বরগুনার বেতাগী উপজেলায় নিজের কোনো ঘর না থাকায় প্রতিবেশীর গোয়ালঘরে বসবাস করেন ৭৫ বছরের বৃদ্ধ মকবুল হাওলাদার ও তার ১৪ বছরের মেয়ে মিম। কনকনে শীতের মধ্যে তারা গোয়ালঘরে মানবতার জীবনযাপন করছেন।
গবাদিপশুর বর্জ্যের মধ্যে নিরুপায় হয়ে বসবাস করা আশ্রয়হীন ওই বৃদ্ধের শেষ বয়সে যেন দেখারও কেউ নেই। তীব্র শীতে গোয়ালঘরের মেঝেতে এখন বাবা-মেয়ের ভরসা। রোগাক্রান্ত শরীর নিয়ে কখনও খেয়ে আবার কখনও না খেয়েই দিন কাটছে তাদের।
মকবুলের বাড়ি বেতাগী উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের জিলবুনিয়া গ্রামে। তিনি খালেক হাওলাদার নামে এক ব্যক্তির একটি গোয়ালঘরে গবাদিপশুর বর্জ্যের মধ্যে বসবাস করছেন মেয়েকে নিয়ে।
বর্তমানে বয়সের ভারে হাঁটাচলা বন্ধ। তবু পেটের দায়ে রোগা শরীর নিয়ে খাবার তাগিদে তাকে বের হতে হয় গ্রামে গ্রামে। মানুষের কাছে হাত পেতে যদি কিছু জোটে তা দিয়েই বাবা-মেয়ের পেট চলে। কিন্তু যেদিন শরীর ভালো থাকে না। সেদিন গ্রামেও বের হতে পারে না। এ সময় না খেয়ে থাকতে হয় বাবা ও মেয়েকে।
কান্না ভেজা চোখে বৃদ্ধ বলেন, খুব কষ্টে আছি আমি ও আমার মেয়ে। এই শীতে রাতে হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে যায়। অসুস্থ থাকলেও টাকার অভাবে ওষুধ কিনতে পারি না, কিছু খেতে পারি না। এই জীবন আর ভালো লাগে না। গত সাত বছর আগে বৃদ্ধ মকবুল হাওলাদারে স্ত্রী মারা যান। তখন তার মেয়ে মিমের বয়স ছয় বছর। তখন মেয়েকে নিয়ে একটি ছোট্ট কুঁড়েঘরে বসবাস করতেন। কিন্তু গত ছয় মাস আগে বৃষ্টি আর বাতাসে মকবুলের সেই কুড়েঘর ভেঙে যায়। প্রতিবেশী খালেক হাওলাদারের গোয়ালঘরে ঠাঁই হয় বাবা ও মেয়ের।
প্রতিবেশী মোহাম্মদ সেলিম মিয়া বলেন, আসলেই বৃদ্ধ মকবুল এবং তার এই ছোট মেয়েকে নিয়ে খুব মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আমি তাকে আর্থিক সহায়তা এবং একটি সরকারি ঘর দেওয়ার দাবি জানাই।
বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুহৃদ সালেহীন বলেন, তাদের মানবেতর জীবনযাপনের বিষয়টি জানতে পেরেছি। সামাজিকভাবে পুনর্বাসন করার জন্য যা যা পদক্ষেপ নেওয়া দরকার বেতাগী উপজেলা প্রশাসন তা নেবে।