শনিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২২, ০৮:১৭:০৬

কাগজের ব্যাগ ব্যবহার করে সবুজ মাল্টা চাষে সফল, দ্বিগুণ দামে বিক্রি!

কাগজের ব্যাগ ব্যবহার করে সবুজ মাল্টা চাষে সফল, দ্বিগুণ দামে বিক্রি!

এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : ঝিনাইদহের কৃষক আবুল কালাম আজাদ কাগজের ব্যাগ ব্যবহার করে বারি-১ জাতের দেশীয় সবুজ মাল্টা কমলা রঙে রাঙিয়ে সফল হয়েছেন। এই মাল্টার রস ও স্বাদ অনেক মজাদার। বাজারে বেশ চাহিদাও রয়েছে। মিসরীয় মাল্টার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে তিনি এই মাল্টা দ্বিগুণ দামে বিক্রি করছেন। কাগজের ব্যাগ ব্যবহার করায় সবুজ মাল্টার রঙ কমলা হওয়ায় এর স্বাদ ও রস বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানায় কৃষি বিভাগ।

জানা যায়, কৃষক আবুল কালাম আজাদ ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গাগান্না গ্রামের বাসিন্দা। তিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য। অবসর প্রাপ্তির পর গ্রামে কৃষি খামার গড়ে তুলেছেন। আট বিঘা জমিতে খামার গড়ে তুলেছেন তিনি। দুই বছর হলো সেখানে চাষাবাদ করছেন। যেখানে মাল্টা, দার্জিলিং কমলা ছাড়াও নানা জাতের ফল চাষাবাদ করছেন। তার বাগানে ২৪০টি বারি-১ জাতের মাল্টাগাছে ব্যাগ পদ্ধতি ব্যবহার করে সবুজ মাল্টা কমলা রঙে রাঙিয়েছেন। ইতিমধ্যে মাল্টা, কমলা বিক্রিও করেছেন। প্রায় ২৬ লাখ টাকা খরচ করে শুরুতেই ফল বিক্রি করে পেয়েছেন ৬ লাখ টাকা।

খামারি আবুল কালাম আজাদ বলেন, সেনাবাহিনীর চাকরি শেষে বাড়ি ফিরে কৃষিকাজে নেমে পড়ি। ৮ বিঘা জমিতে খামার গড়ে তুলেছি। সেখানে মাল্টা, দার্জিলিং কমলা ছাড়াও নানা জাতের ফল চাষ করছি। তবে বারি-১ জাতের মাল্টা বাজারে যে কম মূল্যে বিক্রি হয় সেটা আমার জানা ছিল না। 

মাল্টা ও কমলা চাষের মাঝামাঝি সময়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মফিজুর রহমানের সাথে কথা হয়। তিনি মাল্টার রং ও স্বাদ পরিবর্তন করে বেশি দামে বিক্রির কৌশল শেখান। পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি গাছে ব্যাগ বেঁধে দেন। কিছুদিন পর এসে ফল পরীক্ষা করে দেখতে পান, ফলের স্বাদ ঠিক আছে, রসের পরিমাণও বেড়েছে। তা ছাড়া গাছের ফল প্যাকেটে থাকায় পচন ধরেনি, ফলগুলোও ভালো থাকছে।

তিনি আরো বলেন, ব্যাগ কিনে আমার বাগানের বারি-১ জাতের ২৪০টি মাল্টাগাছে আসা সব ফলে কাগজের প্যাকেট বেঁধে দিয়েছি।ইতিমধ্যে সাড়ে সাত হাজার ব্যাগ কিনেছি। গাছে গাছে ব্যাগ ঝুলছে। প্রতিটি ব্যাগ সাড়ে চার টাকা দিয়ে ক্রয় করেছি। এগুলো ফল জড়িয়ে বেঁধে দিলেই হয়, আর কোনো কাজ নেই। পাঁচ থেকে ছয়টি মাল্টায় এক কেজি হয়। 

এতে এক কেজিতে ব্যাগের জন্য খরচ হচ্ছে প্রথম পর্যায়ে ২২ থেকে ২৬ টাকা। বাজারে এক কেজি মিসরীয় মাল্টা ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর দেশীয় বারি-১ জাতের মাল্টা বিক্রি হয় ৫৫-৬০ টাকায়। সেখানে রং পরিবর্তনের পর বিক্রি হচ্ছে ১০০-১১০ টাকা। এতে কেজিতে প্রায় ৫০ টাকা বেশি পাচ্ছি। আবার এই ব্যাগ তিনবার ব্যবহার করতে পারছি।

উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মফিজুর রহমান বলেন, আমি নিয়মিত কৃষক আবুল কালাম আজাদের বাগান পরিদর্শন করি। ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে আম ব্যাগে বেঁধে রঙের পরিবর্তন হওয়া দেখেছি। সবুজ মাল্টা কম দামে বিক্রি হওয়ায় কৃষক আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে পরামর্শ করে এই পদ্ধতি ব্যবহার করি। এতে স্বাদ ও রস সবই ভালো থাকে।

ঝিনাইদহ কৃষি বিভাগের উপপরিচালক মো. আজগর আলী বলেন, আমরা কৃষক আবুল কালাম আজাদকে সব রকমের পরামর্শ দিচ্ছি। নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করে কৃষক লাভবান হচ্ছেন। আশা করছি এই পদ্ধতিতে মাল্টা চাষ আরো ছড়িয়ে পড়বে। সূত্র : প্রথম আলো

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে