শনিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৯, ১০:০৯:২১

চীন, মিশর ও মিয়ানমার থেকে চট্টগ্রামে ঢুকেছে প্রায় ২০০ টন পেঁয়াজ

চীন, মিশর ও মিয়ানমার থেকে চট্টগ্রামে ঢুকেছে প্রায় ২০০ টন পেঁয়াজ

নিউজ ডেস্ক : পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতার মধ্যে শনিবার চট্টগ্রামে ১৯৮ টন পেঁয়াজ এসেছে। এর মধ্যে চীন ও মিশর থেকে আনা ১১৪ টন পেঁয়াজ বন্দরে খালাস হয়েছে এবং মিয়ানমার থেকে আসা ৮৪ টন পেঁয়াজ বন্দরনগরীর পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন আড়তে এসেছে। এদিকে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় আধ পচা পেঁয়াজও বিক্রি হচ্ছে চট্টগ্রামের খুচরা বাজারে। এদিন খাতুনগঞ্জ ও চাক্তায়ের পাইকারি বাজারের বিভিন্ন এলাকায় পচা পেঁয়াজের কিছু বস্তা পড়ে থাকতেও দেখা গেছে।

চট্টগ্রাম সামুদ্রিক বন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক আসাদুজ্জামান বুলবুল জানান, চট্টগ্রাম বন্দরে শনিবার মিশর থেকে আনা ৫৮ টন এবং চীন থেকে আনা ৫৬ টন পেঁয়াজ খালাস হয়েছে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে শনিবার পর্যন্ত মোট ৬ হাজার ১৪১ টন পেঁয়াজ চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছাড় হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে পেঁয়াজ আনতে আমদানি অনুমতিপত্র (আইপি) নেওয়া হয়েছে ৭১ হাজার ৮০২ টনের।

এরমধ্যে গত বুধবার পর্যন্ত ৬৬ হাজার ১৬২ টনের আইপি নেওয়া হয়েছিল। এরপর গত কয়েক দিনে আরও ৫ হাজার ৬৪০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতিপত্র খোলা হয়েছে বলে জানান আসাদুজ্জামান বুলবুল। এর আগে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আসে ৫ হাজার ৯৪৭ টন। শুক্রবার আরও ৮০ টন পেঁয়াজ ছাড় হয়। খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মার্কেট কাঁচামাল আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিচ বলেন, “আজ মিয়ানমার থেকে আমদানি করা ছয় ট্রাক পেঁয়াজ (৮৪ টন) খাতুনগঞ্জে এসেছে।

“তবে পাইকাররা বেশি দামে পেঁয়াজ কিনতে ভয় পাচ্ছে। মিয়ানমার থেকে আরও কিছু পেঁয়াজ কাল-পরশু আসতে পারে বলে শুনেছি। বন্দর থেকে ছাড় হওয়া পেঁয়াজ গত দুই দিনে খাতুনগঞ্জে আসেনি। সেগুলো দেশের অন্য জেলার পাইকাররা কিনে নিয়ে গেছে।” শনিবার দুপুরে খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মার্কেট, চাঁন মিয়া বাজার, মধ্যম চাক্তাইসহ কয়েকটি স্থানে আড়তের বাইরে কয়েক বস্তা করে পচা পেঁয়াজ পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে এসব এলাকা থেকে আড়তদারদের ফেলে দেওয়া প্রায় ১৫ টন পচা পেঁয়াজ তুলে নিয়ে আরেফিন নগরের ভাগাড়ে ফেলে দেয় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। পেঁয়াজের দাম বাড়ার পর আধ পচা পেঁয়াজ বাছাই করে শুকিয়ে বিক্রি করাও শুরু হয়েছে। কয়েক দিন ধরে নগরীর পথে পথে রিকশা ভ্যানে করে এ রকম পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা গেছে।

দুপুরে নগরীর ফিরিঙ্গি বাজার ব্রিজ ঘাট এলাকায় দেখা যায়, কয়েকজন মিলে আধ পচা পেঁয়াজ থেকে ভালো পেঁয়াজ বেছে নিয়ে রোদে শুকাচ্ছে। তাদের মধ্যে দুজন দ্বীন মোহাম্মদ ও নুরুল ইসলাম জানান, খাতুনগঞ্জ থেকে কয়েক দিন আগে প্রতি বস্তা ২০০ টাকা করে তারা ১৮ বস্তা পেঁয়াজ কেনেন। এর বেশিরভাগই ছিল পচা। সেখান থেকে বাছাই করা পেঁয়াজ একটু রোদে শুকিয়ে পাড়া-মহল্লায় ঘুরে ঘুরে বিক্রি করেছেন।

পচা পেঁয়াজগুলো তারা কর্ণফুলীতে ফেলে দেন। নদীর পানিতে পচা পেঁয়াজ ভাসতে দেখা গেছে। শনিবার আবার ৫০ টাকা কেজি হিসেবে কিছু পেঁয়াজ কিনেছেন তারা। বাছাই ও শুকানোর পর এগুলো ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে চান। এছাড়া কর্ণফুলী ও চাক্তাই খালের সংযোগস্থলে চাক্তাই খালের পানিতেও কিছু পচা পেঁয়াজ ভাসছিল শনিবার দুপুরে।

এদিকে বিকেলে খাতুনগঞ্জে যায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুস সামাদ শিকদারের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে ছিলেন আরেক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গালিব চৌধুরী। মূল্য তালিকার চেয়ে বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করায় খাতুনগঞ্জের বার আউলিয়া বাণিজ্যালয়কে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় বলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গালিব জানান। তিনি বলেন, মূল্য তালিকায় ৮৫ টাকা লেখা থাকলেও তারা মিয়ানমারের পেঁয়াজ পাইকারিতে বিক্রি করছিল ১৫০ টাকা কেজি দরে।

“আরও কিছু প্রতিষ্ঠানে গিয়ে তাদের কাছে পেঁয়াজ কেনার ‘ইন ভয়েস’ এবং বিক্রি রশিদ পাওয়া যায়নি। তাদের সতর্ক করা হয়েছে। অভিযান চলবে।” সূত্র: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে