চট্টগ্রাম: স্ত্রীকে ওড়না পেচিয়ে হত্যার পর লাশ নিয়ে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে শ্বশুর বাড়িতে হাজির হয়েছে হত্যাকারী স্বামী। সংসারে বনাবনি না হওয়ায় স্ত্রীকে হত্যার বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে ঘটনাটি স্বাভাবিক মৃত্যুর রুপ দিতে অভিনব কৌশলে চট্টগ্রাম থেকে লাশ নিয়ে নাইক্ষ্যংছড়িতে শশুড় বাড়িতে হাজির হয়েছিলেন স্বামী মোহাম্মদ ছৈয়দ (৩০)।
পুলিশ ও পরিবার সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রামের আমানত শাহ কলৌনির ভাড়া বাসায় গলায় ওড়না পেচিয়ে ফাঁস লাগিয়ে স্ত্রী মালেকা বেগম’কে (২৫) হত্যা করে স্বামী মোহাম্মদ ছৈয়দ (৩০)। মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ৮ মিনিট ঝুলিয়ে রাখা হয়। হত্যার পর ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্ত্রীর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে শ্বশুড় বাড়িতে ফোন করে খবর দেন স্বামী। বুধবার সকালে স্ত্রীর লাশ নিয়ে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের চাকঢালায় শাশুড় বাড়িতে হাজির হয় স্বামী। লাশ দেখে পরিবারের সন্দেহ হলে পুলিশকে খবর দেন নিহত গৃহবধূর পরিবার।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্বামী মোহাম্মদ ছৈয়দ (৩০) এবং তার ছোটবোন ছেনোয়ারা বেগমকে (২৭) আটক করে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করে। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে স্বামী স্ত্রীকে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার এসআই নুরুল আমিন জানান, জিজ্ঞাসাবাদে স্বামী মো: ছৈয়দ স্ত্রীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার ঘটনা স্বীকার করেছেন।
হত্যাকারী স্বামীর স্বীকারোক্তী মতে, সংসারে বনিবনা না হওয়ায় গত মঙ্গলবার দুপুরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করা হয় স্ত্রী মালেকা বেগমকে। ৮ মিনিট ওড়না পেচানো অবস্থায় রেখে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।
হত্যার ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা সাজিয়ে শ্বশুড় বাড়িতে ফোন করে। পরেরদিন শ্বশুড় বাড়িতে লাশ নিয়ে আসেন। লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বান্দরবান হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহতের বাবা বশির আহমদ বলেন, পাঁচ বছর আগে আশরাফ মিয়া পাড়ার বাসিন্দা ঠান্ডা মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ ছৈয়দের সঙ্গে বিয়ে দেয় হয় মেয়ে মালেকার। তিন বছর আগে চাকুরীর উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম চলে যায় তারা। সেখানে বাসা ভাড়া নিয়ে সুখের সংসার করছিল তারা স্বামী-স্ত্রী। কিন্তু মঙ্গলবার জামাই মোবাইল করে মেয়ে ষ্ট্রোক করে মারা গেছে। পলিথিন মোড়ানো লাশটি খুলেই গলায় দাগ দেখে সন্দেহ হওয়ায় পুলিশকে খবর দিয়ে হত্যার বিষয়টি বেড়িয়ে আসে। আমি মেয়ে হত্যাকারীর ফাসি চাই।
১৩ ডিসেম্বর ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/হাবিব/এইচআর