চট্টগ্রাম: মাত্র ১৫ দিন আগে দুবাই থেকে দেশে ফিরেছিলেন আবুল হাসেম (৪০)। কিন্তু স্ত্রী ও চাচাতো ভাইয়ের পরকীয়ার বলি হয়ে চলে গেছেন পরপারে। স্বামীকে হত্যার কথা আদালতের কাছে স্বীকার করেছেন ঘাতক স্ত্রী রুনা আকতার (২৮)।
রোববার চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রবিউল আলমের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে রুনা আকতার বলেছেন, পরকীয়া প্রেমিক জাহেদের সঙ্গে নতুন ঘর বাঁধার স্বপ্নে স্বামীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন তারা।
রাউজান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইমুল ইসলাম বলেন, ‘রোববার দুই আসামি রুনা ও জাহেদকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদানের জন্য চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির করা হয়েছিলে। দু’জনেই হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। আসামি রুনা আক্তার আদালতকে বলেছেন, শুক্রবার রাতে রুনা তার স্বামী আবুল হাসেমকে গরুর দুধের সঙ্গে দুটি ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ান। হাসেম ঘুমিয়ে পড়ার পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে জাহেদকে ঘরে ডেকে আনেন তিনি।’
রুনা আকতার আদালতকে আরও জানিয়েছেন, এরপর রাত ৩টার দিকে হাসেমের গলায় ওড়না পেঁচিয়ে তিনি ও জাহেদ মিলে টান দেন। এর ৫ থেকে ১০ মিনিট পর হাসেম নিজের ঘরে চলে যান।
স্বামীকে হত্যার কারণ হিসেবে রুনা আদালতকে জানিয়েছেন, জাহেদ প্রতিশ্রতি দিয়েছিলে হাসেমকে মেরে ফেললে সে বিয়ে করবে। তাই নতুন করে বিয়ে করে সংসার করার আশায় হাশেমকে হত্যা করা হয়।
এসআই সাইমুল বলেন, ‘দেবর জাহেদের সঙ্গে নিহতের স্ত্রী রুনার পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। গত ১৫ দিন আগে আবুল হাসেম দুবাই থেকে আসেন। স্বামী আসায় দু’জনের মেলামেশায় বাধার সৃষ্টি হয়।’
এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল রোববার নিহত আবুল হাসেমের মরদেহ দাফন করা হয়েছে। এর আগে এই ঘটনায় শনিবার রাতে নিহতের ভাই আবুল কাশেম বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় নিহতের স্ত্রী রুনা আকতার ও তার পরকীয়া প্রেমিক জাহেদুল ইসলাম জাহেদকে আসামি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রায় ১৩ বছর আগে নিহত আবুল হাশেমের সঙ্গে ফটিকছড়ি উপজেলার আব্দুল্লাপুর গ্রামের ছগির আহমেদের মেয়ে রুনা আকতারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে আবুল হাসেম দীর্ঘ সময় প্রবাসে কাটিয়ে গত ১৫ দিন আগে দেশে ফিরেছেন। এদিকে আবুল হাসেম প্রবাসে থাকার সময় রুনার সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে নিহতের চাচাতো ভাই জাহেদের। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার পারিবারিকভাবে কথাবার্তাও হয়। আবুল হাসেম বিদেশ থেকে ফেরার পরও বিষয়টি দৃশ্যমান থাকায় তিনি তা মেনে নিতে পারছিলেন না। এ নিয়ে আবুল হাসেমের সঙ্গে তার স্ত্রী রুনার প্রায়ই ঝগড়া হতো।