বুধবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৬, ০৩:০২:২০

কেশবপুরে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি

কেশবপুরে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি

কেশবপুর থেকে : যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে হরিহর নদ অববাহিকায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে উপজেলার ৫২টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার পরিবার। উপজেলার ২১টি আশ্রয়কেন্দ্রে এক হাজার ৬৯৪ পরিবারের সাত হাজার ৩৭৫জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে বলে স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
 
এছাড়া বন্যার পানির কারণে শত শত পরিবার এখনও বাড়িঘর ছেড়ে আসতে পারেনি। অন্যদিকে বুড়িভদ্রা, হরিহর ও আপারভদ্রা নদীর পানি বিপদ সীমার চার ফুট ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী আবদুল মোতালেব জানান। তিনি বলেন, এখনও নতুন নতুন এলাকায় পানি ঢুকছে।
 
যশোর-সাতক্ষীরা সড়কের ১০টি স্থান পানিতে তলিয়ে গেছে। যে কোনো সময় সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাবে বলে শ্রমিক নেতা ফজর আলি জানান। প্লাবিত যশোর-সাতক্ষীরা সড়ক পরিদর্শন করেছেন কেশবপুরের পৌর মেয়র রফিকুল মোড়ল।
 
গ্রামাঞ্চলে পানিবন্দি অনেকে সাপ, পোকামাকড়সহ বানের পানিতে ভেসে আসা ময়লা আবর্জনার মধ্যে মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। প্লাবিত এলাকায় শিশু খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে। কেশবপুর হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শেখ শাহিন বলেন, সার্বক্ষণিক মেডিকেল টিম কাজ করছে।
 
উপজেলায় বিদ্যুৎ ব্যবস্থা এখনও স্বাভাবিক হয়নি। পৌর এলাকার অনেক স্থানে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে বলে জানা যায়।
 
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বিপুল কুমার মালাকার বলেন, উপজেলার ২০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ২১টি আশ্রয়কেন্দ্রে এক হাজার একশ' পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। ৩৯ মেট্রিক টন চাল বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে উপজেলায়।
 
স্থানীয় এমপি সংসদ সদস্য ও জন প্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক ব্যক্তিগত তহবিল থেকে এক লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন।
 
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ হাজার ৭৯৪ হেক্টর জমির আউশ, আমন, সবজি ও পানের ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তৌফিকুল ইসলাম বলেন, বন্যার পানিতে ৮৯ কোটি ১৭ লাখ ৮৫ হাজার ৩১৫ টাকার মাছ ভেসে গেছে।
 
উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, বন্যার পানিতে মাধ্যমিক স্কুল, মাদরাসা, কলেজ ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মিলে ২০৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফ রায়হান কবির বলেন, ‘পানিবন্দী মানুষের ত্রাণ সাহায্যের পাশাপাশি মঙ্গলবার আমরা উপজেলা পরিষদ থেকে পাঁচ লাখ টাকার শুকনা খাবার বিতরণ করেছি। পানিবন্দী মানুষের দুঃখ লাঘবে আমরা সব চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

২৪ আগস্ট ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস‌‌‌‌

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে