বুধবার, ০২ আগস্ট, ২০১৭, ০৯:৩৪:০৬

কেশবপুরে ব্যবসায়ীদের মানববন্ধনে সন্ত্রাসী হামলা

কেশবপুরে ব্যবসায়ীদের মানববন্ধনে সন্ত্রাসী হামলা

এস আর সাঈদ, কেশবপুর (যশোর) থেকে : কেশবপুরের চিংড়া বাজারে ব্যবসায়ীর উপর হামলার প্রতিবাদে ব্যবসায়ীরা বুধবার অর্ধদিবস দোকান বন্ধ রেখে ধর্মঘট ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে। ব্যবসায়ীদের শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে পুনরায় সন্ত্রাসী হামলায় পুলিশ-সহ ২০ জন আহত হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে যেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আনে।

পুলিশ, এলাকাবাসি ও আহতরা জানায়, উপজেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মজনু, সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি ইয়াছিন, ছাত্রদল নেতা শাহীন ও সবুজ মঙ্গলবার রাতে চিংড়া বাজারের চা দোকানী আমিনুর রহমানের দোকানে ঝুলিয়ে রাখা বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক কাজী আজাহারুল ইসলাম মানিকের একটি পোষ্টার নামাতে বলে।

পোষ্টার নামাতে রাজি না হওয়ায় মজনু চা দোকানী আমিনুর রহমানকে এলোপাতাড়ি মারপিট করতে থাকে। এ সময় পার্শ্ববর্তী হোটেল ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলাম ও ব্যবসায়ী ইসলাম শেখ তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে এলে তাদেরও বেধড়ক মারপিট করে আহত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই রাতে তিন ব্যবসায়ীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ সময় মজনুর সহযোগী ৭নং চিংড়া ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদেরের ছেলে মিলন হাসপাতালে এসে আবারও রেজাউলকে মারপিট করে। ওই ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার সকালে বাজারে ব্যবসায়ীরা সকল দোকান বন্ধ করে ধর্মঘট ও মানববন্ধন করে। এ সময় বিএনপি নেতা বজলুর রহমান, রফিকুল ইসলাম ও ছাত্রদলের ওই নেতারা ব্যবসায়ীদের মানববন্ধনে হামলা করে।

এ সময় দুই গ্রুপের মধ্যে হামলা পাল্টা হামলায় চিংড়া বাজার রণক্ষেত্রে পরিনত হয়। চিংড়া ফাঁড়ির পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারায় পার্শ্ববর্তী ভালুকঘর ফাঁড়ি ও কেশবপুর থানার অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। এ সময় পুলিশসহ ২০ জন আহত হয়।

আহত সিরাজুল ইসলাম, আতিয়ার রহমান খা, জিয়াউল ইসলাম, শবিদুল ইসলাম, সোহরাব হোসেন, রফিকুল ইসলাম, মোস্তফা, মামুন ও মিলন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে।

চিংড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনর্চাজ উপপরিদর্শক রেজাউল করিম জানান, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। সংঘর্ষের ঠেকাতে যেয়ে আব্দুল আলিম নামে এক পুলিশ কনস্টেবল আহত হয়েছে।

চিংড়া বাজার কমিটির সভাপতি ও উপজেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক কাজী আজাহারুল ইসলাম মানিক বলেন, গত ইউপি নিরর্বাচনের সময় বহিষ্কৃত সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আতিয়ার রহমানের নির্দেশে তার আপন ভাই বিএনপি নেতা বজলু ও রফিকের নেতৃত্বে বিএনপি ও ছাত্রদলের সন্ত্রাসীরা ব্যবসায়ীদের শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে হামলা চালায়।

এলাকাবাসি জানায়, গত ইউপি নির্বাচনে সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান কাজী মোস্তাফিজুল ইসলাম মুক্ত ও বিদ্রোহী প্রার্থী আওয়ামী লীগনেতা সাবেক চেয়ারম্যান শাহাদত হোসেনের মধ্যে দ্বন্দ চলে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় এসব ঘটনা ঘটেছে।

কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ এস এম আনোয়ার হোসেন জানান, ওসি তদন্ত শাহজাহান আহম্মেদ মঙ্গলবার রাতে ও বুধবার সকালে ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। এ ব্যাপারে এখনো থানায় লিখিত কোন অভিযোগ হয়নি।

উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাগরদাঁড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী মোস্তাফিজুল ইসলাম মুক্ত বলেন, চিংড়া বাজারে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ চা খেয়ে টাকা না দিয়ে চলে যায়। এঘটনার প্রতিবাদ করলে ব্যবসায়ীদের মারপিট করা হয়। তারা বিএনপির লোক। আওয়ামীলীগের কয়েক নেতা ইন্ধন রয়েছে তাদের পিছনে।

তবে, সাবেক চেয়ারম্যান শাহাদত হোসেন এ ব্যাপারে কিছু জানেন না বলে জানান। উভয় পক্ষের মধ্যে চরম উত্তজনা বিরাজ করছে।
এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে