শনিবার, ২৭ আগস্ট, ২০১৬, ০৭:০৩:১৬

খোঁজ মিলেছে সেই ইয়াসমিনের

খোঁজ মিলেছে সেই ইয়াসমিনের

জীবন মুছা : আমি পাপ্পা-মাম্মির কাছে ফিরে যেতে চাই। পাপ্পার জন্য মন কাঁদে আমার। পাপ্পা (বাবা) বলতেন কারো সঙ্গে কথা বলতে গেলে নির্ভয়ে বলতে হয়। সন্ধ্যা হলেই তাদের কথা মনে পড়লেই নীরবে কাঁদি।

ইয়াসমিন জানায়, দিনে খেলা আর কাজ। এছাড়া পড়ালেখা নিয়ে ব্যস্ত থাকি বলেই কোনো রকমে সময় কেটে যায়। কিন্তু রাতে যখন ঘুমাতে যাই তখন চোখে ভেসে আসে তাদের ছবি। ভাইয়া (সাহেদ) খুব আদর করে আমাকে। এখানকার সবাই খুব ভালো। সবাই আমাকে খুব আদর করে।

ইয়াসমিন জানায়, সম্ভবত ২০০৫ সালের এপ্রিলে আমার জন্মদিন ছিল। সম্ভবত সেদিন ছিল ৭ তারিখ। আমরা চাঁদপুরে জন্মদিন পালন করে ঢাকায় ফিরছিলাম। ফেরার পথে লঞ্চ দুর্ঘটনাটি ঘটে। আমার পাপ্পির (বাবা) নাম রাকিবুল হাসনাত।  মাম্মী (মা) রিয়া মুন্নী। পেশায় ডাক্তার। আমাদের বাড়ি চাঁদপুরে, দাদার নাম সাব্বির জাফর। আমার বাবা দাদুর একমাত্র ছেলে। বাবা-মায়ের সঙ্গে সিলেট-টেকনাফসহ বিভিন্ন স্থানে বেড়াতে যাওয়ার কথাও মনে পড়ছে একটু-আধটু। স্মৃতি ফিরে পাওয়া ইয়াসমিন গড়গড় করে বলতে থাকে আনুমানিক ১০ বছর আগে তার ফেলে আসা জীবনের কথা। চাঁদপুরে ও ঢাকায় আমাদের দুটো বাড়ি। ঢাকার বাড়িটি মাতুব্বর বাজারের কাছে। ঢাকার কাছাকাছি একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়তাম। স্কুলের নাম ম্যাক্সাসাইট। পুরো নাম মনে নেই। নানা বাড়িতে কখনো যাইনি। আমার মাম্মি (মা) নানাবাড়ির কথা কখনো মুখে আনত না। আনতে নিষেধ করত। নানার নামও জানি না।

আমাদের ঢাকার বাসায় এক আন্টি ছিলেন। তিনি বাসার কাজ করতেন। মা-বাবা তাকে আন্টি ডাকতে বলে দিয়েছিল।  আমাদের গাড়ি চালকের নাম জিয়া। যে ইয়াসমিন এতদিন বাবা-মায়ের নাম বলতে পারতো না, সে এখন তার শৈশবের সহপাঠীর নামও বলতে পারছে। আমার বন্ধু ছিল কিরণ। সুমন আঙ্কেলের ছেলে। ঢাকায় তাদের বাড়ির সামনে একটি বাঘ ছিল। সেটি দেখিয়ে আমাকে ভয় দেখাতো। আমি তার সঙ্গে ব্যাডমিন্টন খেলতাম।

