চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বঙ্গোপসাগরের ফৌজদারহাট থেকে শীতলপুর উপকূলে প্রায় ১০ কিমি দীর্ঘ একটি নতুন চর জেগে উঠেছে। কিছুদিন আগে সীতাকুন্ডু উপকূলে হঠাৎ চর পড়তে শুরু করে। শিপব্রেকিং জোন এলাকায় গড়ে উঠা এই চরের কারণে বেশ কিছুদিন ধরে শিপইয়ার্ডে স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানি ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষত ভাটার সময় চরটি ব-দ্বীপ আকৃতি ধারণ করে এবং জাহাজ প্রবেশের অযোগ্য হয়ে পড়ে।
সংশ্লিষ্টরা বলছে, জেগে ওঠা চর এলাকাটি শিপব্রেকিং জোন। এখানে প্রতিনিয়ত স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানি করা হয়। কিন্তু চরটি জেগে ওঠার পর থেকে এ এলাকার শিপইয়ার্ডগুলোতে আমদানিকৃত স্ক্র্যাপ জাহাজ প্রবেশে দারুণ প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। ফলে নতুন করে কোনো স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানি করতে আগ্রহ হারাচ্ছেন ইয়ার্ড মালিকরা, যা নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে এ শিল্পে।
জেগে ওঠা নতুন এই চরটি নিয়ে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিপব্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দ ও ইয়ার্ড মালিকরা। শনিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এ নিয়ে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে দ্য কপার সিমনি রেস্টুরেন্টে বাংলাদেশ শিপব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসবিআরএ) একটি সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে নতুন জেগে ওঠা চরসংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে আলোচনা হলে সব শিপইয়ার্ড মালিক এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
সভায় শিল্পপতি কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ভাটিয়ারিতে একটি শিপইয়ার্ডে বাহির থেকে কারখানার বিভিন্ন রকম বর্জ্য এনে ফেলা হয়। দীর্ঘদিন ধরে এই বর্জ্য সাগরে পড়ছে। তার ওপর পলি জমে এই চরা সৃষ্টি হয়েছে।
এখন ৮-১০ কিমি এলাকায় চর ছড়িয়ে পড়েছে। ইয়ার্ডে স্ক্র্যাপ জাহাজ আনা যাচ্ছে না। এই শিল্প থেকে বার্ষিক ১২০০ কোটি থেকে দেড় হাজার কোটি টাকা রাজস্ব পায় সরকার। জাহাজ আনা বন্ধ হলে ব্যাপক লোকসানে পড়বে দেশ।
এ বিষয়ে সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তারিকুল আলম জানান, জাহাজভাঙা শিল্প এলাকায় যে চর সৃষ্টি হয়েছে তা ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে অপসারণ না হলে শিল্পটির পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ব্যাহত হবে। বাংলাদেশ শিপব্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএসবিএ) কর্তৃপক্ষ যদি লিখিতভাবে আবেদন করে, তা হলে আমি সরকারের উচ্চপর্যায়ে সমস্যাটি তুলে ধরে সমাধানের চেষ্টা করব।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরের সীতাকুণ্ড উপকূলে হঠাৎ চর পড়তে শুরু করেছে। বিশেষত ভাটার সময় চরটি ব-দ্বীপ আকৃতি ধারণ করে এবং জাহাজ প্রবেশে অযোগ্য হয়ে পড়ে। ইতোমধ্যে ফৌজদারহাট থেকে সোনাইছড়ির শীতলপুর পর্যন্ত এলাকায় বিস্তৃতি লাভ করেছে এ চরটি।