গাইবান্ধা থেকে : গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সরকারি দলের সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যার ঘটনায় জামায়াত-শিবির জড়িত বলে দাবি করেছেন তার স্ত্রী খুরশিদ জাহান স্মৃতি। অথচ লিটনের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও জামায়াত নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করেন স্মৃতি।
এমনকি নিয়োগ বাণিজ্য থেকে শুরু করে টেন্ডার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে তাদের ঠিকাদারির কাজও পাইয়ে দিতেন এমপি পত্নী স্মৃতি। এ নিয়ে লিটনের সঙ্গে স্মৃতির একাধিকবার বিরোধও তৈরি হয়েছে।
নভেম্বরের প্রথম দিকে নিয়োগ বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে স্মৃতির ঘনিষ্ঠ জামায়াত নেতা মাসুদুর রহমান ওরফে মিসকিন মুকুলকে মারতে গিয়েছিলেন লিটন। খোলস পাল্টানো এই জামায়াত নেতাকে লিটনের কাছে নিয়ে যান ছাত্রলীগের দুই নেতা আবদুল্লাহ ও লোকমান। তাদের সঙ্গে উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আহসান কবীর মাসুদের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে।
লিটন হত্যার ঘটনায় দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের পর মাসুদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। স্থানীয় আওয়ামী লীগ, পুলিশ ও একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এদিকে গত দু’দিনে লিটন হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৮ জনের মধ্যে সাতজনকে ৭ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পেয়েছে পুলিশ। তাদের মধ্যে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আহসান কবীর মাসুদও রয়েছেন। তার সঙ্গে জামায়াত নেতাদের যোগাযোগ ছিল বলে বিভিন্ন সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সুন্দরগঞ্জের সাবেক এমপি ও জামায়াত নেতা আবদুল আজিজ ওরফে ঘোড়ামারা আজিজের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন মাসুদুর রহমান ওরফে মিসকিন মুকুল। তিনি ঘোড়ামারা আজিজের সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে পরিচিত ছিলেন। লিটন এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি লিটনের স্ত্রী স্মৃতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা স্থাপন করেন।
স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আহসান কবীর মাসুদের ঘনিষ্ঠ দুই ছাত্রলীগ নেতা লোকমান ও আবদুল্লাহ তাকে এমপির স্ত্রীর কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন।
স্মৃতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হওয়ার পর নিয়োগ বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েন তিনি। খোলস পাল্টানো এই জামায়াত নেতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা থাকার কারণে স্ত্রীর সঙ্গে বিভিন্ন সময় লিটনের মনমালিন্যও হয়েছে। নিয়োগ বাণিজ্যকে কেন্দ্র করে লিটন মিসকিন মুকুলকে বিভিন্ন সময় আলিটমেটামও দিয়েছেন। শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে তিনি অনেকের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিয়ে পরে আর চাকরি দেননি।
নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ঢাকায় ন্যাম ভবনে এ নিয়ে মিসকিন মুকুলকে মারতেও যান লিটন। সার্বিক বিষয়ে পুলিশ বলছে, শিগগিরই লিটন হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচিত হবে।
গাইবান্ধা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম জানান, ‘রহস্যের জট খুলতে পুলিশ আলোর সন্ধান পেতে শুরু করেছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা হত্যা রহস্য উন্মোচন করতে পারব।’ যুগান্তর
১০ জানুয়ারি ২০১৭/এমটিনিউজ২৪/এসএস