চট্টগ্রাম: আলতাফ হাসান মাহি ওর'ফে মোনতাসির। বয়স মাত্র চার মাস। এখনো পৃথিবীকে বুঝতে শেখেনি। বোঝে শুধু বাবা-মায়ের আদর। আর এই বয়সেই মোনতাসির হয়ে পড়েছে অন্যের লো'ভের শি'কার। আদরের শিশুকে পূর্বপরিচিত যে নারীর কোলে দিয়ে মেহমানকে নাশতা দেওয়ার জন্য রান্নাঘরে গিয়েছিল, সেই মেহমানরূ'পী নারীই অ'পহ'রণ করে শিশু মোনতাসিরকে।
এই অ'পহ'রণের নে'প'থ্যেও আছে মাতৃত্বের সাধ পাওয়ার আরেক গল্প। যে নারী অ'পহ'রণ করেছেন শিশুকে, সে নারীর বিয়ে হয়েছে প্রায় ছয় বছর আগে। কিন্তু কোলে সন্তান আসেনি। তাই অন্যের সন্তান চু'রি করে নিজের মাতৃত্বের সাধ পূর্ণ করতে চেয়েছিলেন ওই নারী। শেষ পর্যন্ত এর কোনোটিই হয়নি। অ'পহ'রণের মাত্র চার ঘণ্টার মধ্যে শিশু মোনতারিসকে উ'দ্ধার করে পুলিশ। আর অ'পহ'রণ মামলায় গ্রে'প্তার হয়ে কারা'গারে গেছেন ওই নারী।
ঘ'টনাটি ঘ'টেছে চট্টগ্রাম মহানগরীর চকবাজার থানার ঘাসিয়াপাড়া এলাকায়। গত রবিবার সন্ধ্যায় ঘাসিয়াপাড়ার আনোয়ার হোসেন মুরাদের ঘরে পূর্বপরিচিত ফরিদা আক্তার (২২) বেড়াতে আসেন। এ সময় মুরাদের স্ত্রী কামরুন নাহার পুতুল মেহমানের সঙ্গে সৌজন্যমূলক কথা বলেন। একসময় ফরিদাও কামরুন নাহারদের বাসার পাশে ভাড়া থাকতেন। সেই সু'বাদে দীর্ঘদিন পর দুজনের দেখা হওয়ায় ফরিদাকে নাশতা দেওয়ার জন্য রান্নাঘরে যান পুতুল। এ সময় আদর করে পুতুলের শিশুসন্তান মোনতাসিরকে কোলে নেন ফরিদা।
কামরুন নাহার রান্নাঘরে যাওয়ার পরপরই বাসা থেকে মোনতারিসকে নিয়ে পা'লিয়ে যান ফরিদা বেগম। আর রান্নাঘর থেকে ফিরে ড্রয়িংরুমে ফরিদাকে না দেখে হ'তবি'হ্ব'ল হয়ে পড়েন কামরুন নাহার। এরপর ওই দম্পতি চকবাজার থানায় এসে অভি'যোগ করেন।
ঘ'টনার বিষয়ে চকবাজার থানার ওসি রুহুল আমীন বলেন, মুরাদ-কামরুন দম্পতির বিয়ের সাত বছর পর মোনতাসিরের জন্ম। এই সন্তানকে দেখতে আসেন আগের পরিচিত ফরিদা বেগম। ফরিদা বেগমের স্বামীও জমি বিক্রির ব্রো'কার হিসেবে কাজ করেন। প্রায় ছয় বছর আগে বিয়ে হলেও তারা এখনো নিঃসন্তান।
এ কারণে ফরিদা পরিক'ল্পনা করে কামরুনের সন্তান অ'পহ'রণ করেন। রবিবার সন্ধ্যায় ফরিদা তাঁর ভাইকে নিয়ে কামরুনের বাসায় আসেন। ভাইকে বাসার বাইরে রেখে ফরিদা একাই কামরুনের সঙ্গে দেখা করতে যান। এই সময় কামরুনের সঙ্গে সৌজন্যমূলক কথা বলেন ফরিদা। ফরিদার কোলে সন্তানকে দিয়ে নাশতা তৈরি করতে রান্নাঘরে যান কামরুন। এ সুযোগে দ্রু'ত বাসা থেকে বের হয়ে ভাইয়ের কাছে শিশু মোনতাসিরকে 'তুলে দেন ফরিদা। এরপর ফরিদার ভাই অটোরিকশায় দ্রু'ত ফরিদার বাসায় পৌঁছেন। আর ফরিদা একা অন্য গাড়িতে নিজের বাসায় যান।
এদিকে মোনতাসিরকে না পেয়ে কান্নায় ভে'ঙে পড়েন কামরুন। পরে তাঁরা থানায় এসে অভি'যোগ করেন। অভি'যোগ পেয়ে পুলিশ তা'ৎক্ষণিক ত'দ'ন্তের উ'দ্যো'গ নেয়। ত'থ্য-প্র'যু'ক্তির সহা'য়তায় ফরিদার অব'স্থান শ'না'ক্ত করা হয়। এরপর পুলিশ অভি'যান চা'লিয়ে চান্দগাঁও থানার খাজা রোড খালাসী পুকুরপাড়স্থ শাহজাহান কলোনির বাবুলের বাসা থেকে ফরিদা আক্তারকে গ্রে'প্তার ও শিশুকে উ'দ্ধা'র করে। উ'দ্ধা'রের পর শিশুকে তার বাবা-মায়ের কোলে তু'লে দেওয়া হয়। এ ঘ'টনায় কামরুন নাহার বাদী হয়ে একটি অ'পহ'রণ মা'মলা দায়ের করেন। এ মাম'লায় সোমবার ফরিদা আক্তারকে আদালতে সো'প'র্দ করা হয়েছে।
কেন অ'পহ'রণ করেছেন ফরিদা? এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি রুহুল আমিন বলেন, গ্রে'প্তারের পর ফরিদা প্রাথমিক জিজ্ঞা'সাবাদে জানিয়েছে, তাঁর বিয়ে হয়েছে প্রায় ছয় বছর। এখনো তাঁর সন্তান হয়নি। এ কারণে সন্তানের আ'কা'ঙ্ক্ষায় তিনি অ'পহ'রণ করেছেন। অন্যের সন্তান অ'পহ'রণ করে তিনি লালনপালন করতে চেয়েছিলেন বলে দা'বি করেন। তবে পুরো বিষয়টি ত'দ'ন্ত করে দেখা হচ্ছে।সূত্র : কালের কণ্ঠ