চট্টগ্রাম থেকে : চট্টগ্রামের প্যারেড মাঠে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভীর শ্বশুর জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা মুমিনুল হক চৌধুরীর জানাজা নিয়ে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
এতে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৬ জন আহত হয়েছে বলে উভয় পক্ষ দাবি করেছে। শনিবার দুপুরে নগরীর চট্টগ্রাম কলেজের মাঠে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কলেজ মাঠ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
এদিন শনিবার বেলা দেড়টা থেকে ২টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম কলেজ মাঠে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বলে চকবাজার থানার ওসি নিজাম উদ্দিন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
জানা গেছে, শুক্রবার রাতে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে অসুস্থ অবস্থায় মারা যান জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মুমিনুল হক চৌধুরী। তার জানাজা আয়োজন করা হয় চট্টগ্রাম কলেজ মাঠে শনিবার জোহরের পরে। সেখানে জামায়াত নেতাদের পাশাপাশি ছাত্র শিবিরের কর্মীরাও আসেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জানাজা এবং তাতে শিবিরের নেতাকর্মীদের অংশগ্রহণের কথা জানতে পেরে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের কর্মীরা মিছিল নিয়ে ঘটনাস্থলের দিকে এগিয়ে যান। এ সময় জানাজায় থাকা শিবিরের কর্মীরাও এগিয়ে এসে মারামারিতে লিপ্ত হন।
পুলিশ উভয়পক্ষের মাঝখানে অবস্থান নেয়। পুলিশের বাধার কারণে ছাত্রলীগ মাঠে প্রবেশ করতে না পারলেও জানাজায় অংশগ্রহণকারীদের লক্ষ্য করে ছাত্রলীগ ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।
চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ আবুল হাসান বলেন, দুপুর সোয়া ১২টায় সংসদ সদস্য নদভী তাকে ফোন করে কলেজ মাঠে জানাজা নামাজের জন্য পুলিশ কমিশনারের অনুমতি নেওয়া হয়েছে বলে জানান। জানাজায় তাকে সহযোগিতা করতে অনুরোধ করেন।
সে সময় কলেজ অডিটোরিয়ামে ঈদ পুনর্মিলনীর অনুষ্ঠান চলছিল। এ সময় বিষয়টি কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জানতে পারলে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। তারা প্রতিরোধের ডাক দেয়। তারা লাঠিসোঠা ও রড নিয়ে জানাজা নামাজের দিকে এগুতে তাকে। এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এতে কয়েকজনের মাথা ফেটে যায়।
ইসলামী ছাত্রশিবির নগর (দক্ষিণ) এর সভাপতি হাসান আবদুল্লাহ জানান, ছাত্রালীগের কিছু নেতাকর্মী কোনো প্রকার উসকানি ছাড়াই শান্তিপূর্ণ জানাজায় হামলা করে। জানাজার মাঠে মুসল্লিদের ওপর ইট-পাটকেল ছুড়েছে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সবুজ বলেন, ওই জানাজায় ইসলামী ছাত্র শিবিরের কয়েক শ নেতাকর্মী অংশ নিতে আসে। তাদের মধ্যে নগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি আ স ম রায়হান, জুবায়ের ও হান্নানসহ কয়েকজন শিবির ক্যাডার ছিল। তাদের দেখে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ধাওয়া দেয়।
চকবাজার থানার ওসি নিজাম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, মমিনুল হক চৌধুরীর জানাজায় কিছু ছেলেপেলে মারমুখী হয়ে ওঠে এবং ছাত্রলীগের ছেলেরা এগিয়ে এলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঝখানে অবস্থান নেয়। এতে কয়েকজন সামান্য আহত হয়ে থাকতে পারেন। তবে বর্তমানে কলেজ ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি শান্ত আছে বলে জানান তিনি।