চট্টগ্রাম: তরুণ চিকিৎসক মোস্তফা মোরশেদ আকাশের আত্মহত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ এনে তার স্ত্রী মিতু, শ্বশুর, শাশুড়িসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানায় এ মামলা করে মোস্তফা মোরশেদের মা জোবেদা খানম।
চান্দগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জোবাইর সৈয়দ জানান, ৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরো তিন থেকে চারজনকে আসামি করে মোরশেদের মা জোবেদা খানম দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারায় এ মামলা দায়ের করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে চট্টগ্রাম নগরের নন্দন কানন এলাকার এক বাসা থেকে মোরশেদের স্ত্রী তানজিলাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে তানজিলাকে আদালতে নিয়ে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, মোস্তফা মোরশেদের স্ত্রী চিকিৎসক তানজিলা হক চৌধুরী মিতু, শ্বশুর আনিসুল হক চৌধুরী, শাশুড়ি শামীম শেলী, শ্যালিকা সানজিলা হক চৌধুরী, স্ত্রীর বন্ধু মাহবুবুল হক ও যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ভারতীয় নাগরিক প্যাটেলকে এ মামলার আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে আরো বলা হয়, আসামিরা মানসিক যন্ত্রণা ও উত্তেজনা সৃষ্টি করায় আত্মনিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মৃত্যুমুখে পড়েন মোস্তফা মোরশেদ আকাশ।
২০০৯ সালে তানজিলার সঙ্গে আকাশের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৬ সালে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশে আসা যাওয়ার মধ্যে ছিলেন তানজিলা। বিয়ের পূর্বে ও পরে তিনি আসামি প্যাটেল ও মাহাবুবের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখেন। তানজিলাকে বারবার শোধরানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়ে অন্য আসামিদের চাপে পড়ে আত্মহত্যার করেন মোস্তফা মোরশেদ।
আকাশের স্ত্রী তানজিলা হক চৌধুরী মিতুকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (উত্তর) মিজানুর রহমান বলেছেন, আত্মহত্যার ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগে ওই দম্পতির মধ্যে হাতাহাতিও হয়েছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মিতু কিছু কিছু বিষয় আমাদের কাছে স্বীকার করেছেন। আবার কিছু বিষয় এড়িয়ে গেছেন।
চিকিৎসক আকাশ আত্মহত্যার আগে ফেসবুকে স্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্ক’ ও ‘প্রতারণার’ অভিযোগ করে যান। এর ‘প্রমাণ’ হিসেবে মিতুর সঙ্গে 'প্রেমিক'দের বেশ কিছু ছবি ও মেসেজের স্ক্রিনশট ফেসবুকে আপলোড করেন।