চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামে আলোচিত এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার তদন্ত চলছে মিতুর ব্যবহৃত মোবাইলের কললিস্টের সূত্র ধরে। অবশ্য মিতু হত্যার পর থেকে মোবাইলটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে হত্যাকাণ্ডে জড়িত একজনের কাছ থেকে মোবাইলটি উদ্ধার করে পুলিশ।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের মধ্যে একজন মিতুর মোবাইল ব্যবহার করে কয়েকটি জায়গায় যোগাযোগ করেছেন। সেখানে মিতু হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে ইঙ্গিতপূর্ণ কিছু কথা রয়েছে। গোয়েন্দারা এ সূত্র ধরে নতুন কিছু ক্লু পেয়েছেন।
তিনি জানান, এসব কারণেই মিতুর স্বামী এসপি বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মিতু হত্যা তদন্তে সামনে অনেক জটিল সমীকরণ অপেক্ষা করছে। এ হত্যাকাণ্ডে প্রধান পরিকল্পনাকারী সামনে আসবেন কি-না তা নিয়েও রয়েছে নানা হিসাব-নিকাশ।
সূত্র মতে, মিতু হত্যার পরিকল্পনাকারীরা এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চেয়েছিলেন। মিতু হত্যা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ নাকি পরিকল্পনাকারী নোংরা পথ বেছে নিয়েছেন সেই প্রশ্নও উঠছে। কেন বাবুলের দুই সোর্স হত্যাকাণ্ডে জড়ালেন এমন প্রশ্নও রয়েছে? তাদের কে ব্যবহার করেছেন? এ হত্যাকাণ্ডে অন্য কোনো চক্র রয়েছে কি-না সে প্রশ্নও উঠেছে।
তবে পরিকল্পনাকারীরা জঙ্গিদের ওপর চাপানোর সব চেষ্টাই করেছেন, এটা আটককৃতদের স্বীকারোক্তিতে উঠে এসেছে। তবে পুরো তদন্ত কার্যক্রম এখন গোলকধাঁধায় পড়েছে। এ নিয়ে বাবুল আক্তারের শ্বশুরও শঙ্কায়। তবে শিগগিরই হয়তো মূল পরিকল্পনাকারী আটকের বিষয়টি সামনে আসতে পারে।
বাবুল আক্তারের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, তদন্ত অন্যদিকে নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে এখন তারা মনে করছেন। মেয়েকে হারিয়েছি, এখন আমরা সঠিক তদন্ত চাই।
মোশাররফ হোসেন আরও বলেছেন, আমার মেয়ে হত্যার বিচার আমি চাই। আমার মেয়ে কোনো চাকরি বা ব্যবসা করতো না। কিন্তু পুলিশের তদন্তকারীরা হত্যাকাণ্ডের তদন্তের মূল জায়গা থেকে সরে যাচ্ছে। তদন্ত ডাইভার্ট করা হচ্ছে বা অন্যদিকে নেয়া হচ্ছে। কেন এটা করা হচ্ছে, সেটাই আমাদের প্রশ্ন।
গত শুক্রবার বাবুল আকতারকে গোয়েন্দা পুলিশের দপ্তরে নিয়ে প্রায় ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। এরপর নানান প্রশ্ন উঠলেও পুলিশের পক্ষ থেকে এখনও পরিষ্কার কোনো বক্তব্য দেয়া হয়নি।
তবে সংবাদমাধ্যমে বাবুল আক্তারের পুলিশে থাকা না থাকার বিষয়েও নানান ধেনের খবর প্রকাশ হচ্ছে।
তার শ্বশুর মোশাররফ হোসেন বলেছেন, জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে বাবুল আকতার তার সাথে কোনো কথা বলেননি। তিনি পত্রিকায় দেখেছেন যে, জিজ্ঞাসাবাদের সময় বাবুল আকতারের কাছ থেকে জোর করে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে। এসব খবর সম্পর্কে তার কোনো ধারণা নেই।
কিন্তু বাবুল আকতার স্ত্রী হত্যায় জড়িত থাকতে পারেন, এটা তারা বিশ্বাস করেন না বলে মোশাররফ হোসেন উল্লেখ করেছেন। তিনি হত্যাকাণ্ডের মূল বিষয়ে সঠিক তদন্ত চান।
৩০ জুন,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম