চট্টগ্রাম : পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে চেনেনই না মাহমুদা খানম মিতু হত্যাকাণ্ডের ‘মূল আসামি’ কামরুল শিকদার মুসার স্ত্রী পান্না আক্তার। কোনোদিন তিনি দেখেননিও বলে জানান। তার স্বামীর মুখেও তার নাম শোনেননি কখনো।
যদিও বাবুল আক্তারের সঙ্গে এই পান্না আক্তারের ‘পরকীয়ার’ জেরে নিজের স্ত্রীর নির্দেশদাতা হিসেবে কল্পকাহিনী প্রচার করে আসছিল একটি মহল। কিন্তু শুরু থেকেই তা নাকচ করে দিয়েছেন বাবুল আক্তার ও তার শ্বশুর-শ্বাশুড়ি।
সোমবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে স্বামী মুসার সন্ধান চেয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তার স্ত্রী পান্না আক্তার এসব কথা জানান।
দুই সন্তানকে পাশে নিয়ে মুসার স্ত্রী বলেন, মুসা ২০০৩ সাল থেকে প্রশাসনের সোর্স হিসেবে কাজ করছে। সে কারণে তার সঙ্গে অনেক পুলিশ অফিসারের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। তবে পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের সোর্স হিসেবে মুনা কাজ করতো কি-না তা জানা নেই।
তিনি বলেন, আমি বাবুল আক্তারকে চিনিও না। কখনো তার নাম শুনিনি। কখনো তার সঙ্গে আমার দেখাও হয়নি। বাবুল আক্তার সম্পর্কে কখনো আমার স্বামী আমাকে কিছু বলেনি।
পান্না আক্তার বলেন , বাবুল আক্তারের সঙ্গে যদি আমার স্বামীর ভালো সম্পর্কই থাকে তাহলে তার স্ত্রীকে সে মারবে কেন? অনেক অফিসারের সঙ্গেই তো তার ভালো সম্পর্ক ছিল। কিন্তু বাবুল আক্তারের কথা তো আমি তার মুখে কখনো শুনিনি।
পান্না আক্তার বলেন, তার স্বামী মুসাকে গত ১৩ দিন আগে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। মুসা দোষ করলে অবশ্যই দোষী হবে, সাজা পাবে। তাকে আইনের কাছে সোপর্দ করা হোক। আদালতে হাজির করা হোক।
তিনি বলেন, বিচারে যেটা হবে সেটা আমরা মেনে নেব। কিন্তু তাকে মেরে ফেলার কথা আসছে কেন? মুসার ভাগ্যে কি ঘটেছে আমাদের জানাতে হবে। মুসা নাকি খুনের নির্দেশদাতা। মুসা কেন খুন করতে যাবে? তার স্বার্থটা কি?
তিনি জানান, ২২ জুলাই সকাল ৭টার দিকে মুসা, পান্না ও তাদের দুই ছেলে এবং মুছার বড় ভাই সাইদুল ইসলাম সিকদার নগরীতে এক আত্মীয়ের বাসায় গিয়েছিলেন। সকাল ৯টার দিকে একদল পুলিশ ওই বাসায় গিয়ে হাজির হয়। পুলিশ সবাইকে বন্দর এলাকায় একটি বাসায় নিয়ে গিয়ে আটকে রাখে। সকাল ১১টার দিকে মুসা ও তার ভাইকে রেখে বাকিদের ছেড়ে দেয়।
আটকের ১০ দিন পর গত শুক্রবার মুসার ভাই সাইদুল ইসলাম শিকদার সাকুকে পুলিশ গ্রেপ্তার দেখালেও কিন্তু ১৩ দিন ধরে কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না মুসার বলে অভিযোগ করেন পান্না আক্তার। তিনি বলেন, আমি রাঙ্গুনিয়া থানায় জিডি করতে গিয়েছিলাম, কিন্তু আমার জিডি গ্রহণ করেনি।
সিসিটিভি ফুটেজে ঘটনাস্থলে মুসাকে দেখা গেছে বলা হলেও তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন পান্না আক্তার।
প্রসঙ্গত, গত ৫ জুন চট্টগ্রাম নগরীর জিইসির মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে গিয়ে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাত ও গুলিতে খুন হন এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনার পরদিন পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
৪ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম