বৃহস্পতিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৯:২৪:৪৩

'মুসলমানদের সন্তানদের নাস্তিক বানানোর চক্রান্ত বরদাশত করা হবে না'

'মুসলমানদের সন্তানদের নাস্তিক বানানোর চক্রান্ত বরদাশত করা হবে না'

নিউজ ডেস্ক: হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচবি আল্লামা হাফেজ জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন, চরম বিতর্কিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক আল কুদস বা জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা দিয়ে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ক্রুসেড ঘোষণা করেছেন। এই স্বীকৃতির ঘোষণা মুসলমানরা মানে না। ট্রাম্প মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। ইসরাইলের স্বার্থে ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মুসলিম অধিবাসীদের স্বাধীনতার স্বপ্নকে ভূলুণ্ঠিত করেছে। তিনি বলেন, ইসলামের প্রথম কেবলা বায়তুল মোকাদ্দাসকে ইহুদিবাদী ইসরাইলের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য প্রতিদিন ফিলিস্তিনের মুসলমানরা রক্ত দিচ্ছে। নারী, শিশু যুবকরা শহীদ হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের বিরুদ্ধে ক্রুসেড চলছে, এহেন পরিস্থিতিতে মুসলিম উম্মাহর ঐক্যবদ্ধ হওয়া সময়ের দাবি।

বৃহস্পতিবার হাটহাজারী পার্বতী উচ্চ বিদ্যালয় ময়দানে হাটহাজারীর ঐতিহ্যবাহী দীনি ও সেবামূলক সংগঠন আল আমিন সংস্থার তিন দিনব্যাপী তাফসীরুল কুরআন মাহফিলের দ্বিতীয় দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত তাফসির মাহফিলে বিশেষ অতিথির আলোচনা পেশ করেন মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, মাওলানা শরীফ মুহাম্মাদ, মাওলানা ফরীদ উদ্দীন আল মোবারক, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা হাসান জামীল, মাওলানা শুয়াইব, মাওলানা মুহাম্মাদ, মাওলানা আবু আহমদ, মাওলানা আব্দুচ্ছমী, মুফতী রাফি বিন মুনীর, মাওলানা নাজির আহমদ প্রমুখ।

আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী আরো বলেন, আজ রোহিঙ্গা মুসলিমরা নিজ জন্মভূমিতে অধিকারহারা। তারা নিজের আবাসভূমিতে নিষ্ঠুর বর্বরতম নির্যাতনের শিকার। উগ্রজাতীয়তাবাদ আর ক্ষমতালিপ্সা মানুষের পাশবিকতাকে কতটা উসকে দিতে পারে, তারই বাস্তবচিত্র আরাকানের অসহায় মানুষের আর্তচিৎকার। উগ্রসাম্প্রদায়িকতা মানুষকে যে পশুতে পরিণত করে তার নিকৃষ্টতম উদাহরণ হলো মিয়ানমারের খুনি সুচী সরকার। রোহিঙ্গারা মায়ানমারের সামরিক বাহিনী ও বৌদ্ধ সন্ত্রাসীদের অমানবিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এদের ঈমান, আকীদা হেফাজত করা, মানবিক সাহায্য করা, মানবাধিকার রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে মুসলমানদের ধর্মবিশ্বাস, মূল্যবোধ এবং নীতি-নৈতিকতাকে মুছে ফেলার লক্ষ্যেই কুরআনের শিক্ষা থেকে মুসলিম সন্তানদের দূরে রাখার চক্রান্ত করা হচ্ছে। শিক্ষানীতি ধর্মহীন করা হয়েছে। জেনারেল শিক্ষা থেকে ইসলামী ভাবধারা তুলে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ঔপনিবেশিক সনাতনী আচার, অর্চনা, উৎসব ও উদযাপনকে সংস্কৃতি চর্চার নামে মুসলমানদের ঘরে ঢুকিয়ে দেয় হচ্ছে।

ইসলামবিদ্বেষী গোষ্ঠীরা দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের সন্তানদের নাস্তিক বানানোর ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ইসলামকে মুছে ফেলার কাজ করছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে নাস্তিক্যবাদী ও হিন্দুত্ববাদী চেতনা নিয়ে মানসিকভাবে গড়ে উঠে সেজন্য পাঠ্যপুস্তক পরিবর্তন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, মুসলমানদের সন্তানদের নাস্তিক বানানোর চক্রান্ত বরদাশত করা হবে না।

তিনি বলেন, দুঃখজনকভাবে বলতে হয় শিক্ষা ব্যবস্থায় আল্লাহর কিতাব কুরআনের শিক্ষা না থাকার কারণে সরকারি অর্থে পরিচালিত কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় এবং ‘আধুনিক’ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এমন সকল ঘৃণিত অপকর্মের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে যা বলার ভাষা আমাদের নেই। সুদ, ঘুষ, হত্যা-গুম-খুন-সন্ত্রাস-দুর্নীতি, নারী নির্যাতন, রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠন আজ মহামারিতে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, দেশে ঘুষ, দুর্নীতির যে সয়লাব চলছে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের মাধ্যমে তা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

তিন দিনব্যাপী মাহফিলের সমাপনী দিবসে শুক্রবার বয়ান করবেন মুফতী ফয়জুল্লাহ, মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা খালিদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী, মাওলানা হাফিজুর রহমান সিদ্দিকী কুয়াকাটা, মুফতী সোলায়মান, মুফতী রাশেদ, মুফতী আবু সাঈদ, মাওলানা আনাস মাদানী, মাওলানা শেখ আহমদ, মাওলানা ইসমাঈল খান মেখলী, মাওলানা আব্দুল বাসেত খান।
এমটিনিউজ২৪.কম/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে