বুধবার, ০৬ মার্চ, ২০১৯, ০৩:২০:৫৫

এবার ‘ওয়াটার বাস’ চলবে কর্ণফুলী নদীতে

এবার ‘ওয়াটার বাস’ চলবে কর্ণফুলী নদীতে

সাইফুল ইসলাম শিল্পী: চট্টগ্রাম মহানগরীর যানজট ও ভোগান্তি কমাতে এবার নদীপথে যাত্রীবাহী ‘ওয়াটার বাস’ চালুর উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। প্রাথমিকভাবে বিমান যাত্রীদের সহজতর যাতায়াতের সুবিধার্থে চট্টগ্রামে এই প্রথম কর্ণফুলী নদীতে চালু হচ্ছে ওয়াটার বাস।

আগামী জুন মাসে আনুষ্ঠানিক এ ওয়াটার বাস চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

দ্রুত সময়ে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছাতে নগরের সদরঘাট থেকে পতেঙ্গা ১৫ নম্বর ঘাট পর্যন্ত এ সার্ভিস চলবে। মূল শহর থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত সড়কের মোড়ে মোড়ে মাত্রাতিরিক্ত যানজটেপড়া যাত্রীদের ভোগান্তি দূর করতে বিকল্প রোড হিসেবে নদীপথে এ বাস চলাচল করবে।

বন্দর সূত্র জানায়, এ প্রকল্পের আওতায় প্রাথমিকভাবে ৩০ আসনের দ্রুতগতির ৪টি ওয়াটার বাস নামানোর কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে ওয়াটার বাস নির্মাণের কাজও শুরু করেছে। এজন্য চিটাগাং ড্রাইডকের সঙ্গে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। সংস্থাটি জাহাজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টার্ন মেরিনের সাথে চুক্তিও সম্পন্ন করে নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

দেশের জাহাজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ওয়েস্টান মেরিন শিপইয়ার্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নৌ প্রকৌশলী মো. শাখাওয়াত হোসাইন বলেন, জুনে চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো কর্ণফুলী নদীতে ওয়াটার বাস চালু হবে। বর্তমানে জাহাজে বিমানবন্দর থেকে সদরঘাট যেতে প্রায় এক ঘণ্টা সময় লাগে।

জুন থেকে ২০ মিনিটে ওয়াটার বাসে এ পথ পাড়ি দেওয়া যাবে। আমরা দ্রুতগতি সম্পন্ন চারটি ওয়াটার বাস নির্মাণ করছি। ৩০ জন যাত্রীর ধারণক্ষমতার চারটি বাস দিয়ে সার্ভিসটি শুরু করতে চাই।’

পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের সহ-সভাপতি সুভাষ বড়ুয়া বলেন, সদরঘাট থেকে ওয়াটার বাসে নির্বিঘ্নে যাওয়া যাবে, ঠিক আছে। কিন্তু সদরঘাট পর্যন্ত যাব কীভাবে? সড়ক ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা না আনলে ওয়াটার বাস চালুর সুফল তো পাওয়া যাবে না।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক ইউএনবিকে জানান, ওয়াটার বাস পরিচালনার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে সদরঘাটের সী-রিসোর্সেস কোম্পানির পূর্বপাশে যাত্রীদের সুবিধার্থে টার্মিনাল নির্মাণের কাজ চলছে। ওয়াটার বাস তৈরির জন্য চট্টগ্রাম ড্রাইডককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শিগগীরই বিমানযাত্রীরা এর সুফল ভোগ করতে পারবেন।

তিনি বলেন আরও বলেন, নগরীর দেওয়ানহাট, আগ্রাবাদ, নিমতলা, ইপিজেড হয়ে বিমানবন্দর যাওয়ার হাইওয়ে মূল সড়কটিতে মাত্রাতিরিক্ত যানজট লেগে থাকে। এ মুহূর্তে হাইওয়ে সড়কের যানজট সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনা খুবেই কঠিন। বে টার্মিনাল নির্মাণের আগে বন্দরমুখী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, লরি চলাচল কমানো সম্ভব নয়। তাই সরকার বিকল্প হিসেবে বিমানবন্দরগামী যাত্রীদের সুবিদার্থে ওয়াটার বাস চালানোর উদ্যোগ নিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সুত্র জানান, নগরীর সদরঘাট থেকে বিমান যাত্রীরা লাগেজসহ ওয়াটার বাসে চড়বেন। পতেঙ্গায় বিমানবন্দরের কাছে নদীতে পল্টুন স্থাপন করা হচ্ছে। সেখানেই বিমান যাত্রীদের চেকইন করা হবে। যাত্রীদের লাগেজ সংশ্লিষ্ট ফ্লাইট কোম্পানির ভ্যানে চলে যাবে। যাত্রীদেরকে সেখান থেকে মিনিবাসের মাধ্যমে বিমানবন্দরে নেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এতে করে যাত্রীদেরকে ঘাট থেকে লাগেজ নিয়ে টানাটানি করতে হবে না।

চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ম্যানেজার উইং কমান্ডার সারোয়ার-ই-আজম ইউএনবিকে বলেন, দেওয়ানহাট, ইপিজেড, পতেঙ্গা, বন্দর থানা এলাকায় যানজটের কারণে বর্তমানে ফ্লাইটের যাত্রীদের তিন ঘণ্টা আগে রওনা দিতে হয় শহর থেকে। তাই সরকারের বিশেষ উদ্যোগ হচ্ছে সদরঘাট থেকে ১৫ নম্বর ঘাট (এয়ারপোর্ট) পর্যন্ত ওয়াটার বাস চালু করা। দ্রুত সময়ের মধ্যে মানুষ এ রুটের সুফল পাবেন বলেও জানান তিনি। সূত্র: ইউএনবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে