যশোর থেকে : সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলছে এক যুবকের শার্ট। পাশেই নিচে পড়ে রয়েছে ফেলানীর মতো আরেক বাংলাদেশির মরদেহ। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে নিহত ফেলানীর মতো একই কায়দায় এই যুবককেও নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে বলে প্রাথমিক ধারণা করছেন স্থানীয়রা।
ঘটনাটি ঘটেছে যশোরের বেনাপোল সীমান্তে জিরো লাইনে ১৮-এ ৩ এস পিলারের পাশেই। বুধবার সন্ধ্যায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। মরদেহটি সেখানে পড়েছিল। তবে প্রাথমিকভাবে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সরেজমিনে জানা যায়, ব্যাপক নিরাপত্তা বেষ্টনিতে রয়েছে ভারতের পেট্রাপোল টার্মিনাল। তিন শতাধিক বিএসএফ দায়িত্বে রয়েছেন সেখানে। টার্মিনালের প্রাচীরের উপরে কাঁটাতার দিয়ে বেড়া তৈরি করা হয়েছে। বিএসএফ বা অন্য কেউ টার্মিনালের ভেতরে থাকা কোনো ড্রাইভার বা হেলপারকে মেরে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে দিতে পারে। একপর্যায়ে কাঁটাতার থেকে মরদেহটি নিচে পড়ে যায়। তবে নিহতের গায়ের শার্ট সেখানেই ঝুলে রয়েছে।
বিজিপি ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিকেলে বেনাপোল সীমান্তের জিরো লাইনে ১৮-এ ৩ এস পিলারের পাশেই পেট্রাপোল বন্দর নতুন টার্মিনাল (কাঁটাতার বেষ্টিত) প্রাচীরের পাশেই একটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন পান এক বাংলাদেশি নারী। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে পুলিশ ও বিজিবিকে খবর দেয়া হয়। এ সময় মরদেহ দেখতে মাঠে ভিড় করে আশপাশ এলাকার লোকজন।
বেনাপোল বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার নায়েক সুবেদার গিয়াস উদ্দিন বলেন, এই মুহূর্তে নিহতের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তবে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তকর্তারা এ বিষয়ে ভারতের বিএসএফ কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে ভারত থেকে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীর অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে বাবার সঙ্গে বাড়ি ফিরছিল কিশোরী ফেলানী। ভোর সোয়া ৬টার দিকে দালালের মাধ্যমে মই বেয়ে কাঁটাতারের বেড়া পার হওয়ার সময় বিএসএফের গুলিতে তার মৃত্যু হয়। কাঁটাতারে কয়েক ঘণ্টা ধরে ঝুলতেছিল লাশ। পরে বিএসএফ লাশ নামিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে নিয়ে যায়। এরপর ব্যাপক সমালোচনার লাশ ফেরত দেয়। এ হত্যা মামলার বিচারে বিএসএফের আদালতে আসামি অমিয় ঘোষকে খালাস দেয়া হয়। বাংলাদেশের দাবিতে পুনর্বিচার হলেও রায় একই থাকে।
২৬ অক্টোবর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি