নিউজ ডেস্ক: তরুণ চিকিৎসক মোস্তফা মোরশেদ আকাশ আত্মহত্যার আগে স্ত্রী ডা. তানজিলা হক চৌধুরী মিতুর পরকীয়া সম্পর্কে নিজের ফেসবুক ওয়ালে লিখে গেছেন। প্রমাণ হিসেবে দিয়েছেন অনৈতিক সম্পর্কের ছবি। ঘটনার পর আকাশের মা জোবাইদা খানম ছেলের আত্মহত্যার প্ররোচনায় অভিযোগ এনে মিতু ও তার বাবা-মা, বোন এবং দুই ছেলে বন্ধুর বিরুদ্ধে মামলাও করেছেন।
সেই মামলায় চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও থানায় আদালতের দেয়া ৩ দিনের রিমান্ডে মিতুর জিজ্ঞাসাবাদও চলছে। আর এ সময়ে মুখ খুললেন ডা. আকাশের ছোট ভাই ডা. মঞ্জুর মোরশেদ অসীম। বৃহস্পতিবার সকালে দৈনিক মানবজমিনের সঙ্গে একান্ত আলাপে মঞ্জুর মোরশেদ অসীম মিতু ও তার পরিবারের সদস্যদের উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন, কাবিননামার টাকা আদায়ের জন্য আকাশকে ডিভোর্স না দেয়া, মিতুর ভাইয়ের অসুস্থতাকে পুঁজি করে ৮০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ আনেন।
ডা. অসীম বলেন, মিতুর সঙ্গে যখন ভাইয়ের বনিবনা হচ্ছিল না, তখন ভাই অনেকবার মিতুকে বলেছিল ডিভোর্স দেয়ার জন্য। কিন্তু কাবিননামার টাকা উসুল করার জন্য মিতু ও তার পরিবার ভাইকে ডিভোর্স দিচ্ছিল না।
এগুলো নিয়ে আকাশ ভাই মানসিক যন্ত্রণায় ছিলেন।
কিন্তু কখনো কাউকে বুঝতে দেননি। মিতুর মা ও বোনের বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ করেন অসীম।
মিতুর মৃত ভাই আরমানের কথা উল্লেখ করে অসীম বলেন, আরমানের ক্যানসার হওয়ার পর তারা নিজেদের থেকে কোনো টাকা-পয়সা খরচ করেনি। উল্টো আমার ভাইয়ের কাছ থেকে টাকা নেয়। আমিও নিজের কলেজ ক্যামপাস থেকে ৭ লাখ টাকা সংগ্রহ করে দিই। সবমিলিয়ে ৮০ লাখ টাকা ওঠে তখন। কিন্তু ওই টাকা আরমানের চিকিৎসায় খরচ না করে তারা নিজেদের বিলাসিতা চালাতে থাকে। পরে আমি মিতুকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে সে আমাকে বলে, টাকা চিকিৎসায় খরচ করেছি। কিন্তু কোনো হিসাব তারা দিতে পারেনি।
মঙ্গলবার আকাশের কুলখানি আয়োজনে চন্দনাইশের বাড়িতে গিয়েছিলেন তার পুরো পরিবারের সদস্যরা। বুধবার তারা শহরের বাসায় ফেরেন। কিন্তু ঘরে এসেই ছেলের স্মৃতিতে কাতর হয়ে পড়েন আকাশের মা। বড় ছেলে আকাশকে হারিয়ে তার মা জোবাইদা খানম নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। সারাদিন শুধু কাঁদছেন আর মনমরা হয়ে বসে থাকেন। কথাও বলছেন না কারো সঙ্গে। ছেলের ছবির অ্যালবাম দেখে শুধু বলছেন, আমার সব শেষ, কথা বলে কী হবে।
অশ্রুসজল চোখে অসীম বলেন, আমরা কখনোই ভাবিনি এমন একটা ঘটনা ঘটবে। ভাই-ভাবিকে সবাই লাভবার্ড বলতো। ভাইকে আমরা সবাই বউপাগল বলতাম। স্ত্রীকে সে অনেক বেশি ভালোবাসতো। স্ত্রীর সুখের জন্য সব ধরনের ত্যাগ স্বীকার করতো। কিন্তু সেই স্ত্রীর জন্যই তাকে শেষ পর্যন্ত প্রাণ দিতে হলো।
মিতু সমপর্কে অসীম বলেন, আমার ভাই তাকে অনেক ভালোবাসলেও মিতুর কোনো ইমোশন ছিল না আমার ভাইয়ের প্রতি। বিয়ের আগে বিভিন্নজনের সঙ্গে তার সমপর্ক ছিল এটা জানার পরও ভাই তাকে বিয়ে করেছিল। কিন্তু বিয়ের পরও সে বিভিন্ন জনের সঙ্গে অনৈতিক সমপর্কে জড়িয়ে পড়ে।-মানবজমিন