চট্টগ্রাম : সবসময় একসঙ্গে চলাফেরা করতেন দুই ভাই। বিয়েও করেছিলেন একইসঙ্গে। দুই ভাইয়ের ঘরেই এক ছেলে এক মেয়ে করে দুইটি সন্তান রয়েছে। ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস! একসঙ্গে কাটানো দুই ভাইয়ের মৃত্যুও হলো একইসঙ্গে। বুধবার রাত ১১টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনাপাহাড় এলাকায় কাভার্ডভ্যানচাপায় ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান চারজন। তাদের মধ্যে রয়েছেন দুই ভাই মো. সুমন ও শেখ ফরিদ।
দুই ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ বৃদ্ধ শামসুদ্দীন। তার আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠছে। দুই ছেলেকে হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা নুরজাহান। কান্না করতে করতে তিনি বলেন, এভাবে বুক খালি করে দুই ছেলে চলে যাবে কখনো চিন্তাও করতে পারিনি। আমি এখন কাকে নিয়ে বাঁচবো। ছোট ছোট নাতি-নাতিনদের কী হবে?
নুরুল মোস্তফা নামের স্থানীয় একজন জানান, সুমন-ফরিদ এক সঙ্গে চলাচল করতো। এলাকার কারো সঙ্গে কোনো দিন দু’ কথা হয়নি। দুই ভাইকে এক সঙ্গে খৎনা করা হয়, বিয়েও হয় এক সঙ্গে। গতকাল এক সঙ্গে তারা মারাও গেলো। এভাবে চলে যাবে কখনো ভাবতে পারিনি।
তিনি আরও জানান, রাহিম নামের চার বছরের এক ছেলে ও তাসফিয়া নামে এক মেয়ে রয়েছে শেখ ফরিদের। অপরদিকে নিশাদ নামে ৭ বছরের এক ছেলে ও চার বছরের মারিয়া নামে একটি মেয়ে রয়েছে সুমনের।
বুধবার রাত ১১ টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাইয়ের সোনা পাহাড় ফিলিং স্টেশন থেকে বের হওয়ার পর একটি লরিকে চট্টগ্রামগামী জোনাকি পরিবহনের একটি বাস ধাক্কা দেয়। খবর পেয়ে সেখানে দায়িত্বরত হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। সঙ্গে এলাকার লোকজন ও স্থানীয় সিএনজি চালকরাও ছিলেন।
এ সময় ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী একটি কাভার্ডভ্যান দাঁড়িয়ে থাকা সবাইকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে চারজন মারা যায়। আহতদের মধ্যে পুলিশ কনস্টেবল এএসআই মোস্তফার অবস্থা আশংকাজনক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।