যশোর : স্ত্রীর স্বীকৃতি পাওয়ার দাবিতে যশোরের মণিরামপুরে স্বামীর বাড়িতে অনশন করছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী মুসলিমা খাতুন। দরিদ্র পরিবারের মেয়ে হওয়ায় শ্বশুর তাদের বিয়ে মেনে নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
গত দু’দিন ধরে স্বামী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাইসুল ইসলামের বাড়ি মণিরামপুরের চাকলা গ্রামে অনশন করছেন তিনি।
মুসলিমা খাতুন সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার খোর্দ্দ গ্রামের ইয়ার আলীর মেয়ে। রাইসুল মণিরামপুরের চাকলা গ্রামের আইয়ুব বিশ্বাসের ছেলে। স্বামীর বাড়িতে স্ত্রীর এ অবস্থান নিয়ে গোটা এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, চাকলা ও খোর্দ্দ গ্রাম দু’টি দুই জেলার হলেও পাশাপাশি অবস্থান। দুই গ্রামের দূরত্ব মাত্র এক কিলোমিটার।
রাইসুল ও মুসলিমা দুই জেলার বাসিন্দা হলেও একই কলেজে লেখাপড়া করেছে তারা। এ সূত্রেই তাদের পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক হয়। এরই মধ্যে উচ্চশিক্ষার জন্য রাইসুল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং মুসলিমা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়।
মুসলিমার দাবি, ২০১৪ সালের ১৬ জানুয়ারি যশোরে ইসলামী শরিয়া মোতাবেক এক লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেন তারা। এরপর দু’জন প্রায় তিন বছর ধরে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করছেন।
সম্প্রতি তাদের বিয়ের বিষয়টি রাইসুলের বাবা জানতে পারেন। কিন্তু মুসলিমার পরিবার দরিদ্র হওয়ায় রাইসুলের বাবা আইয়ুব বিশ্বাস বিয়ে মেনে না নিয়ে উল্টো ছেলের বউকে ছেড়ে দিতে চাপ প্রয়োগ করছেন।
মুসলিমার দাবি, সর্বশেষ গত ৭ সেপ্টেম্বর রাতে রাইসুলের সঙ্গে তার কথা হয়। এ সময় ঈদে স্বামীর বাড়িতে আসতে চাইলে রাইসুল ফোন কেটে দেয়। এরপর থেকে রাইসুল এড়িয়ে চলতে থাকে।
বিষয়টি বুঝতে পেরে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে বৃহস্পতিবার স্বামী রাইসুলের বাড়িতে অবস্থান নেয় মুসলিমা।
মুসলিমা স্বামীর বাড়িতে আসার পর তাকে তাড়িয়ে দিতে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি জানাজানি হলে রাইসুল গা-ঢাকা দেয়। তার মা-বাবাও বাড়ি থেকে চলে যায়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বলেন, মুসলিমাকে ছেলের বউ হিসেবে মেনে নেয়া উচিত। তারা অনেক আগেই বিয়ে করেছে।
রাইসুলের চাচা শাহাদাৎ বিশ্বাস জানান, বিষয়টি মীমাংসার জন্য আলোচনা চলছে।
শুক্রবার মুসলিমা জানান, তার পরিবারের সদস্যরা রাইসুলের বাড়িতে এসেছে। দু’পক্ষের মধ্যে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। স্ত্রীর স্বীকৃতি না পাওয়া পর্যন্ত রাইসুলের বাড়িতে থাকবেন বলে জানান।
খোর্দ্দ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শেখ শোয়েব আলী বলেন, দু’পক্ষকে বসে বিষয়টি মীমাংসার জন্য বলা হয়েছে। মীমাংসা না হলে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
১৬ সেপ্টেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম