রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম): হেফাজত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে নারীসহ অবরুদ্ধের প্রতিবাদে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার কোদালায় তাৎক্ষণিক বের করা মিছিল থেকে হামলায় গুরুতর আহত আওয়ামী লীগ নেতা মো. মুহিবুল্লাহ (৫৪) মারা গেছেন।
চারদিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে চট্টগ্রাম নগরীর পার্কভিউ হাসপাতলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার (৭ এপ্রিল) ভোররাত ১টার দিকে তিনি মারা যান বলে হাসপাতালের পরিচালক মো. রেজাউল করিম নিশ্চিত করেন। এর আগে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন মুহিবুল্লাহ।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গত শনিবার (৩ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে হেফাজত ইসলামের যুগ্ন মহাসচিব মামুনুল হক নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে একটি রিসোর্টে নারীসহ অবরুদ্ধের খবর ছড়িয়ে পড়লে রাঙ্গুনিয়ার কোদালায় একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। মিছিলে হেফাজতের স্থানীয় নেতাকর্মীরাও যোগ দেন। মিছিলের অগ্রভাগে নেতৃত্ব দেন বিএনপি নেতা ইউনুছ মনি। মিছিলটি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড থেকে শুরু করে পূর্ব কোদালা ৬ নং ওয়ার্ড পর্যন্ত যান। পরে ৫নং ওয়ার্ড দক্ষিণ পাড়া জামে মসজিদের সামনে বিক্ষোভ মিছিল থেকে লাঠিসোটা নিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় যুবলীগ নেতা আবদুল জব্বার, দিলদার আজম লিটন ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মোহাম্মদ মুহিব্বুল্লাহর ওপর।
আ.লীগ নেতা মুহিবুল্লাহর মাথায় গুরুতর আঘাত করা হয়। তার শরীরে কয়েক’শ আঘাতের চিহ্ন ছিল। নগরীর পার্কভিউ হাসপাতালের আইসিইউতে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চিকিৎসাধীন মুহিবুল্লাহকে সর্বশেষ মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। বুধবার ভোররাত ১টায় তার মৃত্যু ঘটে।
এ ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে রাঙ্গুনিয়া থানায়। মামলা দুটিতে বিএনপি-জামায়াতের কর্মী ও হেফাজত সমর্থক ৬৪জন এজাহার নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা ১৫০জনসহ মোট ২১৪জনকে আসামি করা হয়েছে। দুটি মামলাতেই উপজেলা বিএনপি নেতা ইউনুছ মনিকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদি ও আহত যুবলীগ নেতা আবদুল জব্বার জানান, বিএনপি নেতা ইউনুছ মনির নেতৃত্বে মিছিল বের করে তারা। তখন রিকশা নিয়ে আমরা বাড়ি যাচ্ছিলাম। এসময় অতর্কিত দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র হাতে আমাদের উপর হামলা করে তারা।
রাঙ্গুনিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুব মিল্কি বলেন, মারধরের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রূপান্তর হবে। এজাহারনামীয় তিন আসামিকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্যদের ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।