সে আরো জানায়, দুর্ঘটনার পর এক পুলিশ আঙ্কেল আমার গলার লকেটে মাম্মি-পাপ্পার (মা-বাবার) ছবি দেখে কয়েকটা লাশ দেখালেন। সেখানে বাবা-মায়ের লাশ ছিল। তারপর উনি আমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলেন। দুই-তিন দিন তার কাছে রাখলেন। এরপর উনি বললেন, এখানে চোর-ডাকাত বেশি। তোমার লকেট, নূপুর আমার কাছে রাখো। একদিন পুলিশ আঙ্কেল গাড়ি করে আমাকে বাইরে নিয়ে গেলেন। তারপর রাস্তায় আমাকে একটি চিপস কিনে দিয়ে মোবাইলে কথা বলতে বলতে চলে গেলেন। আর ফিরলেন না। এরপর আমি আর কিছুই জানি না।

পাপ্পা (বাবা) মাম্মিকে (মা) দেখলে চিনবো। তাদের সঙ্গে চলে যাবো। বাবা-মা সম্ভবত এখনো বেঁচে আছেন। এখন ৮ম শ্রেণিতে পড়ি। অসুস্থতার কারণে গত বছর জেএসসি পরীক্ষা সবগুলো দিতে পারিনি। তা নাহলে এবার নবম শ্রেণিতে থাকতাম। তখন রোল নম্বর ২১ ছিল।

বাবা সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন। তখন বুঝতাম না এখন সেনাবাহিনীর পোশাক দেখে বাবার পোশাকের কথা মনে পড়ে। বাবার পোশাকের উপর লাল ক্রস (তরবারি) ছিল।

রোববার প্রতিবেদককে এভাবেই তার পূর্বের জীবন কাহিনী বলছিল ২০০৫ সালে চাঁদপুরে লঞ্চডুবির ঘটনায় হারিয়ে যাওয়া স্মৃতিশক্তিহীন হতভাগ্য কিশোরী ইয়াছমিন।

সেদিন ইয়াসমিনের জীবনে নেমে আসে এক অজানা ঘূর্ণিঝড়। যে ঝড় লণ্ডভণ্ড করে দেয় তার শৈশবের সুন্দর সাজানো পরিপাটি ভালোবাসাময় এক জীবন ঘর। ইয়াসমিন এখন অনেক বড় হয়েছে তবে তার জন্মদাতা এবং গর্ভধারিণী মায়ের কাছে নয়। বড় হয়েছে তার পালক মায়ের কাছে। তবে তিনিও ইয়াসমিনকে অনেক ভালোবাসেন এবং আদর করেন।  নিজের মেয়ে না থাকার সুবাধে ইয়াসমিনকেই এখন নিজের মেয়ে হিসেবে স্থান দিয়েছেন মনের মনিকোঠায়।

রোববার বিকেলে ইয়াসমিনের খোঁজে পটিয়া উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের আদর্শ পাড়া (আগের জোলাপাড়া) গ্রামে গেলে সেখানে সাহেদের বাড়িতে পাওয়া যায় ইয়াসমিনকে। অনেকক্ষণ কথা হয় তার সঙ্গে।

কথা বলতে গিয়ে তার চোখ বেয়ে নিরবে পানি পড়ছিল ইয়াসমিনের। এসময় তার কণ্ঠরোধ হয়ে আসছিল। মনে হচ্ছিল কেউ তার কণ্ঠ চেপে ধরেছে। আসলে তা নয়। পূর্বের তার পরিবারের কথা বলতে গিয়েই বার বার আবেগাপ্লুত হচ্ছিল ইয়াসমিন। আর ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে ছিল এ প্রতিবেদকের দিকে।

কি করবে ইয়াসমিন তাও ভেবে কুল পাচ্ছেনা। একদিকে তার জন্মদাতা মা-বাবার জন্য নাড়ির টান। অন্যদিকে তাকে মহাপ্রলয়ের সময় আশ্রয় দিয়ে গত দশ বছর ধরে লালন পালনকারী ভাই সাহেদ ও পালক মা পাকিজা আক্তারের টান।  কাকে ছেড়ে কাকে গ্রহণ করবে ইয়াসমিন? তবে সময় আসলে সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানায় ইয়াসমিন।

