বৃহস্পতিবার, ০৩ মে, ২০১৮, ১০:০৭:৫৬

অবশেষে পরিচয় মিলেছে পতেঙ্গা থেকে উদ্ধার হওয়া মৃত তরুণীর

অবশেষে পরিচয় মিলেছে পতেঙ্গা থেকে উদ্ধার হওয়া মৃত তরুণীর

চট্রগ্রাম থেকে : স্কুলছাত্রী তাসফিয়া আমিনের (১৬) রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় বন্ধু আদনান মির্জাকে (১৬) আটক করেছে পুলিশ। বুধবার (০২ মে) সন্ধ্যায় নগরের খুলশী থানার জালালবাদ হাউজিং সোসাইটি এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। অবশেষে পরিচয় মিলেছে পতেঙ্গা থেকে উদ্ধার হওয়া মৃত তরুণীর।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নগর পুলিশের কর্ণফুলী জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মো. জাহেদুল ইসলাম।

তাসফিয়া নগরীর সানসাইন গ্রামার স্কুলের নবম শ্রেণিতে পড়ত। তার বাবা মো. আমিন উদ্দিন পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তারা নগরের ওআর নিজাম রোডের রোজ গার্ডেন নামের একটি বাসার পাঁচতলায় ভাড়া থাকতেন। আদনান মির্জা নগরের দক্ষিণ খুলশী এলাকায় থাকে।  সেও সানসাইন গ্রামার স্কুলের শিক্ষার্থী।

এর আগে বুধবার (০২ মে) সকালে নগরের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের ১৮ নম্বর ঘাটে পাথরের ওপর থেকে তাসফিয়া আমিনের মরদেহ উদ্ধার করে পতেঙ্গা থানা পুলিশ।

স্কুলছাত্রী তাসফিয়ার মৃত্যুর ঘটনাটি রহস্যজনক বলে ধারণা করা হচ্ছে জানিয়ে পুলিশের এসি মো. জাহেদুল ইসলাম আরও বলেন, ‘মঙ্গলবার বিকেলের দিকে বাসায় কাউকে না জানিয়ে তাসফিয়া বাসা থেকে বেরিয়ে চায়না গ্রিল নামে একটা রেস্টুরেন্টে বন্ধু আদনানের সাথে দেখা করে। পরে মায়ের ফোন পেয়ে দ্রুত বাসায় ফেরার জন্য তাসফিয়াকে সিএনজি অটোরিকশায় তুলে দেন আদনান। কিন্তু বাবা-মা’র ভয়ে তাসফিয়া বাসায় ফেরেনি বলে ধারণা করা হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘তাসফিয়া রাত নয়টার পরও বাসায় না ফেরায়, তার বাবা-মা দুঃশ্চিন্তায় পড়ে যান। পরে আবারও আদনানকে ফোন করে তাসফিয়ার খবর জানতে চান। তাসফিয়াকে সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে বাসায় পাঠিয়ে দেওয়ার কথা জানায় আদনান।’

অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে পুলিশের এসি মো. জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধারের পর আমরা স্থানীয়দের সাথে কথা বলেছি। স্থানীয়রা, তাসফিয়াকে মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের ১৮ নম্বর ঘাট এলাকায় একা বসে থাকতে দেখেছেন। পরদিন

সকালে ওই মেয়েটির মরদেহ পাওয়া গেছে। ‘হত্যা নাকি আত্মহত্যা’ বিষয়টি রহস্যজনক বলে ধারণা করা হচ্ছে।’ পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকা থেকে থেকে উদ্ধার হওয়া মৃত তরুণীর পরিচয় মিলেছে।

তার নাম তাসফিয়া। প্রেমিক আদনান মির্জাই সৈকতে নিয়ে গিয়েছিল তাকে। তিন বোন এক ভাইয়ের মধ্যে তাসফিয়া সকলের বড়। সে নগরীর সানশাইন স্কুল এন্ড কলেজের ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী।

তাসফিয়ার চাচা জানান, কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার ডেইলপাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ আমিনের পরিবার থাকেন ও আর নিজাম আবাসিক এলাকার ৩নং সড়কের কেআর এস বিল্ডিংয়ে থাকেন। কিছু দিন আগে ফেইসবুকে তাসফিয়ার সাথে আদনান মির্জা নামে এক ছেলের পরিচয় হয়। তার পরিবার এ

খবর জানতে পেরে তাসফিয়ার মাধ্যমে আদনানকে তাদের বাসায় ডেকে আনে।আদনানকে বাসায় আনার পর তাসফিয়ার বাবা আদনানকে তার বাবাকে তাদের বাসায় ডেকে আনতে বলে। না হয় আদনানকে ছাড়া হবেনা বলে জানায়।

আদনান ফোন করে স্থানীয় কিছু ছেলেপেলে এনে তাসফিয়ার বাবাকে হুমকি ধামকি দিয়ে তাসফিয়ার বাসা থেকে চলে আসে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাসফিয়াকে ডেকে নেয় আদনান । তাসফিয়াকে নিয়ে যায় নেভালে। কবে পতেঙ্গা থানার ওসি তদন্তের পর সব জানাতে পারবেন বলে জানান।

উল্লেখ্য, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকা থেকে বুধবার (০২ মে) সকাল ৯টার দিকে অজ্ঞাত এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পতেঙ্গা থানার এসআই মোহাম্মদ আনোয়ার লাশ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘এখনো লাশের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

তরুণীটি কীভাবে নিহত হয়েছেন, এ ব্যাপারেও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। লাশের মুখমণ্ডলে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে শরীরের আর কোথাও কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।’ময়নাতদন্ত রিপোর্টের পর বিস্তারিত জানা যাবে বলেও জানান তিনি।

এমটিনিউজ২৪/এম.জে/ এস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে