গাইবান্ধা : ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফেরা মানুষ ঢাকা যাওয়ার জন্য গাইবান্ধার বাস কাউন্টারগুলোয় ঘণ্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকেও কোনও টিকিট পাচ্ছেন না। অনেক কষ্টে টিকিট পাওয়া গেলেও দাম নেওয়া হচ্ছে দ্বিগুণ।
শুক্রবার শহরের বিভিন্ন বাস কাউন্টারে দেখা গেছে, ফিরতি টিকিটের জন্য মানুষের উপচেপড়া ভিড়। পরিবহনের লোকজন বলছেন, ‘টিকিট নেই। আগাম বিক্রি হয়েছে।’ অথচ দালালদের বিভিন্ন কাউন্টারের আশপাশে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায়।
গাইবান্ধা যুব নাগরিক ফোরামের আহ্বায়ক আনোয়ারুল কবির অভিযোগ করেন, ‘বাস কাউন্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা নিজেরাই টিকিট কেটে রাখেন। পরে তারা দালালদের মাধ্যমে বেশি দামে কালোবাজারে বিক্রি করে টুপাইস কামাচ্ছেন। প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’
ঈদের ছুটিতে বাড়ি আসা গাইবান্ধা সদর উপজেলার খোলাহাটি গ্রামের পোশাকশ্রমিক আমজাদ আলী বলেন, ‘শুক্রবার সকালে গাইবান্ধায় একটি টিকিটের জন্য পাঁচটি কাউন্টারে ঘুরেও কোনও টিকিট পাইনি। পরে এক দালালের কাছ থেকে একটি পরিবহনের ৫১০ টাকার টিকিট ১ হাজার টাকা দিয়ে নিলাম।’
একই উপজেলার বোয়ালি গ্রামের চাকরিজীবী মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘শুক্রবার সকালে এসআর কাউন্টারে গিয়ে ঢাকার টিকিট পাইনি। কাউন্টার থেকে ফেরার সময় এক দালাল বললেন, ভাই এসি গাড়ির টিকিট আছে। ১ হাজার ২০০ টাকা লাগবে। উপায় নেই। কর্মস্থলে ফিরতে হবে। বাধ্য হয়ে ওই টাকায় টিকিট নিলাম। অথচ অন্য সময় ঢাকা যাওয়ার এসি টিকিট ৬০০ টাকায় বেচাকেনা হয়।’
শহরের ভিএইড রোডের বাসিন্দা রিজন মিয়া বলেন, ‘শুক্রবার ছোট ভাইয়ের জন্য ঢাকা যাওয়ার টিকিট নিতে হানিফ পরিবহনের কাউন্টারে গিয়েছিলাম। যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জানিয়ে দেওয়া হলো, টিকিট নেই। পরে কাউন্টারের সামনে দাঁড়ানো এক দালালের কাছে ৪৫০ টাকার টিকিট ৯০০ টাকায় কিনলাম।’
সাদুল্লাপুর উপজেলার শেরপুর গ্রামের কাকন অভিযোগ করেন, ‘হানিফ পরিবহনের টিকিট না পেয়ে ট্রেনের টিকিটের জন্য গাইবান্ধা রেলস্টেশনে গেলাম। সেখানেও একই অবস্থা। ২০০ টাকা বেশি দিয়ে এক হকারের কাছে ঢাকার টিকিট কিনলাম।’
জেলা মোটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নাজিবুল হক বিকেলে মুঠোফোনে বলেন, ‘অতিরিক্ত দামে ও কালোবাজারে টিকিট বিক্রির কথা শুনেছি। এ নিয়ে সভা ডাকা হয়েছে।’
গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মেহেদী হাসান বলেন, ‘কালোবাজারে টিকিট বিক্রির অভিযোগ পাইনি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবো।’ -বাংলা ট্রিবিউন।
১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম