চট্টগ্রাম থেকে : চট্টগ্রামে সানসাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণীর ছাত্রী তাসফিয়া আমিন হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে এখনও পর্যন্ত কোন অগ্রগকি হয়নি।
এদিকে এদিকে তাসফিয়াকে বহনকারী অটোরিকশাটির নম্বর এখনো উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। নম্বরটির জন্য সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চীনের একটি প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সেখানেও নম্বরটি উদ্ধার করা যায়নি।
এদিকে তাসফিয়ার মৃত্যুরহস্য উন্মোচন করতে আজ বৃহস্পতিবার তার বন্ধু আদনান মির্জাকে গাজীপুরে সমাজসেবা অধিদপ্তরের কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে তত্ত্বাবধায়কের সামনে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়টি নিশ্চিত করে নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কর্ণফুলী) জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আদনানকে গাজীপুরের কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে বৃহস্পতিবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এরপর প্রাপ্ত তথ্য আদালতকে প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানানো হবে।’
তাসফিয়াকে বহনকারী অটোরিকশার নম্বর উদ্ধারের বিষয়ে জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘অটোরিকশাটি শনাক্ত করা হয়েছে। কিন্তু অটোরিকশার পেছনে অন্য গাড়ি থাকায় সেই গাড়ির হেডলাইটের আলো গিয়ে পড়েছে নম্বর প্লেটে। এ কারণে নম্বর উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না। এ কাজে বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতা নিতে ফুটেজ চীনের একটি প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু সেখান থেকেও আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়নি।’
তিনি বলেন, ‘নম্বর উদ্ধার হলে সেই নম্বরের সূত্র ধরে আমরা অটোরিকশাচালককে জিজ্ঞাসাবাদের সুযোগ পেতাম। তাহলে অনেক প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যেত। তবে নম্বর উদ্ধারে বিকল্প কোনো পথ আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
এদিকে পুলিশ কর্মকতারা বলছেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে আসার পর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে যে তাসফিয়া আত্মহত্যা করেছে নাকি পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২ মে নগরীর পতেঙ্গা সৈকত এলাকা থেকে সানসাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী তাসফিয়া আমিনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের পরিবারের অভিযোগ স্কুল ছাত্রীর ‘প্রেমিক’ নির্যাতনের পর হত্যা করে।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা মোহাম্মদ আমিন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় কথিত প্রেমিক আদনান মির্জাসহ ছয় জনকে আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে মোহাম্মদ আমিন উল্লেখ করেন, আদনান মির্জার সঙ্গে তাসফিয়ার বন্ধুত্ব হয়েছে দুই-তিন মাস আগে। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়েছে।
তাই আমার মেয়ে তাসফিয়ার প্রতি আক্রোশের বশবর্তী হয়ে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে আদনান মির্জা মামলার অপর আসামিদের সহায়তায় নেভাল বিচ এলাকায় নিয়ে তাকে অজ্ঞাত আসামিদের পরস্পর যোগসাজশে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।
মামলায় পুলিশ আদনানকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন জানানো হয়। গত রবিবার রিমান্ড আবেদনের ওপর শুনানি হয় চট্টগ্রামের শিশু আদালতের বিচারক পঞ্চম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জান্নাতুল ফেরদৌসের আদালতে। শুনানির শেষ পর্যায়ে বিচারক আদনানকে খাস কামরায় ডেকে নেন। পরে আদালত গাজীপুরের কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।
এমটিনিউজ২৪/এম.জে/ এস