বরিশাল : দেশে একের পর এক এমন ঘটে যাচ্ছে। ধরাও পড়ছে অপরাধীরা, কিন্তু তারপরও বন্ধ হচ্ছে না এমন অমানবিক নির্যাতন। মিথ্যা অপবাদে দুই স্কুলছাত্রকে গাছের সাথে বেঁধে অমানবিক নির্যাতন করেছে মানুষ নামে নরপশুরা।
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় কবুতর চুরির মিথ্যা অপবাদে স্থানীয় ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে দুই স্কুলছাত্রকে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে।
ছেলেকে মারধরের প্রতিবাদ করায় তার মাকেও লাঞ্ছিত করা হয়েছে। গুরুতর আহতাবস্থায় একজনকে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপরজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ব্যাপারে আহত দুই ছাত্রের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছিল।
জানা গেছে, কবুতর চুরির মিথ্যা অপবাদে গতকাল শুক্রবার বিকেলে উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের ছোট বাশাইল গ্রামের খোকন বেপারীর ছেলে ও ছোট বাশাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র সাগর বেপারী (১০) এবং একই এলাকার মোহাম্মাদ আলী শিকদারের ছেলে ও বাশাইল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র তুষার শিকদারকে (১২) ছোট বাশাইল কালুশাহ মাজারের উত্তর পাশে নারকেল গাছের সাথে বেঁধে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়।
৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপির প্রচার সম্পাদক মো. বরকত উল্লাহর নেতৃত্বে স্থানীয় মনির চৌকিদার, নাসির চৌকিদারসহ স্থানীয়রা তিন ঘণ্টাব্যাপী ওই দুই শিশুকে নির্যাতন করা হয়।
নির্যাতনের সংবাদ শুনে সাগরের মা রওশনারা বেগম ঘটনাস্থলে এসে তার ছেলেকে নিযার্তন করার দৃশ্য দেখে ইউপি সদস্যের কাছে অনুরোধ করেন। ছেলেকে নিয়ে বাড়ি চলে যেতে চাইলে নির্যাতনকারীরা তার কথায় কোনো কর্নপাত করেননি।
প্রায় তিন ঘণ্টা ওই দুই শিশুর ওপর নির্যাতন চালিয়ে গাছের সাথে বেঁধে রাখা হয়। ছেলেকে মারধরের প্রতিবাদ করায় চুন্নু চৌকিদারের ছেলে নাসির চৌকিদার সাগরের মা রওশনারা বেগমের বাড়িতে গিয়ে তাকেও লাঞ্ছিত করে।
পরে সাগরের মা রওশনারা বেগম ও মামা আবাস উদ্দিন আহত দুই শিশুকে উদ্ধার করে গুরুতর আহতাবস্থায় সাগরকে আগৈলঝাড়া উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। আর তুষারকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে সাগরের মা রওশনারা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, আমার ছেলেকে ইউপি সদস্য বরকত উল্লাহর নেতৃত্বে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই।
এদিকে অভিযুক্ত মেম্বার বরকত উল্লাহ এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি নির্যাতন করেনি। মনির ও অন্যরা শিশুদের নির্যাতন করেছে।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান মো. ইলিয়াস তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, নির্যাতনের ঘটনা আমার জানা নেই। তবে ওসি আমাকে ফোনের মাধ্যমে জানিয়েছেন।
আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নির্যাতিতর পরিবার থেকে মামলা করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
৩ এপ্রিল, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম