মঙ্গলবার, ২১ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৪৮:০১

করোনা উপসর্গ প্রসূতির সন্তান প্রসব, আবেগঘন স্ট্যাটাস চিকিৎসকের

করোনা উপসর্গ প্রসূতির সন্তান প্রসব, আবেগঘন স্ট্যাটাস চিকিৎসকের

চট্টগ্রাম: সং'ক্রমণ আত'ঙ্কের মধ্যেও সফল সন্তান প্র'সবের ঘ'টনাটি ফেসবুক পোস্টে বর্ণনা করেছেন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. জাহানারা শিখা। আবে'গঘন স্ট্যাটাসটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরালও হয়েছে।

ডা. জাহানারা শিখা পোস্টে উল্লেখ করেন, ‘ডে'থ সে'ন্টে'ন্স-ই মনে হচ্ছিল আজ। কাকডাকা ভোরের ফোনকলটাকে। তখন ভোর ৬টা। সিনিয়র কলিগ ফোন করেছেন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে একজন রোগী রেফার্ড হয়েছে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে। করোনা সা'সপে'ক্টেড লেবারের রোগী। সিজারিয়ান লাগবে। রোগীর চারদিন ধ'রে জ্বর, কাশি। যেহেতু এটা করোনা ডে'ডিকে'টেড হাসপাতাল আর আমি আগামী সাতদিনের জন্য অনকল কনসালটেন্ট, আমাকেই যেতে হবে সিজার করতে। চ'রম দি'শেহা'রা হয়ে কোনোরকমে ব্যাগ গু'ছিয়ে নিয়ে দৌ'ড়ে এলাম হাসপাতালে। শুনলাম স্টাফ নার্সকে নিয়ে অপারেশন করতে হবে। কারণ সকল মেডিকেল অফিসার আইসোলেশন ওয়ার্ডের রোস্টার ডিউটি করছে। সি'জারে এসিস্ট করার কেউ নেই।’

‘ক'ম্পমান বুকে মনে মনে ছক ক'ষছি আমি তখন, খুব অল্প সময়ের মধ্যে দ্রু'ত সিজার শেষ করে আসতে হবে আমাকে। অপারেশনে সময় যত বেশি লাগবে তত বেশি এ'ফেক্টে'ড হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে, আমার আর আমার টিমের। চশমা ছাড়া কিছু দেখি না আমি, তার ওপর পিপিইর গগলস, ফেস শিল্ড পরে চোখে আদৌ অপারেটিভ ফি'ল্ড দেখতে পাব কি-না, নার্সকে নিয়ে অপা'রেশন করে পনের-বিশ মিনিটের মধ্যে অপা'রেশন শেষ করে আসতে পারব তো? অ'ন্তরা'ত্মা ক্ষণিকের জন্য কেঁ'পে উঠল। এমন কিংক'র্তব্যবিমূঢ় যখন আমার অবস্থা, তখন এগিয়ে এলেন আমার সিনিয়র কনসালটেন্ট প্রিয় Shimul আপা।

বললেন, আমিও যাচ্ছি, চল। সাথে সাথে ভ'য়ড'র উ'ধাও হয়ে গেল। কলিজাটা এত্ত বড় হয়ে গেল আমার। অপা'রেশন শুরুর আগে রোগীকে এগ্জা'মিন করে মনে হলো, খুব খারাপভাবে বাসায় হ্যান্ডেল হওয়া অব্স'ট্রাক'টেড লেবার। বাচ্চার হা'র্টবি'ট তখনও আছে। সিজার ডি'ফিকা'ল্ট হবে। আপা বললেন, খা'রাপ কে'স, ঝামেলা হতে পারে। এদিকে ব্লা'ড লাগলে রোগীর লোক তা আনতে পারবে কি-না জানি না। কোনো পুরুষ লোকও সাথে দেখছি না। আপাকে বললাম, আপনি এ'ক্সপো'জড হবেন না, আপা! আপনি তো আছেন-ই। প্রয়োজনে হেল্প নেব আপনার। আমি সিস্টারকে নিয়ে শুরু করি।

কিন্তু আপা আমাকে এসিস্ট করতেই এগিয়ে এলেন। মহৎ হৃদয় আপার সহযোগিতায় দ্রু'তগতিতে সিজার সে'রে বেরিয়ে এলাম, আলহামদুলিল্লাহ। অনেক ব্লি'ডিং হচ্ছিল একপর্যায়ে। সেটাও দুজনে মিলে দারুনভাবে ম্যানেজ করলাম। বাচ্চা, মা ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ।’

ডা. জাহানারা শিখা আরও উল্লেখ করেন, “আমরা আছি। মানুষের জন্য। মানুষের পাশে। একটু ভ'য় করে সত্যি। তবে ভ'য়টা নিজের জন্য নয়। বাচ্চাদের জন্য। মা ছাড়া আমাদের বাচ্চাদের আর কে আছে জগতে?

রোগীর স্যা'ম্পল কালে'কশন করে নিয়ে গেছে। দোয়া করবেন সবাই, যাতে রোগীর কোভিড নেগেটিভ আসে। পজিটিভ হলে বাসায় যেতে পারব না ২১ দিন। বাচ্চাগুলোকে 'যাই' বলতেও পারিনি হাসপাতালে আসার সময়।” বিডি প্রতিদিন

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে