যশোর : ‘আমি ওর মা। কিন্তু আর সহ্য করতে পারছি না। নেশার জন্য ও অমানুষ হয়ে গেছে। আপনাদের কাছে ওকে ধরে নিয়ে এসেছি। আপনারা ওর বিচার করেন।’ এক নেশাগ্রস্ত ছেলের অসহায় মায়ের আকুতি এটি। ছেলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ মা গত বুধবার রাতে স্বজনদের সহযোগিতায় হাত-পা বেঁধে ছেলেকে থানায় পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
জানা গেছে, নেশাগ্রস্ত ওই যুবকের নাম কেরামত আলী ছোট্টু। নেশার টাকার জন্য মায়ের গায়ে হাত দিতেও কুণ্ঠাবোধ করেননি তিনি। মা বাধ্য হয়ে সহায়-সম্পদ বিক্রি করে ছেলের হাতে টাকা তুলে দিয়েছেন। তাতে দিনে দিনে ছেলে কেবল বেপরোয়াই হয়ে উঠেছে। যে কারণে শেষমেশ তিনি স্বজনদের সহযোগিতায় ছেলেকে দড়ি দিয়ে বেঁধে ভ্যানে করে যশোরের কোতোয়ালি মডেল থানায় নিয়ে আসেন। গত বুধবার রাতে থানার ওসির কাছে ছেলেকে বুঝিয়ে দিয়ে তাঁর বিচার দাবি করেন।
সূত্র মতে, শহরতলির রামনগর কাজীপুর এলাকার বেলায়েত হোসেনের ছেলে ছোট্টু। ছেলে ভালো হবে, নেশার পথ থেকে ফিরে আসবে, এ জন্য মা রাহেলা বেগম তাঁকে বিয়ে দিয়েছিলেন; কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। পরিস্থিতি এমন হয় যে সন্তান নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান ছোট্টুর স্ত্রী।
প্রতিবেশীরা জানায়, ছোট্টু ১৪ বছর বয়সে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। এখন তিনি প্রতিনিয়ত নেশা সেবন করেন। এলাকার ব্যবসায়ীরা তাঁকে দিয়ে কিছুদিন নেশার বড়িও বিক্রি করিয়েছে। নেশার টাকা জোগাড়ের জন্য ছোট্টু বাড়ির বাসনকোসন পর্যন্ত বিক্রি করে দিয়েছেন। পাশাপাশি গ্রামেও তিনি প্রতিনিয়ত নেশার টাকা জোগাড়ের জন্য চুরিচামারি করতেন।
ছোট্টুর মা রাহেলা বেগম বলেন, ‘আমি থানায় এসেছি পুলিশ তাকে ফাঁসি দিক জেল দিক তাতে আমার কোনো আপত্তি নাই।’
এ বিষয়ে যশোরের কোতোয়ালি থানার ওসি ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
২৬ আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ/সৈকত/এমএম