চট্টগ্রাম: হাসপাতালে হাতেগোনা কিছু অক্সিজেনের বোতল। একেকটি অক্সিজেনের বোতল ধরে থাকেন সাত-আটজন রোগী। মরচেধরা অক্সিজেনের বোতলই যেন তাদের কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস। কে কার আগে সর্বশক্তি দিয়ে টা'নাটা'নি করে সেই বোতলের দ'খল নেবেন— আক্ষরিক অর্থে তারই প্রতিযোগিতা চলছে এখন চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লার জেনারেল হাসপাতালে। জীবন বাঁ'চানোর এই ল'ড়াইয়ে সেখানকার চিকিৎসক কিংবা কর্মীদেরও করার কিছু নেই।
অক্সিজেনের বোতল নিয়ে হৃদয়বিদারক টানাটানির এই ল'ড়াইয়ে যারা জেতেন, তারা আরও কিছু সময় জীবনের সঙ্গে যু'দ্ধ করার রসদ পান। আর যারা হারেন, তাদের অনেককেই বিদায় নিতে হয় চিরকালের জন্য।
শনিবার রাতে এমন এক মর্মন্তুদ ঘটনার সাক্ষী হল চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল। করোনাভাইরাসে আক্রা'ন্ত হয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ শাহ আলমকে (৪৮) অক্সিজেনের অভাবে চিরবিদায় নিতে হল রাত ১১টার দিকে। তিনি সীতাকুণ্ড পৌর আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সভাপতি। সীতাকুণ্ড পৌর সদরের ইসমাইল মিস্ত্রির ছোট ছেলে তিনি।
শাহ আলমের ভাইয়ের ছেলে আশরাফ শোভন জানান, গত বৃহস্পতিবার (১১ জুন) শ্বাসকষ্ট নিয়ে তার চাচা শাহ আলম ফৌজদারহাটের বিআইটিআইডি হাসপাতালে ভর্তি হন। শনিবার তার নমুনায় করোনাভাইরাসের জীবাণু শনা'ক্ত হয়। সেখানে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় শনিবার (১৩ জুন) তাকে আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার আরও অবনতি ঘটতে থাকলে সেখান থেকে বিকালে আন্দরকিল্লার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আশরাফ শোভন বলেন, বিকাল থেকেই আমার চাচার শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে। এ সময় ডাক্তারদেরকে আমরা অনেক অনুরোধ করেছি তাকে অক্সিজেন দেওয়ার জন্য। জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানে চ'রম অব'হেলার শি'কার হন আমার চাচা। কোন ডাক্তার ভালো করে দেখলেনও না। সেখানে দেখেছি, একটা অক্সিজেনের বোতল নিয়ে অন্তত ৭-৮ জন রোগী টানাটানি করছেন। শেষপর্যন্ত রাত ১১টার দিকে অক্সিজেনের অভাবেই আমার চাচার মৃ'ত্যু হল। সূত্র: চট্টগ্রাম প্রতিদিন/বাংলাদেশ প্রতিদিন