চট্টগ্রাম : প্রায় সাড়ে ৪ বছর আগে চট্টগ্রামে কুকুর লেলিয়ে হিমাদ্রি মজুমদার হিমুকে হত্যার দায়ে আজ ৫ আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত।
১৪ আগস্ট রোববার বিকেল ৪টায় চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ নুরুল ইসলামের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডিতরা হলেন ব্যবসায়ী শাহ সেলিম টিপু, তার ছেলে জুনায়েদ আহমেদ রিয়াদ, রিয়াদের বন্ধু জাহিদুর রহমান শাওন, শাহাদাত হোসেন সাজু ও মাহবুব আলী ড্যানি।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) অনুপম চক্রবর্ত্তী এ খবর নিশ্চিত করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ২৮ জুলাই এ মামলার রায় ঘোষণার কথা থাকলেও বিচারক ছুটিতে থাকায় তা পিছিয়ে ১১ আগস্ট ধার্য করা হয়। ১১ আগস্টের নির্ধারিত তারিখ পিছিয়ে ১৪ আগস্ট নির্ধারণ করেন আদালত।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১২ সালের ২৭ এপ্রিল নগরীর পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকার ১ নম্বর সড়কের ‘ফরহাদ ম্যানশন’ নামের (১০১ নম্বর বাড়ি) ব্যবসায়ী শাহ সেলিম টিপুর বাড়ির ছাদ থেকে হিমাদ্রি মজুমদার হিমুকে বিদেশি হিংস্র কুকুর লেলিয়ে আক্রমণ ও ধাক্কা দিয়ে ছাদ থেকে ফেলে দেয় অভিজাত পরিবারের কয়েকজন বখাটে তরুণ।
গুরুতর আহত হিমুকে উদ্ধার করে প্রথমে চট্টগ্রাম এবং পরে ঢাকার একটি হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ২৬ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ওই বছরের ২৩ মে মারা যান হিমু।
হিমু পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকার ১ নম্বর সড়কের ইংরেজি মাধ্যমের সামারফিল্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের ‘এ’ লেভেলের শিক্ষার্থী ছিল।
এ ঘটনায় হিমুর মামা প্রকাশ দাশ অসিত বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় পাঁচজনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলায় আসামি করা হয় ব্যবসায়ী শাহ সেলিম টিপু, তার ছেলে জুনায়েদ আহমেদ রিয়াদ এবং রিয়াদের তিন বন্ধু শাহাদাৎ হোসাইন সাজু, মাহাবুব আলী খান ড্যানি এবং জাহিদুল ইসলাম শাওনকে।
এক মাস পর শাহাদাত হোসেন সাজু এবং পরে ব্যবসায়ী শাহ সেলিম টিপু ও জুনায়েদ আহমেদ রিয়াদ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে তিনজনই জামিন পান।
২০১২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পাঁচলাইশ থানা পুলিশ ওই মামলায় এজাহারভুক্ত পাঁচজনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। ১৮ অক্টোবর পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
২০১৪ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত। একই বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ২০১৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর যুক্তি উপস্থাপন শুরু হয়।
২০১৪ সালের ১৫ জুলাই হিমু হত্যা মামলা চট্টগ্রামের বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়।
এর আগে মামলাটি চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শহীদুল ইসলামের আদালতে বিচারাধীন ছিল।
এদিকে জামিনে থাকা দুই আসামি শাহ সেলিম টিপু ও শাহাদাত হোসাইন সাজু এরই মধ্যে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাদের কারাগারে প্রেরণ করেন।
মামলার আরেক আসামি মাহাবুব আলী খান ড্যানি আগে থেকেই কারাগারে রয়েছেন। বাকি দুই আসামি জুনায়েদ আহমেদ রিয়াদ ও জাহিদুল ইসলাম শাওন পলাতক রয়েছেন।
রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন নিহত হিমুর বাবা প্রবীর মজুমদার। তিনি বলেন, এ মামলা তার পরিবার ন্যায়বিচার পেয়েছেন।
১৪ আগস্ট,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম