়ায় মাঝে মধ্যে দেখা সাক্ষাৎ হতো।
একপর্যায়ে ১৬ জুলাই রাতে প্রেমিক সোহেল তাকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে নিজ বাড়িতে ডেকে আনে। ঘটনা টের পেয়ে যায় সোহেলের পরিবারের সদস্যসহ প্রতিবেশিরা।
এতে প্রেমিক সোহেল তার মত পাল্টে ফেলে। পরিবারের সদস্যদের জানিয়ে দেয়, মেয়েটি তাকে বিপদে ফেলতে বাড়িতে উঠে এসেছে। তাকে বিয়ে করবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। এ সময় মেয়েটিকে তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়।
খবর পেয়ে শ্রীবর্দী সদর ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম রাতেই ওই বাড়িতে আসেন। মেয়েটিকে তার প্রেমিক সোহেলের ঘরে হেফাজতে রেখে পরদিন রোববার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে কথা বলে চলে যান তিনি।
কিন্তু প্রেমিক সোহেল রাতেই তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পরামর্শ করে গা-ঢাকা দেয়। সকালে সোহেলের বাবা-মা, ভাই-বোন, ভাবী ও চাচা মেয়েটিকে বাড়ি থেকে তাড়ানোর চেষ্টা করে।
কিন্তু মেয়েটি যেতে না চাইলে তারা তাকে বেধড়ক মারপিট করে গুরুতর জখম করে। একপর্যায়ে মেয়েটি জ্ঞান হারিয়ে ফেললে উঠোনে ফেলে রাখে। সকালে এ দৃশ্য দেখে সেখানে শত শত মানুষ ভিড় জমায়।
খবর জেনে ঘটনাস্থলে এসে নির্যাতিতা মেয়েটির মামা তাতিহাটি ইউপি সদস্য আব্দুল আলী শ্রীবর্দী থানায় খবর দেন। কিন্তু থানা পুলিশ কোনো রকম ব্যবস্থা না নিয়ে তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দেয়।
নিরূপায় হয়ে স্থানীয় জনতা ও আত্মীয়-স্বজন মিলে মেয়েটিকে উদ্ধার করে শ্রীবর্দী হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
শ্রীবর্দী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস আলম জানান, এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
১৭ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম