মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৬, ১১:৪৯:০৩

আতঙ্কে এলাকাবাসী, ‘কারখানার পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে’

আতঙ্কে এলাকাবাসী, ‘কারখানার পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে’

চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামের আনোয়ারায় সার কারখানায় ছড়িয়ে পড়া গ্যাস অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। গ্যাসের তীব্রতায় অসুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে নয়জন হাসপাতাল ছেড়েছেন। অন্যরা ভালোর দিকে।

ফায়ার সার্ভসের চট্টগ্রাম অফিস অঞ্চলের ওয়্যারহাউস পরিদর্শক দোলন আচার্য বলেন, কারখানার পরিস্থিতি মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে। পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘণ্টা দুয়েক সময় লাগতে পারে। ফায়ার সার্ভিসের ছয়টি ইউনিটের ১১টি গাড়ি ঘটনাস্থলে কাজ করছে।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির সদস্য আব্দুল হালিম বলেন, অসুস্থদের মধ্যে নয়জন হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছেন। অন্যরা আশঙ্কামুক্ত।

গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। অ্যামোনিয়াম ফসফেটের বার্নাল (আধার) বিস্ফোরণে আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকায় গ্যাস ছড়িয়ে পড়েছে। দুর্ঘটনার পর অ্যামোনিয়া গ্যাসের তীব্রতায় অসুস্থ হয়ে পড়া অন্তত ৫০ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম শহরের পতেঙ্গার ১৫ নম্বর ঘাট এলাকার উল্টো দিকে কর্ণফুলী নদীর পূর্ব পাড়ে ডিএপি (ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট) ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের কারখানায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। কারখানাটি ড্যাপ-১ কারখানা নামেও পরিচিত বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা। দুর্ঘটনার পর অ্যামোনিয়া গ্যাস নদীর পশ্চিম পাড়ে চট্টগ্রাম নগরের বন্দর ও হালিশহর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। রাতে এ দুর্ঘটনার পর শহরের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।

ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা জানান, গ্যাসের কারণে পতেঙ্গায় শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বেশ কয়েকজন যাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের মধ্যে পাঁচজনকে চিকিৎসার জন্য রাত একটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

নগরের হালিশহর এলাকার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম গত রাত সাড়ে ১২টায় ফোন করে বলেন, ‘গ্যাসের গন্ধের কারণে ঘরে টেকা যাচ্ছে না। শ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছে।’

অ্যামোনিয়াম ফসফেট বাতাসের সঙ্গে মিশে অ্যামোনিয়া গ্যাস তৈরি করে বলে জানান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত ও পরিবেশ রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুমন গাঙ্গুলী। তিনি  বলেন, গ্যাসের ঘনমাত্রার ওপর নির্ভর করে এর ক্ষতিকর প্রভাব। তবে এই গ্যাসের প্রভাবে চোখ জ্বালাপোড়া করে ও শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।

দুর্ঘটনার পর চট্টগ্রাম শহর থেকে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। রাত দেড়টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক জসীম উদ্দিন বলেন, আটটি গাড়ি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। সেখানে কৃত্রিম বৃষ্টি ছিটানো হচ্ছে।

এর আগে রাত একটায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অসুস্থ ব্যক্তিদের দেখতে যান জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন ও সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকী। এ সময় সিভিল সার্জন সাংবাদিকদের বলেন, গ্যাস ছড়িয়ে পড়লেও আতঙ্কের কিছু নেই। যেসব এলাকায় গ্যাস ছড়িয়েছে, সেখানকার বাসিন্দাদের মাস্ক না পরা এবং আগুন না জ্বালানোর পরামর্শ দেন তিনি।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক বলেন, লোকজনকে আতঙ্কিত না হতে মাইকিং করা হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা তাঁকে বলেছেন, পরিস্থিতি প্রায় নিয়ন্ত্রণে এসেছে। দুর্ঘটনার কারণ জানতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। -প্রথম আলো
২৩ আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে