চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে স্কুলছাত্রী তাসফিয়া আমিন হত্যা মামলার নতুন মোড় নিয়েছে। তাসফিয়ার ময়নাতদন্তের ‘ভিসেরা প্রতিবেদন’ আসার পর চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে নতুন এই তথ্য এলে। গত সোমবার প্রতিবেদনটি আসে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে।
বিষক্রিয়া বা অ্যালকোহলে মারা যায়নি স্কুলছাত্রী তাসপিয়া আমিন। তার মৃত্যু হয়েছে অন্য কিছুতে। আর সেই মৃত্যু রহস্য জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের জন্য।
ভিসেরা পরীক্ষায় ফলাফল ‘নেগেটিভ’। অর্থাৎ বিষ বা অ্যালকোহল জাতীয় কোনো কিছুর ক্রিয়ায় তাসপিয়ার মৃত্যু হয়নি বলে জানান মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা। তবে তার মৃত্যু হয়েছে অন্য কোনো কারণে। সেই কারণ বা রহস্য জানার জন্য এখন প্রয়োজন ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন।
তবে কবে নাগাদ এই প্রতিবেদন আসবে সেই বিষয়ে কোনো কিছু জানা নেই বলে জানালেন তাসপিয়া হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিএমপি পতেঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন।
এ বিষয়ে এসআই আনোয়ার হোসেন বলেন, ভিসেরা প্রতিবেদন ঢাকা থেকে সরাসরি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে এসে জমা হয়েছে। বিস্তারিত ওই প্রতিবেদনই আছে। কিছু জানতে চাইলে আরও অপেক্ষা করতে হবে।
এর আগে তাসফিয়ার ‘ভিসেরা রিপোর্ট’ ঢাকার মহাখালী ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়। এই রিপোর্ট আসার পর আমাদের তদন্তের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে তার পর মৃত্যুর রহস্য উন্মোচন বলে জানিয়েছিলেন, নগর পুলিশের কর্ণফুলী জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মো. জাহেদুল ইসলাম।
এদিকে তাসফিয়া হত্যাকাণ্ডের এক মাসের বেশি সময় পার হলেও কোন দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি চাঞ্চল্যকার এই হত্যার রহস্য।
মামলার বাদী ও নিহত তাসপিয়ার বাবা মোহাম্মদ আমিন বলেন, কোনো কারণে হয়তো পুলিশ মামলার তদন্তে সফলতা দেখছে না। তবে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দায়িত্ব দেয়া হয় তাহলে স্বল্প সময়েই সব বেরিয়ে আসবে, আশা করি।
আগামী কয়েক দিনের মধ্যে পিবিআইয়ের তত্ত্বাবধানে তদন্ত চেয়ে আদালতে আবেদন জানাবেন বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ২ মে বুধবার সকাল ৯টার দিকে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকার ১৮ নম্বর ঘাটে পাথরের উপর থেকে সানশাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী তাসফিয়া আমিন (১৬)’র মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় তাসফিয়ার বন্ধু আদনান মির্জা (১৬)’কে আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার সন্ধ্যায় নগরের খুলশী থানার জালালাবাদ হাউজিং সোসাইটি এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। এই ঘটনায় তাসফিয়া বাবা আদনানসহ ৭ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করনে।
এ মামলার অপর আসামিদের মধ্যে রযেছেন শওকত মিরাজ, আশেকানে আউলিয়া ডিগ্রি কলেজের এইচএসসির ছাত্র ইমতিয়াজ সুলতান ইকরাম, কথিত যুবলীগ নেতা মোহাম্মদ ফিরোজ ও তার সহযোগী সোহায়েল ওরফে সোহেল। এই চার আসামি ঘটনার পর থেকে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে।