যশোর : প্রায় দেড় বছর পর খুঁজে পাওয়া হালিমা পাগলীর আমানতের ১০ হাজার টাকা তার হাতে তুলে দিয়ে মানবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন এসআই শরীফ।
ঘটনাটি ঘটে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায়। বর্তমানে তিনি যশোর সদর কোর্টে কর্তব্যরত আছেন। এ ঘটনায় এসআই শরীফকে বাহবা জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এসআই শরীফ বলেন, ঝিকরগাছা থানায় সেকেন্ড অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ২০১৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর থানার সামনে জামাল উদ্দিনের হোটেলে বসেছিলাম। এ সময় ক্ষুধার্ত এক পাগলী কোথা থেকে দৌড়ে আসেন আমার কাছে। পাগলী যা খেতে চায় তা দিতে বলি হোটেল মালিককে। খাওয়া শেষে কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই পাগলী ১০ হাজার টাকা একটি কাগজে মোড়ানো অবস্থায় আমার কাছে দিয়ে বলেন, তুই আমার রড ও সিমেন্ট কিনে দিবি, আমি বাড়ি বানাব। এ কথা বলেই দৌড়ে পালিয়ে যান ওই পাগলী।
এসআই শরীফ আরও বলেন, কাগজে মোড়ানো টাকা দেখে পাগলীকে খুঁজতে থাকি ফেরত দেয়ার জন্য। ঝিকরগাছায় অবস্থানকালে স্থানীয় এলাকাবাসী অনেকের কাছে পাগলীর সন্ধান চেয়েও পাইনি। কয়েকদিন আগে আমাকে ওই পাগলীর সন্ধান জানান ঝিকরগাছা থানার সামনে হোটেল ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিন। রোববার সন্ধ্যার পর জামাল উদ্দিন ওই পাগলীর ঝিকরগাছার কাটাখাল কালিতলার জীর্ণ কুটিরে যেয়ে তাকে দেখে চিনতে পারেন। স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পারি তার নাম হালিমা বেগম। দুই সন্তান থাকলেও তারা এলাকার বাইরে থাকেন। স্বামী বিল্লাল হোসেন মারা যাওয়ায় এখন একাই ওই কুটিরে থাকেন পাগলী।
তিনি আরও বলেন, সোমবার বিকেলে জামাল উদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে অসুস্থ হালিমা পাগলীর জন্য কিছু ফল নিয়ে কালিতলা এলাকায় তার বাড়িতে যাই। এ সময় স্থানীয় এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে হালিমা পাগলীর সেই আমানতের ১০ হাজার টাকা তার হাতে তুলে দেই।
এ বিষয়ে পুলিশের এসআই শরীফ বলেন, আমি প্রায় দেড় বছর ধরে এক অজানা অস্বস্তিতে ভুগছিলাম, আজ মুক্ত হলাম। পাগলীর আমানত তাকে ফেরত দিয়ে স্বস্তি পেলাম।