সাহেদের মায়ের কথা : ইয়াসমিনকে লালন পালনকারী সাহেদের মা পাকিজা আকতার এ প্রতিবেদককে বলেন, ইয়াসমিনকে পাঁচ বছর বয়সে তার ছেলে সাহেদ নিয়ে আসে। তখন থেকে তিনি তাকে নিজের মেয়ের মতো করেই লালন পালন করতে থাকেন। ধীরে ধীরে ইয়াসমিন শৈশব পেরিয়ে কৈশরে পা রেখেছে তার স্নেহের ছায়াতলে।

তিনি বলেন, তার কাছে নিয়ে আসার ৪ বছর পর ইয়াসমিন তার স্মৃতিশক্তি ফিরে পায়। এসময় বিভিন্ন লোকজন আসতে থাকে। কিন্তু তার পরিবারের কোনো খোঁজখবর মিলেনি। তার ছেলে সাহেদ অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কাউকে পায়নি। তবে টাকার অভাবে বেশিদূর এগুতে পারেননি সাহেদ।

পাকিজা আক্তার আরো জানান, ইয়াসমিন যখন বড় হতে থাকে এবং সব কিছু বুঝতে থাকে তখন তিনি তার হাতে সংসারের সব কিছু বুঝিয়ে দেয়। তখন তার ছেলেরা বিয়ে করেননি। এখন তিন ছেলেই বিয়ে করেছে। এর আগে পরিবারের সব কাজ দেখাশুনা করা থেকে শুরু করে সকল ফরমায়েস দিত ইয়াসমিনই। সে-ই যেন ছিল পরিবারের কর্তা।

এখন ইয়াসমিনকে ফেরত দিবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে কিছুটা চুপ হয়ে অশ্রুসিক্ত হয়ে যান তিনি। কৌশলে আঁচল দিয়ে অশ্রু মুছে ভেজা কণ্ঠে বললেন, যদি তার প্রকৃত মা-বাবা আসে এবং সে যদি চলে যেতে চায় তবে ফিরিয়ে দিবেন। কিন্তু তিনিও তো এ ১০ বছর তাকে নিজের গর্ভে ধরা মেয়ের মতোই মানুষ করেছেন। কোনো অভাব বুঝতে দেননি। করেননি কোনো বিরুপ আচরণ। তার কোনো মেয়ে নাই। তিনটিই ছেলে। ইয়াসমিনকে পেয়ে মনে হয় তার সেই অভাবটুকু পূরণ হয়েছে।

স্থানীয় ৬ ও ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আশরাফ আলী ও জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সাহেদ মেয়েটিকে নিজের বোনের চেয়েও বেশি আদর যত্ন করেন। তার কোনো প্রত্যাশা নেই যা সে পূরণ করেনি। ইয়াসমিন যখন যা চায় সাহেদ তাই এনে দেয় তাকে। কখনো যেন কোনো ধরনের মানসিক আঘাত না পায় সে দিকে সর্বদা সজাগ থাকে সাহেদ। এ যেন নিজেরই আপন বোন। ইয়াসমিনও বলল ভাইয়া (সাহেদ) তাকে অনেক আদর করে।

ইয়াসমিনের তথ্য সংগ্রহ করতে এ দুই ইউপি সদস্য সাধ্যমত সহযোগিতা করেন এ প্রতিবেদককে। একসঙ্গে সাহেদের বাড়িতে যান তারা দুজন। কথা বলেন ইয়াসমিনের সঙ্গেও। তারাও চান ইয়াসমিন তার আসল মা-বাবাকে ফিরেপাক। দুই ইউপি সদস্য বলেন, ভাই একটু চেষ্টা করে দেখেন মেয়েটির জন্য কিছু করতে পারেন কিনা।

সাহেদের কথা : পটিয়ার শিকলবাহা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের পূর্বের জোলাপাড়া বর্তমানে আদর্শপাড়ার মৃত নুরুন্নবীর ছেলে সাহেদ। পেশায় সিএনজি অটোরিকশা চালক। বর্তমানে দক্ষিণ জেলা সিএনজি চালক সমিতির অর্থ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। তিন ভাইয়ের মধ্যে সাহেদ দ্বিতীয়।

সাহেদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে পটিয়ার মইজ্জ্যার টেক এলাকায় যায় এ প্রতিবেদক। কথা হয় সেখানে দাঁড়িয়েই। একটি টি স্টলে চা খেতে খেতে সাহেদ বলছিলেন, ইয়াসমিনকে নিয়ে দীর্ঘ ১০ বছরের সংগ্রামের কথা। সময়টি ছিল ২০০৫ সালে যখন ইয়াসমিনকে ঢাকার মোহাম্মদপুরে কুড়িয়ে পান তখন সে একটি বড় গাড়ির হেলপার ছিলেন। তখন ইয়াসমিনকে পেয়ে তার বাড়িতে নিয়ে আসেন। তুলে দেন তার মমতাময়ী মায়ের হাতে। এরপর ২০০৯ সাল পর্যন্ত একটানা লালন পালন। এর মধ্যে কোনো খোঁজ খবর নেই। ২০০৯ সালে তার এক চাচাতো ভাই বাড়ির পাশে পুকুরে পড়ে গেলে ইয়াসমিন তাকে পুকুর থেকে উদ্ধার করে। ছেলেটিকে উদ্ধার করতে গিয়ে নিজেই জ্ঞান হারায় ইয়াসমিন। যখন জ্ঞান ফিরে আসে তখনই তার জীবনে আসে আরেকটি ঝড়। সে জিজ্ঞাসা করে সে এত বড় কেন হয়েছে, তার হাতগুলো এত লম্বা কেন, মাথার চুল এত লম্বা কেন, তার সামনে দাঁড়ানো তারা কারা, তার পাপ্পা, মাম্মি কোথায়?

তখন সাহেদ তাকে অতীতের দীর্ঘ ৪ বছরের ফেলে আসা সব কাহিনী বলেন। এরপর তিনি তার (ইয়াসমিনের) শৈশব জীবনের কথা তাদের কাছে একটু একটু করে বলতে থাকে।

সাহেদ জানান, তার কাছ থেকে সবকথা শুনার পর তিনি তার এক আত্মীয় পুলিশের উপ-পরিদর্শক বর্তমানে সদরঘাট থানার পরিদর্শক তদন্ত মর্জিনাকে জানান। তার পরামর্শে পটিয়া থানা এবং কোর্টে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন সাহেদ। এ ঘটনায় পটিয়া থানা পুলিশের তৎকালিন অফিসার ইনচার্জ তাকে সাধুবাদ জানান। এরপর ইয়াসমিনকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৭ দিন চিকিৎসা করানোর পরেও কোনো উন্নতি না দেখে তাকে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করান।

সাহেদ জানান, এর আগে একটি দৈনিক পত্রিকায় ইয়াসমিনকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর অপরাজেয় বাংলাদেশ’র সেইভ দ্যা চিলড্রেন প্রকল্পের লোকজন কয়েকদিন খোঁজ খবর নিয়েছিলেন। পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর টি কে গ্রুপের ম্যানেজার জামান সাহেব ইয়াসমিনের চিকিৎসার জন্য বেশ সহযোগিতা করেন। তার সহযোগিতায় সাহেদ ইয়াসমিনের জন্য প্রায় ৭/৮ লক্ষ টাকা খরচ করেন।

এরপর ২০১২ সালে সাবেক এমপি মরহুম আক্তারুজ্জামান চৌধুরীর সহায়তায় চাঁদপুরে নিয়ে যান ইয়াসমিনকে। সেখানে চাঁদপুরের তৎকালীন জেলা প্রশাসক প্রিয়তোষ সাহা একটি সংবাদ সম্মেলনও করেছিলেন ইয়াসমিনকে নিয়ে। এরপর হুরে জান্নাত নামের এক ম্যাজিস্ট্রেটকে দিয়ে গাড়িতে করে চাঁদপুরের সকল লঞ্চঘাটগুলো দুদিন ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখানো হয় ইয়াসমিনকে।

