টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে বিদেশি সংস্থা অর্থায়নে নির্মিত মসজিদ নিজের দাবি করে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে ছালাম নামের স্থানীয় এক প্রভাবশালী। এতে ওই মসজিদে নামাজ আদায় করতে পারছেন না স্থানীয়রা। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার লোকেরপাড়া ইউনিয়নের চরবকশিয়া গ্রামে বিদেশি একটি সংস্থার অর্থায়নে ২০১৫ সালে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। দুবাই প্রবাসী বেলাল হোসেনও সেই মসজিদে বিপুল টাকা অনুদান প্রদান করেন।
এরপর থেকে গ্রামের মুসলমানরা সেখানে নামাজ আদায় করতো। এর কিছু দিনের মধ্যে বেলাল হোসেন ও তার ভাই ছালাম মসজিদ নিজেদের দাবি করে। বেলাল বর্তমানে দুবাই বসবাস করছে। এতে মসজিদ পরিচালনা কমিটি ভেঙে দেয় ছালাম।
পরে মসজিদ নিজেদের দখলে নিতে তালা ঝুঁলিয়ে দেয় মসজিদে। এছাড়া কাউকে কিছু না জানিয়ে মসজিদের ইমামকে তাড়িয়ে দিয়ে নতুন ইমাম নিয়োগ করা হয়। এরপর থেকেই নিজের ইচ্ছেমত মসজিদ পরিচালনা করে আসছেন ছালাম। স্থানীয়রা মসজিদে না গেলেও ছালাম ও ইমাম দুইজনে মিলে মসজিদে নামাজ আদায় করেন।
চরবকশিয়া গ্রামের হেলাল উদ্দিন, নুরুল ইসলামসহ অনেকেই জানান, ব্যক্তি মালিকানা দাবি করে গ্রামের সমস্ত মুসল্লিরা যাতে নামাজ পড়তে না পারে সে জন্য দীর্ঘদিন ধরে মসজিদে তালা দিয়ে রাখা হয়েছে। এতে মসজিদে নামাজ আদায় থেকে বিরত রয়েছে গ্রামের মুসল্লিরা। প্রতিকার চেয়ে ইউপি চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন জায়গায় গ্রামবাসী লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
চরবকশিয়া জামে মসজিদের সহ-সভাপতি আবুল হোসেন জানান, মসজিদ পরিচালনা কমিটির অনুমতি ছাড়াই নিজেদের দাবি করে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। ছালাম ও দুবাই প্রবাসী বেলালের পৈতৃক জমিতে মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। তালা লাগানো ও ইমাম তাড়িয়ে দেয়ার বিষয়টি প্রতিবাদ করতে গেলে তারা মসজিদ নিজেদের দাবি করে। গ্রামের লোকজন তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলতে সাহস পায় না।
মসজিদে তালা দেয়া ছালাম হোসেন জানান, শুধুমাত্র নামাজের সময় খুলে দেয়া হয়। এছাড়া সড়কের সাথে মসজিদ হওয়ায় চুরির সম্ভাবনা রয়েছে। নামাজের আগে ইমাম এসে তালা খুলে আযান দেন। শুধু বিদেশি অর্থে মসজিদ নির্মাণ হয়নি, আমার ভাই বেলাল হোসেন বিপুল টাকা দিয়েছে নির্মাণের জন্য।
উপজেলার লোকেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফ হোসেন জানান, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। পারিবারিক কারণে ভাই ভাইকে মসজিদে যেতে দেয় না। তাদের ভাইদের কারণে এমন জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। মসজিদ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আরেকটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে গ্রামবাসী।