শনিবার, ০৪ অক্টোবর, ২০২৫, ০২:৫২:১৩

বাগেরহাটে আজ হঠাৎ ইলিশের কেজি কত হলো জানেন? অবাক ক্রেতারা

বাগেরহাটে আজ হঠাৎ ইলিশের কেজি কত হলো জানেন? অবাক ক্রেতারা

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় আজ শনিবার (৪ অক্টোবর) থেকে সারা দেশে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। চলবে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত। এসময় ইলিশ আহরণ, পরিবহন, ক্রয়-বিক্রয় ও মজুত নিষিদ্ধ থাকবে।

এদিকে নিষেধাজ্ঞার আগে শেষ দিনে বাগেরহাট কেবি বাজারে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। তবে ইলিশ কম ও দাম বেশি থাকায় হতাশ হন ক্রেতারা।

শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সরেজমিনে দেখা যায়, বিক্রেতাদের হাঁকডাক ও ক্রেতাদের ভিড়ে মুখর হয়ে আছে দড়াটানা সংলগ্ন বাগেরহাট কেবি বাজার। ইলিশ কম ও দাম বেশি হওয়ায় অনেকেই ফেরেন খালি হাতে। বাজারে বড় সাইজের ইলিশ প্রায় ছিল না বললেই চলে। মাঝারি সাইজের মাছের সরবরাহও কম ছিল। ছোট ইলিশের পরিমাণই বেশি। ট্রলার থেকে নামানো ইলিশ উন্মুক্ত নিলাম পদ্ধতিতে বিক্রির পাশাপাশি কিছু ক্রেতা সরাসরি খুচরাও বিক্রি করছিলেন। এই ক্রয়-বিক্রয় চলে রাত ১২টা পর্যন্ত।

এদিন বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয় ২৫শ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত, ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয় ১৫০০ টাকা কেজি দরে, ২৫০ গ্রাম থেকে ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয় এক হাজার থেকে ১২০০ টাকা কেজি দরে। এর থেকে ছোট ইলিশ বিক্রি হয় ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত।

ইলিশ ছাড়াও এই বাজারে তুলার ডাটি, রুপচাঁদা, ঢেলাচ্যালা, কঙ্কোন, চিতল, লইট্টা, জাবাসহ নানা ধরনে সামুদ্রিক মাছ বিক্রি হয়। শুক্রবার সেসবেরও দাম তুলনামূলক বেশি ছিল।

ইলিশ কিনতে আসা তানজিম শেখ বলেন, বাচ্চা দুটোর জন্য ইলিশ কিনতে আসছিলাম। কিন্তু ফিরতে হচ্ছে হতাশ হয়ে।

আমিনুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা বলেন, ৩ হাজার টাকা এক কেজি ওজনের ইলিশের দাম। এত দাম দিয়ে কে মাছ কিনবে ভাই? এছাড়া ছোট ইলিশের দামও গরিব মানুষের নাগালের বাইরে।

মাছ কিনতে আসা নাসরিন বেগম বলেন, শেষ সময় ভেবেছিলাম মাছের দাম কম হবে, তাই আসছিলাম। কিন্তু দাম এত বেশি? বাচ্চারা আছে, তাই ৮০০ টাকা করে ছোট এক কেজি ইলিশ মাছ কিনেছি।

দাম বেশির কারণ সম্পর্কে ব্যবসায়ীরা বলছেন, দাম পূর্বের মতই আছে। মৌসুম জুড়ে জেলেরা মাছ কম পেয়েছে, তাই দাম বেশি।

কেবি বাজার মৎস্য আড়তদার সমিতির সভাপতি শেখ আবেদ আলী বলেন, এবার তুলনামূলক মাছ অনেক কম এসেছে। অনেক ট্রলার মালিকের লোকসান হবে। আমদানি কম থাকলে দাম বেশি হবে এটা স্বাভাবিক।

ইব্রাহিম হাজি নামের এক জেলে বলেন, এই কয়েকদিন সমুদ্র নিম্নচাপের কারণে খুব উত্তাল ছিল, জালে তেমন মাছ উঠেনি। এ বছর জুড়েই মাছ খুব কম পাচ্ছি।

অপরদিকে নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা মৎস্য বিভাগ। এরইমধ্যে জেলে ও স্থানীয়দের সচেতন করতে সভা, সেমিনার ও মাইকিং করা হয়েছে। এছাড়া নিষেধাজ্ঞার সময় যাতে কেউ মাছ আহরণ করতে না পারে এজন্য কোস্টগার্ড, বন বিভাগ, র‍্যাব, নৌপুলিশ ও মৎস্য অধিদপ্তর নদী, সমুদ্র ও নদী মোহনায় টহল জোরদার করবে।

এই নিষেধাজ্ঞার আওতায়, সমুদ্র, সমুদ্রের মোহনা, নদী ও নদীর মোহনায় মাছ আহরণ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকবে। এর পাশাপাশি ইলিশ সংরক্ষণ, মজুত, বাজারজাতকরণ ও পরিবহন সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। যদি কেউ এই নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে, তাহলে তাকে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা যাবে। আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে বলে জানিয়েছেন বাগেরহাটের ভারপ্রাপ্ত জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রাজ কুমার রাজ।

তিনি বলেন, এটাই ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম। এই সময়টা কাজে লাগাতে পারলে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। এজন্য আমরা সর্বোচ্চা চেষ্টা করছি।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে