মায়ের অপেক্ষায় ১৩ বছর ...
লালমোহন : নিজের সন্তানকে পেতে এক মা লন্ডন থেকে এসে আদালতে ঘুরছেন। অপেক্ষা করছেন কবে তার মেয়ে তার কাছে আসবে। ডাকবে মা বলে। ভোলার লালমোহন উপজেলার লাঙ্গলখালী এলাকায় আপন চাচা ও চাচীর কাছে ১৩ বছর ধরে বেড়ে উঠেছে লিয়ানা। মায়ের কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে লিয়ানাকে তার বাবা মিজান তুলে দেয় ভাই ও ভাবীর কাছে। যারা লিয়ানার জন্ম দিয়েছেন তাদের নামটুকু পর্যন্ত মুছে ফেলে চাচা লিটন ও চাচী পারভীন।
এমনকি স্কুলের রেজিষ্টারে পর্যন্ত পিতা-মাতার নাম লিটন ও পারভীন লেখা হয়েছে। লিয়ানা এখন অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। ১৩ বছর আগে যখন লিয়ানার বয়স ৬ মাস, তখন বাবা মিজান এবং মা নাসরিনের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়। নাসরিন অভিযোগ করেন, মিজান ছিলেন দুশ্চরিত্রের লোক। যা সহ্যের সীমা ছাড়িয়েছিল। শেষ পর্যন্ত যার পরিণতি হয় ডিভোর্স। দুই মেয়ে মিম ও লিয়ানাকে মিজান নিয়ে যেতে চাইলেও নাসরিন মিমকে নিজের কাছে নিয়ে যায়। ওইসময় লিয়ানাকে খুঁজে না পাওয়ায় নিতে পারেনি।
মিজান পুনরায় বিয়ে করে লিয়ানাকে তার ভাই লিটন ও ভাবী পারভীনের কাছে তুলে দেয়। যারা লিয়ানার আসল বাবা ও মায়ের পরিচয় লিয়ানার কাছ থেকে কেড়ে নেয়। নাসরিন বড় মেয়ে মিমকে নিয়ে ভবিষ্যতের আশায় লন্ডন চলে যান। সেখানে গিয়েও লিয়ানার জন্য তাকে ছটফট করতে হয়েছে। লিয়ানার বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তিনি ব্যর্থ হয়েছেন।
এ ছাড়া কয়েকবার দেশে আসে, মেয়েকে ছুঁতেও পারেননি নাসরিন। নাসরিন জানান, লিয়ানা তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেছে। অনেক কথা হয়েছে তাদের মধ্যে। লিয়ানাও মায়ের সঙ্গে একান্তে কথা বলতে চায়। কিন্তু সে সুযোগ তাকে দেয়া হচ্ছে না। লিয়ানা তার জন্য একটা ল্যাপটপ আনতে বলেছে। নাসরিন মেয়ের জন্য সবচেয়ে দামী একটা ল্যাপটপ এনেছেন।
অনেক শপিং করেছেন লন্ডন থেকে। কিন্তু মেয়েকে দিতে পারছেন না। শেষ পর্যন্ত নিজের মেয়েকে কাছে পেতে লন্ডন থেকে ছুটে এসে ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন নাসরিন। আগামী ১৯শে আগস্ট আদালতে লিয়ানাকে হাজির করা হবে। সেদিন আদালত সিদ্ধান্ত দেবে লিয়ানা কার কাছে যাবে।
১৫ আগস্ট, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে