শুক্রবার, ০৯ ডিসেম্বর, ২০১৬, ০৮:৫১:৪৪

ছাত্রলীগের দুগ্রুপে ব্যাপক সংঘর্ষ, আহত ২০

ছাত্রলীগের দুগ্রুপে ব্যাপক সংঘর্ষ, আহত ২০

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাটল ট্রেনের সিটে বসাকে কেন্দ্র করে শাহ জালাল ও আমানত হলের সামনে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অনুসারীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে বিশ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ জালাল হলের সামনে বৃহস্পতিবার রাত দশটার দিকে ওই দুইপক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়।

সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে চারজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়াও বাকি ১৬ জনকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

আহতদের মধ্যে ইতিহাস বিভাগের ১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের মোঃ তৌহিদুল ইসলাম, নৃবিজ্ঞান বিভাগের  ১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের সৌরভ সিনহা, একই শিক্ষাবর্ষের রাজনীতি বিজ্ঞান শেখ আহমেদ, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের ১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের তুষার আহমেদকে গুরুতর অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এছাড়াও লোকপ্রশাসন বিভাগের ১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের মোঃ ইমরান, একই শিক্ষাবর্ষের বাংলা বিভাগের  সুর্বণ ত্রিপুরা, ১০-১১ শিক্ষাবর্ষের শাখা ছাত্রলীগের উপ-আপ্যয়ন বিষয়ক সম্পাদক  শাওন দাশ গুপ্ত, যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক বায়োজিদ সজল, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর জীবনসহ আরো ১১ জনকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

এদের সবাই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম ফজলে রাব্বি সুজনের অনুসারী।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর টিপুর অনুসারী পাঁচজন আহত হয়েছে বলে দাবি করেছেন সিনিয়র সহ সভাপতি মনছুর আলম। তবে দোষীদের সনাক্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি। যদিও এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায় নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়গামী সন্ধ্যা সাড়ে আটটার ট্রেনে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী তৌহিদুল ইসলামের সাথে কথা কাটাকাটি হয় সভাপতি পক্ষের এক কর্মীর। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে চলন্ত শাটল ট্রেনে তৌহিদুলকে মারধর করে সভাপতি আলমগীর টিপুর অনুসারীরা। পরে রাত সাড়ে নয়টার দিকে ট্রেন ক্যাম্পাসে পৌঁছলে সভাপতি পক্ষের অনুসারীরা বেধরক মেরে আহত করে তৌহিদকে। এ ঘটনা জানাজানি হলে শাহ জালাল  ও আমানত হলের সামনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়ায়।

চবি মেডিকেলের কর্তব্যরত চিকিৎসক ড. শুভাশীষ চৌধুরী শুভ জানান, ‘দশ জনকে গুরুতর অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে তৌহিদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। অনন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’

সভাপতি আলমগীর টিপু বলেন,‘সিনিয়র জুনিয়র কর্মীদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি থেকেই এ ঘটনা ঘটে। আলোচনার মাধ্যমে আমরা বিষয়টি সমাধান করেছি।’

সাধারণ সম্পাদক এইচ এম ফজলে রাব্বি সুজনের অনুসারী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক বায়েজিদ আহমেদ সজল বলেন, ‘ছাত্রলীগের কিছু অতি উৎসাহী কর্মীর উশৃঙ্খলতায় মারামারি সূত্রপাত। এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে’।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মোকাদ্দেস মিয়া বলেন, ‘সিনিয়র জুনিয়রদের ভুল বুঝাবুঝি থেকে সংঘর্ষের সূত্রপাত। পুলিশ প্রশাসনের অবস্থানে বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আছে।’

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি প্রক্টর লিটন মিত্র জানান, ‘ছাত্রলীগের দুপক্ষের সংঘর্ষের পর বর্তমান পরিস্থিতি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। উভয় পক্ষের ছাত্ররা হলে ফিরে গেছে’।
০৯ ডিসেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে