চট্টগ্রাম: বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সের একটি উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টার পর তা ভেস্তে গেছে; অভিযানে নিহত হয়েছেন ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী ব্যক্তিও।রোববার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার পথে এ ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যা ৬টার পর ওই জিম্মি সংকটের অবসান হয়।
বিজি-১৪৭ ফ্লাইটটিতে ১৩৪ জন যাত্রী ও ১৪ জন পাইলট-ক্রু ছিলেন। তারা সবাই অক্ষত রয়েছেন। কি উদ্দেশে সে উড়োজাহাজটি ছিনাইয়ের চেষ্টা করেছিল তা জানা যায়নি।
উড়োজাহাজটিতে থাকা কয়েকজন যাত্রী জানান, ওই যুবকের আনুমানিক বয়স হবে ২৪ থেকে ২৬ বছর। বিমানে তার সাথে একটি ব্যাগ ছিল। বিমানটি উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর পরই সে পেছন থেকে দৌঁড়ে ক্যাপ্টেইনের রুমে গিয়ে বিমানটি জিম্মি করার চেষ্টা করে। এসময় বিমানের ভেতরে গুলির শব্দও শোনা গিয়েছিল।
তারা বলেন, এসময় যুবককে বলতে শোনা যায় আমি প্রধান মন্ত্রীর সাথে কথা বলতে চাই। গুলির শব্দ পেয়েছি, কেউ কেউ বলছিল বোমা বিস্ফোরণ হচ্ছে। অনেকে মনে করেছিল বিমানে আগুন ধরেছে। সেসময় সবাই দোয়া পড়ছিল। চিৎকার ও কান্নাকাটি করছিল। বিমানটি অনেকটা বাঁকা, উঁচু-নিচু করছিল। এয়ারহোস্টেসরা সিট বেল্ট বেঁধে যাত্রীদের আসনে বসে পড়েছিলেন। যাত্রীদের অনেকই লাইফ জ্যাকেট পরে ফেলেছিলেন। এভাবে অনেকক্ষণ থাকার পর বিমানটি ল্যান্ড করে। বিমান থেকে যাত্রীরা নামার পরও আতঙ্কে ছিল সবাই।
ফ্লাইটের একজন যাত্রী ওসমান বলেন, ‘উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী ওই অস্ত্রধারী বাংলায় কথা বলেছিলেন। অস্ত্র হাতে তিনি যাত্রীদের উদ্দেশে বলেন, ‘কেউ কোনো শব্দ করবে না।’ ঢাকা থেকে বিমান উড্ডয়নের ১৫ মিনিট পরই ওই অস্ত্রধারী হঠাৎ চিৎকার শুরু করে। এসময় সে পাইলটের দরজায় তিন রাউন্ড গুলি করে। যাত্রীদের দিকেও অস্ত্র তাক করে ছিল সে। এমন পরিস্থিতিতে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।'
তিনি বলেন, অস্ত্রধারী পুরোটা সময় অত্যন্ত উদ্ধত আচরণ করে। উড়োজাহাজটি অবতরণের পর আমরা যাত্রীরা দ্রুত গেট দিয়ে নেমে আসি। পরে পাইলটও নেমে আসেন। এসময় ওই অস্ত্রধারী ছিনতাইকারী কাউকে কিছু বলেনি। তবে কেবিন ক্রুদের আটকে রাখে।
ওসমান গণি জানান, তার বাড়ি কক্সবাজারের পেকুয়া। তিনি ওমানে থাকতেন। সেখান থেকে দুবাই হয়ে প্রথমে ঢাকা যান। পরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এই ফ্লাইটে চড়ে চট্টগ্রামে পৌঁছান।