তখন ইয়াসমিন যে ঘাটটি চিহ্নিত করে সেটি নাকি ২০০৫ সালের এক লঞ্চ দুর্ঘটনার পরপরই বন্ধ করে দেয় প্রশাসন।  এছাড়া সেখানে মাইকিংও করানো হয় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

এরপর চাঁদপুর থেকে তারা ফিরে আসে। ইয়াসমিনের মানসিক সমস্যার অবনতি দেখা দিলে সাহেদ তাকে ঢাকার শ্যামলীতে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করান। ২০১২ সালের ২৪ মার্চ থেকে ৯ মে পর্যন্ত সেখানে চিকিৎসাধীন ছিল সে।

হাসপাতালটির পরিচালক ডা. ওয়াজুল আলম চৌধুরী ও ডা. শাহ আলম, ডা. জহিরের তত্ত্বাবধানে ছিল ইয়াসমিন। তারা একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করে ইয়াসমিনের সাইক্লোজিক্যাল ইন্টারোগেশন করান। এগুলোর অডিও ভিডিও রেকর্ডও করেন মেডিকেল বোর্ড। তখন বলেছিলেন ইন্টারোগেশনে প্রাপ্ত রেজাল্ট শুধুমাত্র গণমাধ্যমকর্মীদের জানানো হবে।

এরপর ৪৮ দিন চিকিৎসা শেষে ইয়াছমিনের চোখের চিকিৎসা করানো হয়। তারপর পুনরায় সাহেদের বাড়িতে নিয়ে আসে তাকে।

সাহেদ জানান, অনেক সেনা কর্মকর্তাও সাহায্য করেছিলেন তখন। তবে আর্থিক অনটনের কারণে ইয়াসমিনের স্বজনদের খোঁজে আর বেশিদুর এগুতে পারেননি তিনি।

বর্তমানে ইয়াসমিন ৮ম শ্রেণির ছাত্রী। পটিয়া এজে চৌধুরী স্কুলে পড়ে সে। এরই মধ্যে কেটে গেল প্রায় ১০ বছর। এখনো কোনো হদিস মিলেনি তার স্বজনদের।

অনেক বড় মাপের মন আপনার। মহৎ একটি কাজ করেছেন। এখন ইয়াসমিনের সত্যিকারের মা বাবাকে খুঁজে পেলে তাকে ফিরিয়ে দিবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তার মায়ের মতো কয়েক মিনিট কোনো উত্তর ছিল না সাহেদের মুখে। আকাশের দিকে উদাস দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন কিছুক্ষণ। এরপর আবার এ প্রতিবেদকের দিকে তাকিয়ে অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে বললেন, আমি তো তাকে নিজের বোনের চেয়েও বেশি আপন করে নিয়েছি। তার কোনো আশা অপূরণ রাখি নাই। কোনো কষ্ট পেতে দিই নাই। সে আসাতে আমাদের ঘর আলোকিত হয়েছে। মা তার মেয়ের অভাব পূরণ করেছেন। এখন ইচ্ছে তাকে সত্যিকারের একজন নারী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে দেয়া। তবুও তার মা-বাবার কাছে যেতে চাইলে তো আর বেধে রাখতে পারবোনা। ফিরিয়ে দেব তার বাবা-মার কাছে।

সাহেদ বলেন, কিছু পাওয়ার আশায় তো এতগুলো বছর তাকে লালন পালন করিনাই। সে যে আমাকে তার আপন ভাই মনে করে তার অন্তরে স্থান দিয়েছে এটাই তো পাওনা। আর একটি অসহায় শিশুকে এত বছর নিজের কাছে আগলে রেখে সত্যিকারের অভিভাবকের কাছে ফিরিয়ে দিতে পারাটাই তো বড় পাওনা। তবে যারা আমাকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন তাদের সকলের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই। বিশেষ করে টি কে গ্রুপের জামান সাহেবের কাছে।-জাগো নিউজ
২৬ আগস্ট, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/শান্ত/মো:শাই

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে