টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার এক গ্রামের দুই শতাধিক গ্রাহককে দ্বিগুণ মুনাফা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় ১৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ই-অরেঞ্জ নামের একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
ওই উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের ইছাদিঘী গ্রামের ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া যায়। এ ঘটনায় ঢাকার গুলশান থানায় ও ভোক্তা অধিদপ্তরে ওই গ্রামের ১০০ জন গ্রাহক ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।
জানা যায়, ওই গ্রামের কৃষক, দিনমজুর, ভ্যানচালক, প্রবাসী, প্রবাসীর স্ত্রী, চায়ের দোকানদারসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কমপক্ষে ২০০ গ্রাহক ই-অরেঞ্জে বিনিয়োগ করেছেন। তাদের প্রকৃত বিনিয়োগকৃত মূলধন প্রায় ১৫ কোটি টাকা। সে হিসেবে ই-অরেঞ্জের কাছে প্রায় ৩০ কোটি টাকার পণ্য পাওনা রয়েছে তাদের।
ইছাদিঘী গ্রামের মোহাম্মদ আলী আজাদের ছেলে নাসিদুল ইসলাম প্রথমবার ই-অরেঞ্জে ৯১ হাজার টাকা করে ছয়টি মোটরসাইকেল অর্ডার করেন। প্রতিটি মোটরসাইকেল এক লাখ ৬০ হাজার টাকা করে বিক্রি ভাউচারের মাধ্যমে নয় লাখ ৬০ হাজার টাকা উত্তোলন করেন তিনি। কিন্তু সেই লোভে এবার বিনিয়োগ করে তিনি ধ'রা খেয়েছেন ১৮ লাখ টাকা।
পাঁচ বছর আগে জাহানারা বেগমের স্বামী মারা গেছেন। কলা বাগানে শ্রমিকের কাজ করে তার সংসার চলে। দ্বিগুণ লাভের আশায় তিনিও সঞ্চয় করা দুই লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এভাবে ওই এক গ্রামেরই দুই শতাধিক গ্রাহক ই-অরেঞ্জে বিনিয়োগ করে প্রায় ১৫ কোটি টাকা প্রতারিত হয়েছেন।
এ ব্যাপারে ওই গ্রামের বাসিন্দা, গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের গ্রাম থেকে আনুমানিক দুই শতাধিক মানুষ প্রায় ১৫ কোটি টাকা ওই প্রতিষ্ঠানে জমা দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী নাসিদুল জানান, আমরা যে অনলাইন গেটওয়ে (এসএসএল কমার্স) ব্যবহার করে টাকা জমা দিয়েছি, তাদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, জুন মাসের টাকাগুলো এখনো ওঠানো হয়নি। ই-অরেঞ্জ কর্তৃপক্ষ তাদের পণ্য ডেলিভারি না দিতে পেরে রিফান্ড করার অর্ডার দিলে আমরা জুন মাসের টাকাগুলো গ্রাহকদের ফেরত দিতে পারব।
সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একে সাইদুল হক ভূঁইয়া জানান, সখীপুরের এতো লোক প্র'তারিত হয়েছেন, তা জানা ছিল না। প্রতারিত ব্যক্তিরা এখনো থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিডি-প্রতিদিন