নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রাম-৯ (কোতয়ালী) আসনটি আওয়ামী লীগের জন্য নানা দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। তাই এ আসনে চুলছেঁড়া বিশ্লেষণ করে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এখানে নৌকার কাণ্ডারী করা হয়েছে ব্যারিষ্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে। তরুণ তুর্কি নওফেলের পরিচয় হলো, তিনি চট্টগ্রামের প্রয়াত নেতা এবং টানা ১৭ বছরের সিটি মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর পুত্র। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ আ. লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। দলীয় নেতা- কর্মীরা আশা করছেন, বাবা মহিউদ্দিন চৌধুরীর শূন্যস্থান পূরনের গুরু দায়িত্ব পালনে সক্ষমতা অর্জন করতে হবে নওফেলকে।
মহিউদ্দিন চৌধুরীর সাজানো মাঠে পুত্র নওফেলের রাজনীতির হাতেখড়ি হলেও ইতোমধ্যে নিজস্ব ধারার রাজনৈতিক সংস্কৃতির চর্চা করে যেমনি দৃষ্টি কেড়েছেন চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষের, তেমনি আস্থা অর্জন করেছেন দলের হাই কমান্ডের। যার ফল পেয়েছেন চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ আসনে দলীয় মনোনয়ন লাভ করে। এই আসনে দশম সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়েছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমদ বাবলু। এবার বাবলুকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে কক্সবাজার জেলার একটি আসনে।
মূলত : মহিউদ্দিন চৌধুরীর জীবদ্দশায় রাজনীতিতে আসেন তার পুত্র ব্যারিষ্টার নওফেল। রাজনৈতিক আবহে বেড়ে উঠা এই তরুণ রাজনীতিবিদ ইতোমধ্যে নিজস্ব একটি ধারা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন। পিতা মহিউদ্দিন চৌধুরীকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের একটি পৃথক বলয় সব সময় সক্রিয় ছিলো এবং এখনও আছে। মহিউদ্দিন চৌধুরীকে ঘিরে সক্রিয় থাকা এই বলয়টির এক ধরনের দূরত্ব ছিলো চট্টগ্রাম সিটির বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছিরের সাথে। তবে পিতা মহিউদ্দিন চৌধুরীর রাজনৈতিক বিরোধের উত্তরাধিকার বহন করেননি নওফেল। এমনকি বাবার প্রতিপক্ষের সাথেও জড়াননি কোনও ধরনের বিরোধে।
গত বছরের ডিসেম্বরে মৃত্যুবরণ করা মহিউদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি থাকাকালে বিগত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে চট্টগ্রামে দলীয় মনোনয়ন নেওয়ার জোর চেষ্টা করেছিলেন। তীব্র প্রতিদ্বন্ধীতায় লিপ্ত হন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের সাথে।
শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন পেয়েছিলেন আ জ ম নাছির। তখন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের মহিউদ্দিন গ্রুপ ও আ জ ম নাছির গ্রুপের মধ্যে আবারও কোন্দল মাথাচাড়া দিয়ে উঠার আশংকা দেখা দিয়েছিলো। তবে অনেকে বিশ্বাস মনে করেন মহিউদ্দিন পুত্র নওফেলের তৎপরতায় সেই কোন্দল মাথাচাড়া দিয়ে উঠেনি।
দলের নির্বাচন কমিটির সদস্য হিসেবে আ জ ম নাছিরকে সর্বাত্মক সহায়তা করেছিলেন। এই ভূমিকার কারণে স্থানীয়ভাবে দলীয় নেতা কর্মীদের কাছে এবং কেন্দ্রে হাইকমান্ডের প্রিয়ভাজন হয়ে উঠেন। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত হন।
মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর পর চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগে তার অনুসারীরা জড়ো হয়েছেন নওফেলের পিছনে। এসব নেতা-কর্মীদের সুখে-দুখে অভিভাবকের মত আগলে রাখছেন নওফেল। চট্টগ্রামের রাজনীতির প্রবাদ পুরুষ দূর্দান্ত প্রতাপশালী মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছায়া দেখা যাচ্ছে নওফেলের মধ্যে। শুধু তাই নয়, বরং অন্তঃকোন্দলের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে সবার সাথে সদ্ভাব বজায় রাখার চেষ্টা করছেন তরুণ প্রজম্মের এই রাজনৈতিক উত্তরাধিকার।