চট্টগ্রাম থেকে : চট্টগ্রামে নগরের স্কুলছাত্রী তাসফিয়া আমিনের মৃত্যু রহস্য উদঘাটনের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে তদন্তকারী পুলিশ সদস্যরা।
ইতোমধ্যে ঘটনার আরও একাধিক সিসি টিভির ফুটেজ হাতে পেয়েছে তারা। সেগুলো যাচাই-বাছাইয়ের পর বেশ কিছু তথ্য-উপাত্ত বেরিয়ে এসেছে। এখন শুরু অপেক্ষা ভিসেরা রিপোর্টের। এটি পেলেই তাসফিয়া আত্মহত্যা করেছে, নাকি হত্যার শিকার তার রহস্য জানা যাবে বলে আশাবাদী পুলিশ।
মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে নতুন করে ওই রেস্টুরেন্টের সিসি টিভির একাধিক ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। এছাড়া নগরের সন্দেহভাজন বেশ কিছু এলাকার সিসি টিভির ফুটেজও পুলিশের হাতে এসেছে। সংগ্রহ করা হয়েছে তাসফিয়াদের বাসার সিসি টিভির ফুটেজ। তবে পুলিশ এখন মোটামুটি নিশ্চিত, নগরীর চায়না গ্রিল রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে তাসপিয়া আর বাসায় ফিরে আসেনি।
নগরীর গোলপাহাড় মোড়ের চায়না গ্রিল রেস্টুরেন্টের সিসি টিভির ফুটেজে দেখা গেছে, ওইদিন সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে তাসফিয়া ও তার বন্ধু আদনান মির্জা সেখানে প্রবেশ করে। এরপর সন্ধ্যা ছয়টা ৩৭ মিনিটের দিকে তারা একসঙ্গে বেরিয়ে যায়। এরপর রেস্টুরেন্টের সামনে একটি সিএনজি অটোরিকশায় তাসফিয়াকে তুলে দিয়ে আদনান আরেকটি সিএনজি অটোরিকশায় তার পিছু নেয়।
অন্যদিকে সন্ধ্যা ছয়টা ৪৮ মিনিটে ওআর নিজাম রোডে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সিসি টিভি ফুটেজে দেখা যায়, তাসফিয়ার বাসার গলির খানিক সামনে ধীরগতিতে চলছিল সিএনজি অটোরিকশাটি। বাসায় যেতে হলে ওয়েলফুড রেস্টুরেন্টের সামনের পথ পাড়ি দিয়ে মেডিকেল সেন্টারের গলি দিয়ে ঢোকার কথা। কিন্তু, সে পথে যায়নি তাসফিয়াকে বহনকারী সিএনজি অটোরিকশাটি। একই সিএনজি অটোরিকশাতে রাত আটটা ১০ মিনিটে তাসফিয়াকে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতপাড়ে দেখা গেছে।
তদন্তকারীরা দাবি করছেন যে, তাসফিয়ার কাছে কোনো টাকা ছিল না। তাহলে সে সিএনজি অটোরিকশার ভাড়া কিভাবে দিল? পুলিশের ধারণা, চায়না গ্রিল রেস্টুরেন্টে অবস্থানকালে তাসফিয়ার আঙুলে যে একটি সোনার আংটি দেখা গেছে সেটি তার মরদেহ উদ্ধারের সময় পাওয়া যায়নি। এমনকি সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনটিও পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে সিএমপির সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার জানান, তদন্তে অনেক অগ্রগতি হয়েছে। আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে। ঢাকা থেকে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই সব কিছু জানানো হবে।
উল্লেখ্য, গত গত ১ মে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ ছিল স্কুলছাত্রী তাসফিয়া আমিন। ২ মে স্থানীয়রা পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে একটি লাশ দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ সৈকত এলাকার ১৮ নম্বর ব্রিজের উত্তর পাশে পাথরের ওপর উপুড় হয়ে পড়ে থাকা অজ্ঞাত লাশটি উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় ৩ মে তাসফিয়ার বাবা মোহাম্মদ আমিন পতেঙ্গা থানায় তাসফিয়ার বন্ধু আদনান মির্জাকে প্রধান আসামি করে ৬ জনের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এমটিনিউজ২৪/এম,জে/ এস