এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : গাইবান্ধার ফুলছড়িতে প্রেমিকার বাবা ও স্বজনদের অমানবিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে রিয়াদ (২৩) নামে এক কলেজছাত্রের আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (১৯ অক্টোবর) সকালে উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের নিজ বাড়ির টয়লেট থেকে গলায় রশি বাঁধা অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
রিয়াদ কঞ্চিপাড়া গ্রামের রহমত আলীর ছেলে। তিনি ডিগ্রি ১ম বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
পরিবার জানায়, দুপুরে রিয়াদের ডায়েরি থেকে চার পৃষ্ঠার একটি চিরকুট উদ্ধার করেন তারা। সেখানে প্রেমিকা ও প্রেমিকার বাবাসহ মোট পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে নির্যাতনের বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। পাশাপাশি বাবা-মা ও ভাইয়ের কাছে ক্ষমা চেয়ে তাকে দেওয়া নির্যাতনের বিচার চেয়েছেন। ডায়েরির কিছু অংশ ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ডায়েরির তৃতীয় পাতায় রিয়াদ লিখেছেন—
‘আমি জানি আমার কথার কেউ মূল্য দিবে না... আল্লাহ ঠিকই বিচার করবে... আমার জন্য আমার আল্লাহই যথেষ্ট।’
এরপর তিনি প্রেমিকা ও তার বাবা সেলিম মিয়া, আত্মীয় মো. মোওলা মিয়া, মো. শাকয়াত মেম্বার ও মো. ফারুক পেশকারের নাম উল্লেখ করে লিখেছেন—
‘আল্লাহ সবার বিচার করিও।’
নির্যাতনের বর্ণনায় রিয়াদ লেখেন—
‘আমায় এত মেরেছে, হাতে কলমও ঠিক করে ধরতে পারছি না। কানে কিছুই শুনতে পারছি না, শুধু ঝ ঝ শব্দ করছে। সকাল হলে এই মুখ কেমনে দেখাব? সব ভেবে এই রাস্তা বেছে নিলাম।’
শেষে পরিবারের উদ্দেশে তিনি লেখেন—
‘আব্বু, আম্মু, শাম ভাইয়া সবাই আমায় মাফ কইরো। সিয়া আর ওর পরিবার যে কষ্ট দিছে, আমি আর বাঁচতে পারতাম না। তোমরা ওর বিচার করিও।’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রেমিকার বাড়ি সৈয়দপুর এলাকায়। সেলিম পেশায় বালু ব্যবসায়ী। ডায়েরিতে উল্লেখিত অন্যরা তার আত্মীয়।
রিয়াদের বড় ভাই রিপন সকালে টয়লেটে ঢুকে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে রশি কেটে নামান। পরে ফুলছড়ি থানা-পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।
ফুলছড়ি থানার এসআই রুহুল আমিন বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি।’