জানা গেছে, রাতে খাবার খেয়ে এক কক্ষে শুয়েছিল শিশু দুই কন্যা। অন্য কক্ষে আরেক শিশু কন্যাকে নিয়ে শুয়েছিলেন মা। আজ সোমবার সকালে বিছানায় দুই মেয়ের লাশ দেখে মায়ের বুকফাটা আর্তনাদ। কে দেবে তাকে সান্ত্বনা? সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা যে কারো নেই। মায়ের আর্তনাদে যেন বাতাস ভারী হয়ে ওঠে।
এমন হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কালিকাপ্রসাদ গ্রামে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নিহতরা হলো ওই গ্রামের লিয়াকত হোসেন মাতবরের মেয়ে সাদিয়া (৭) ও সামিয়া (৫)।
নড়িয়া থানা পুলিশ জানায়, নড়িয়া উপজেলার মোক্তারের চর ইউনিয়নের কালিকাপ্রসাদ গ্রামের অটোরিকশাচালক লিয়াকত হোসেন মাতবর (৩৫) ও পারভীন আক্তার (২৮) দম্পতির তিন মেয়ে। তাদের ঘরে ৭ বছর বয়সী সাদিয়া, ৫ বছর বয়সী সামিয়া ও দেড় বছর বয়সী লামিয়া।
পুলিশ জানায়, গতকাল রোববার রাতের খাবার খেয়ে তারা ঘুমিয়ে পড়ে। বাবা লিয়াকত রাত ১টার দিকে বাড়ি ফিরে তার সন্তানদের ঘুমিয়ে থাকতে দেখেন। সকালে মা পারভীন আক্তার মক্তবে পড়তে যাওয়ার জন্য সাদিয়া ও সামিয়াকে ঘুম থেকে জাগাতে যান। এসময় তাদের কোনো সাড়া-শব্দ না পেয়ে চিৎকার দিয়ে উঠেন। মায়ের কান্নার শব্দ পেয়ে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। পরে নড়িয়া থানায় খবর দেয়া হলে পুলিশ এসে লাশ দুটো উদ্ধার করে।
উদ্ধারের পর শিশু দুটির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ বিষয়ে শিশুদের বাবা লিয়াকত মাতবরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একরাম আলী মিয়া জানান, শিশু দুটির শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। মারা যাওয়ার কারণ উদ্ঘাটনের চেষ্টা চলছে। ময়নাতদন্তের পর এ বিষয়ে জানা যাবে বলে জানান তিনি
কান্নাজড়িত কণ্ঠে শিশুদের মা পারভীন আক্তার বলেন, খাবার খাওয়ার পর মেয়ে দুটি ঘুমিয়ে ছিল। ছোট মেয়েকে নিয়ে আমরা আলাদা কক্ষে ঘুমিয়েছিলাম। তারা ঘুম থেকে না উঠায় আমি তাদের ডাকতে যাই। কোনো সাড়া-শব্দ না পাওয়ায় চিৎকার দিয়ে উঠি। ওরা আমার বুক খালি করে দিয়ে গেল বাবা। আমি এখন কাকে নিয়ে বাঁচবো? কাকে মক্তবে পাঠাবো?
১০ আগস্ট,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর