চট্টগ্রাম: রাজধানীর কল্যাণপুরে পুলিশি অভিযানে নিহত ৯ জঙ্গির মধ্যে আনোয়ারার সাব্বিরুল হক কণিক নেই। সাব্বিরের দুই নিকটাত্মীয় বৃহস্পতিবার রাতে মর্গে গিয়ে এই বিষয়ে নিশ্চিত হন। প্রকৃতপক্ষে যাকে সাব্বিরের লাশ মনে করা হচ্ছিল তা সাব্বিরের নয়। এর আগে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া জঙ্গি হাসান নিহতদের একজনের নাম সাব্বির উল্লেখ করেছিল।
এতে সাব্বিরের পরিবার ও স্বজনরাও প্রথমে ছবি দেখে নিহতদের ৯ জনের মধ্যে একজনকে সাব্বির বলে সন্দেহ করেছিল। এখন এটি নিশ্চিত হওয়ার পর সকলেরই প্রশ্ন সাব্বির তাহলে কোথায়? সে আদৌ বেঁচে আছে; নাকি জঙ্গিদের সাথে মিছে গেছে। তা নিয়ে গ্রামে জল্পনা-কল্পনার যেন শেষ নেই।
সাব্বিরের পারিবার ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, গত ২৯শে ফেব্রুয়ারি রাউজানে একটি অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা বলে আর ফিরে আসেনি সাব্বির। সে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদালয় চট্টগ্রামের (আইআইইউসি) ৪র্থ সেমিস্টারের ছাত্র। এরপরেই সাব্বিরের সন্দেহজনক তৎপরতা ও ফেসবুকের এক্টিভিটিজের কারণে পরিবার সন্দেহ করছে সে কোনো জঙ্গি দলে জড়িয়ে পড়েছে।
সাব্বির উপজেলার বরুমচড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আজিজুল হকের ছেলে। সাব্বিরের চাচাত ভাই ওয়াহিদুল আলম বাপ্পা ও আত্মীয় মোনায়েম খান ঢাকায় মর্গে গিয়ে লাশ দেখে আসেন। এরপর তারা নিশ্চিত হন লাশটি আসলে সাব্বিরের নয়।
পরে সাব্বিরের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বরও পুলিশকে জানানো হয়। ফিঙ্গার প্রিন্ট চেক করে পুলিশ জানায়, নিহতদের মধ্যে মূলত সাব্বির নেই। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত স্বজনরা বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গায় ছুটে যান।
মর্গে লাশ দেখতে যাওয়া সাব্বিরের চাচাত ভাই ওয়াহিদুল আলম বাপ্পা সাংবাদিকদের বলেন, প্রথমে পরিচয় নিশ্চিত না হওয়া মরদেহটি দেখেছি। পরে পরিচয় পাওয়া ৮ জনের লাশও দেখানো হয়। কিন্তু সেখানে সাব্বিরের সঙ্গে কারো চেহারার মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সাব্বিরের পিতা আজিজুল হক চৌধুরী জানান, লাশ শনাক্তের জন্য বৃহস্পতিবার তিনি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। সীতাকুণ্ড পর্যন্ত পৌঁছার পর অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি বাসায় ফিরে আসেন। তারপর ওই দুই আত্মীয়কে ঢাকায় পাঠান। তারা প্রত্যেকটি মরদেহ দেখে নিশ্চিত হন সেখানে সাব্বির নেই।
এদিকে আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল লতিফ জানান, সাব্বিরকে শনাক্ত করার জন্য তার পরিবারের লোকজন ঢাকায় গিয়েছিলেন। তারা মর্গে ৯ জনের লাশ দেখে কোনটিই সাব্বিরের নয় বলে নিশ্চিত হয়েছেন।
এর আগে সাব্বিরের পিতা আজিজুল হক চৌধুরী পুলিশকে জানিয়েছেন তার ছেলে জঙ্গির দলে গেছে, সেটা অনেকটাই নিশ্চিত। তাকে খুঁজে বের করার জন্য তিনি প্রশাসন ও দেশবাসীর সহযোগিতা চেয়েছেন।
মূলত সাব্বিরকে নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল রাজধানী কল্যাণপুরে আটক হওয়া গুলিবিদ্ধ জঙ্গি হাসানের জবানবন্দি থেকে। নিহত ৯ জঙ্গির মধ্যে ৮ জনের নাম জানাতে পেরেছিল সে। আর সেই ৮ নম্বর নামটিই ছিল ‘সাব্বির’।-এমজমিন
৩০জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