নিউজ ডেস্ক : ক্লাস রুটিন আর পরীক্ষার রুটিনের বাইরে ভিন্ন রকম এক রুটিন চালু করেছে রাঙ্গুনিয়ার এক কওমি মাদরাসাশিক্ষক মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন (নাছির হুজুর)। কোন রাতে কোন ছাত্রকে বলাৎকার করা হবে তা রীতিমতো রুটিনের মতো করে ঠিক করে রেখেছিলেন এই শিক্ষক।
উপজেলার স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়নের শাহ আহমদীয়া আজিজুল উলুম মাদরাসার এই শিক্ষক ছোট ছেলেশিশুদের প্রতি প্রবলভাবে যৌনাসক্ত। এই যৌন কামনা চরিতার্থ করতে তিনি প্রতি রাতে নতুন নতুন শিশু ব্যবহার করে আসছেন। কোনো ছাত্র রাজি না হলে বা প্রতিবাদ করলেই তাকে নির্যাতন করতেন হুজুর। নানা অজুহাতে ক্রমাগত মারপিটের শিকার হওয়ার পর বাধ্য হয়েই হুজুরের শয্যাসঙ্গী হতে রাজি হতো শিশুরা। এভাবে দীর্ঘকাল শিশুদের বলাৎকারের পর আজ মঙ্গলবার ভোররাতে পুলিশ তাকে আটক করে। পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তার বিকৃত রুচির এসব অপরাধকাণ্ড অকপটে স্বীকার করেছেন 'নাসির হুজুর'।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ছোট বেওলা গ্রামের নুরুল ইসলামের পুত্র নাছির উদ্দিন প্রকাশ নাছির হুজুর বছর দুয়েক আগে স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া এলাকায় অবস্থিত এই মাদরাসার শিক্ষক নিযুক্ত হন। সোমবার রাতে বেশ কয়েকজন অভিভাবক তাদের শিশুসন্তানকে বলাৎকার করার বিষয়ে থানায় অভিযোগ করেন। ওই রাতেই চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (রাঙ্গুনিয়া সার্কেল) মো. আনোয়ার হোসেন শামীমের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের এএসপি আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, এই হুজুরের ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যৌন কামনার দিক থেকে নাছির দীর্ঘদিন ধরেই ছেলেশিশুদের প্রতি দুর্বল। পাঁচ বছর আবুধাবির দুবাই থাকার পর মূলত এই শিশু বলাৎকারে আসক্তিই তাকে মাদরাসাশিক্ষকতার পেশায় টেনে আনে। শিক্ষকতায় নিয়োজিত থেকে অদ্ভুত উপায়ে তিনি তার আকাঙ্খা পূরণ করে চলেন। এমনকি তিনি রুটিনের মতো করে রাখেন, কে কবে তাকে বিছানায় সময় দেবে। তার ছেলেশিশু আসক্তির এই বিকৃত রুচির কথা জানতে পেরে ২০১৮ সালে তার স্ত্রী একমাত্র সন্তানসহ তাকে ছেড়ে চলে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিশুর মা বলেন, অনেক স্বপ্ন নিয়ে আলেম বানানোর উদ্দেশ্যে ছেলেকে মাদরাসায় ভর্তি করিয়েছিলাম। গার্মেন্টে চাকরি করে বহু কষ্টে ছেলের পড়ালেখার খরচ দিই। কিন্তু মানুষরূপী এই শয়তান আমাদের সব স্বপ্ন শেষ করে দিয়েছে। তাকে মেরে ফেলা উচিত। সে মানুষ না।